অর্ণব মুখোপাধ্যায়, সৌভিক মজুমদার ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: ভাষা দিবসেও বাদ গেল না রাজনীতির আকচআকচি, ব্যক্তি আক্রমণ। সংযম ও শালীনতার বার্তা দিলেও রাজনীতিকদের মুখে ঘুরে ফিরে এলে সেই পুরনো কথা। ভাষা নিয়ে রাজনীতিকদের আরও সতর্ক হওয়ার বার্তা দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।


মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা! যে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে বুলেট-বেয়নেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে বাঙালি, বর্তমান রাজনীতিতে সেই ভাষায় পরস্পরকে আক্রমণ করতে গিয়ে কখনও কখনও সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন নেতারা! 


এই প্রেক্ষাপটে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়।  ভাষা দিবসের এক অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেছেন, ‘মাতৃভাষা লড়তে শিখিয়েছে, ভাষা দিবসের অঙ্গীকার আমাদের হারাতে পারবে না।’


ভাষা দিবসে তৃণমূল নেত্রীর এই চ্যালেঞ্জের পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ভাষা দিবসের ভাষা নিয়ে শালীনতা বজায় থাকা উচিত।’


রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘ভাষাকে সম্মান দেওয়া উচিত, দেরিতে হলেও বোধোদয় হয়েছে ঈশ্বরের অশেষ কৃপা।’


দিলীপ ঘোষে শালীনতা বজায় রাখার বার্তা দিলেও তাঁর দলের সাংসদের মুখে অবশ্য অন্য কথা। বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ এস এস অহলুওয়ালিয়া বলেছেন, ‘যখন কাউকে ভূতে ধরে তখন ওঝা নিয়ে ঝাড়পুক করাতে হয়, জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনলে ভূতনি পালায়, ভূতও পালায়’।


শ্রীরামপুরের সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘ভাষা স্বাধীনতা চাই, হিন্দি ভাষা দিচ্ছে, ভাষা সন্ত্রাস করছে।’


এই প্রেক্ষাপটে রাজনীতিকদের ভাষা নিয়ে আরও সতর্ক হওয়ার বার্তা দিয়েছেন বিশিষ্টজনেদের একাংশ। সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতাদের বলব ভাষাকে কলুষিত করবেন না সম্পর্কে সচেতন হোন।’


রাজনৈতিক নেতাদের মুখের ভাষা আরও সংযত হওয়া উচিত। এই বার্তা নিয়ে এদিন ভাষা দিবস পালন করে নন্দীগ্রামের উদয়ন নাট্য সংস্থা।