রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: আবারও রেশনের খাদ্যসামগ্রী বেআইনিভাবে মজুত করে রাখার অভিযোগ উঠল। প্রশাসনের তরফে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি বাইপাসের ধারে দুটো গুদাম ঘরে অভিযান চালানো হয়। বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রচুর পরিমাণে চাল, গম, আটা ও ভুট্টা। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া আটার প্যাকেটও উদ্ধার করেছে প্রশাসন। অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন রেশন দোকান থেকে খাদ্যসামগ্রী এনে ওই গুদাম ঘরগুলোতে মজুত করে রাখা হত। এরপর সেগুলি প্যাকেট বদল করে বাইরে পাচার করে দেওয়া হত। অভিযোগ পেয়ে শনিবার দুপুরে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ, বিডিও ও খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা অভিযান চালান।
রেশনের খাদ্যসামগ্রী কোথা থেকে এল তা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই গুদাম দুটিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত ব্যবসায়ী পলাতক। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত বর্মনের জানান, 'এখানে দেখি রেশনের মালপত্র টোটো আর গাড়িতে করে নিয়ে আসা হয় এবং এখানে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তারপর ভিতরে কী করা হয় বলতে পারবো না। ফের বস্তায় ভরে, বড় গাড়ি করে এখান থেকে মালপত্র বাইরে যেতে দেখেছি।' তাঁর আরও বক্তব্য, রেশনের চাল, আটা প্রতি কেজি ১৮-২০ টাকা দরে কিনে এনে ওই গুদামে বেশি টাকায় বিক্রি করা হত। একদিকে রেশনের দোকানে চাল-ডাল ইত্যাদি নিত্যসামগ্রী কিনতে দাঁড়িয়ে থাকেন সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে এখানে খাদ্যসামগ্রী কিনে স্টক করে রাখা হত বলে অভিযোগ তাঁর। 'এরা চোরাকারবারি না দালাল তা জানিনা, তবে এখানে মালপত্র দেওয়া হলে তারপর সেগুলি প্যাকেজিং হয়ে বাইরে যেত,' বলছেন ওই বাসিন্দা।
সাব ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অজয় মিশ্র জানান, 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এখানে আসি কী আছে তা দেখতে। এখনও তদন্ত চলছে। আমরা যা পেয়েছি সবটাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, সমস্ত বিস্তারে এখনই বলা সম্ভব নয়। দুটো গোডাউনে তল্লাশি করে প্রচুর খোলা প্যাকেট উদ্ধার হয়েছে। সব প্যাকেটে তারিখ আলাদা ছিল, সাপ্লাই সিস্টেম বলে মনে হচ্ছে না।' তিনি জানিয়েছেন ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এখানকার মালিককে শনাক্ত করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।