রাজা চট্টোপাধ্যায়, রাজগঞ্জ: এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু হওয়ার আগেই ফর্ম পূরণেও কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়িতে। রাজগঞ্জ ব্লকের ভাণ্ডারিগঞ্জ গ্রামে তৃণমূল নেতার আত্মীয়ার টাকা নেওয়ার ছবি ভাইরাল হতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতার আত্মীয়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম ইন্টারনেটে ডাউনলোড করে বিক্রি করছেন। ফর্ম পূরণের জন্যও টাকা চাওয়া হচ্ছে। ১৬ অগাস্ট প্রকল্প চালুর পর টাকা পেলে দক্ষিণা দিতে হবে বলেও আবেদনকারী মহিলাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিজেপির কটাক্ষ, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু হওয়ার আগেই তৃণমূল নেতাদের লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে। অস্বস্তি ঢাকতে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব দলীয় স্তরে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে।


লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ঘোষণার তিন সপ্তাহের মধ্যেই প্রকল্প নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠলো রাজগঞ্জের আমবাড়ি ফালাকাটায়। অভিযোগ, এখনও সরকারিভাবে রাজগঞ্জ ব্লকে ওই ফর্ম দেওয়া শুরু হয়নি। কিন্তু সেই ফর্ম ডাউনলোড করে সেটা বিক্রি এবং পূরণের নামে বিন্নাগুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভান্ডারিগঞ্জ গ্রামের সাধারণ মহিলাদের কারোর কাছ থেকে ৬০ টাকা আবার কারোর থেকে ৮০ টাকা করেও নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি বেশ কয়েকমাস ধরেই এই বেআইনি কারবার চলছিল। ইতিমধ্যে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যদিও এই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। 


লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ফর্ম পূরণ করতে আসা এক মহিলা জাহেরা খাতুন জানান, অন্যদের সঙ্গে আমিও ভোটার কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, ফটো সহ সব নথি জমা দিতে যাই। তার সঙ্গে ৮০ টাকা দিতেও বলা হয়। এগুলো যে বিনে পয়সায় হয় জানি না।  সবাই যায় দেখে আমিও যাই। আরেক মহিলা তসলিমা খাতুন জানান, আমবাড়ি স্কুলের সামনে এক মহিলার কাছে সব জমা দিয়েছি। আমাকে ১৬ তারিখ ফোন করে ডাকবে বলে, ফোন নম্বর নিয়েছে। বিন্নাগুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃনমূল সভাপতি সামিজাদ্দীন আহমেদ জানান, ব্যাপারটা শুনেছি। এই ধরনের ফর্ম ফিল-আপ আমবাড়ি চিন্তা মোহন হাই স্কুলের সামনে ক্যাম্প বসেছে। কারোর বাড়িতে বসে এই কাজ করা যায় না। এটা দলীয়ভাবে তদন্ত শরু হয়েছে।  অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


অভিযোগ সামনে আসতেই কটাক্ষ করেছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রকল্পই চালু হল না তার আগেই ফর্ম দিচ্ছে ১০০ টাকা ১৫০ টাকা নিয়ে। এখন অগ্রিম নিচ্ছে এরপর প্রকল্প হলে আবার কত কাটমানি নেবে জানিনা। গ্রেফতার করা উচিৎ। কিন্তু, কেউ গ্রেফতার হবে না। বেকারদের কর্মসংস্থান নেই, কারাখানা নেই, এটা কাটমানির কারখানা। তাই লক্ষ্মীর ভান্ডার চালুর আগেই মা লক্ষ্মী নেতাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। এটাই বাংলার চিত্র।