গোসাবা:  পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের চরমে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। একশো দিনের কাজে নানা অভিযোগ নিয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ জানান, আড়াই লক্ষ লোকের পেনশন বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। ২৬৮ কোটি টাকা খরচ করে রাজ্য সেই পরিষেবা দেবে।ন

আর কয়েক মাস পরেই রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। নানা ইস্যুতে তৃণমূল-বিজেপি বাগযুদ্ধ এখন চরমে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সংঘাত ক্রমেই জোরালো হচ্ছে! নবান্ন সূত্রের খবর, সাতাশে নভেম্বর, মন্ত্রিসভার বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীকে জানান,

‘বিধবা ভাতা’ নিয়ে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পঞ্চায়েত দফতর। সেখানে বলা হয়েছে, নিজের বাড়ি থাকলে, আর বিধবা ভাতা মিলবে না। এর সঙ্গে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি শর্ত। শুভেন্দু অভিযোগ করেন, এর ফলে তাঁর জেলায় বহু বিধবা মহিলা, সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সূত্রের খবর, বিষয়টি শোনামাত্রই পঞ্চায়েত দফতরের প্রধান সচিবের কাছে ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চায়েত দফতরের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়,  এটা যৌথ প্রকল্প, তাই তারা শুধু কেন্দ্রের নিয়মাবলীকে আধার করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মাত্র। যদিও, মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, বিধবা ভাতা সংক্রান্ত এই বিজ্ঞপ্তি অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। বৃহস্পতিবার গোসাবার প্রশাসনিক সভায় এ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘোষণা করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তে যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, সেই সব মানুষকে রাজ্য সরকার পেনশন দেবে।

আড়াই লক্ষ লোকের পেনশন বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্য দেবে তাঁদের পেনশন। ২৬৮ কোটি টাকা খরচ হবে। আমাদের সরকার পরিষেবা বন্ধ করে না, মানুষের পাশে আছি। কাজ করে যাব। সাধারণ মানুষের বিরোধী কাজ করব না, মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর।

তৃণমূলের বরাবরের অভিযোগ, বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে বরাদ্দ কাটছাঁট করছে মোদী সরকার। এই প্রশ্নে ১০০ দিনের কাজের কথা বারবার শোনা যায় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের গলায়। এবার সেই প্রকল্প নিয়েই দিল্লি থেকে চিঠি এসেছে বাংলায়!

গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিবকে পাঠানো চিঠিতে ১৩টি  বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল,

অনেকক্ষেত্রেই রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকদের মজুরি দেরিতে দেওয়া হচ্ছে। যারা ১০০ দিনের কাজ পাননি, আইন অনুযায়ী তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে না। গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পে আধার নথিভূক্তিকরণও আশাব্যঞ্জক নয়।

নবান্ন অবশ্য বলছে, এটা রুটিন চিঠি। একশো দিনের কাজ সংক্রান্ত অভিযোগ নেওয়ার জন্য, প্রতি জেলায় একজন করে ‘'অম্বুডসম্যান’ নিয়োগ করার কথা। যে সব জায়গায় এই পদ খালি রয়েছে, তা অবিলম্বে পূরণ করার কথা বলা হয়েছে কেন্দ্রের চিঠিতে। যদিও এসবকে গুরুত্ব দিতে নারাজ নবান্ন। পারফরম্যান্সের প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

পাল্টা আক্রমণের পথে হেঁটেছে পদ্ম শিবিরও। একশো দিনের কাজ এবং বার্ধক্য ভাতা। দুটি প্রকল্পেই সুবিধা পান মূলত গ্রামের মানুষ। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে।