কলকাতা: আজ ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে কী বার্তা দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সভা থেকে বিজেপি বিরোধিতা আরও জোরদার করার ডাক দিতে পারেন মমতা। জানাতে পারেন জোট বেঁধে বিজেপিকে হারানোর আহ্বান।

একুশ মানে আবেগ। একুশ মানে ইতিহাস। একুশের সভা থেকেই প্রতিবার দলের সবস্তরের নেতা-কর্মীদের দিশা দেন তৃণমূলনেত্রী। সংগঠন কোন পথে এগোবে, তার দিকনির্দেশ করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে এবারের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কিছুটা আলাদা। একদিকে ক্ষয়িষ্ণু শক্তিতে পরিণত হচ্ছে কংগ্রেস-সিপিএম। অন্যদিকে, রাজ্যে সংগঠন বিস্তারে মরিয়া বিজেপি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলনেত্রী এবারের ‘একুশের বক্তৃতা’য় বিজেপিকেই আক্রমণের মূল লক্ষ্য করতে পারেন। সেক্ষেত্রে তুলনায় কংগ্রেস ও সিপিএমের প্রতি সুর থাকতে পারে অনেকটাই নরম।

দার্জিলিং থেকে বসিরহাট। একাধিক ঘটনায় তৃণমূলনেত্রী বারবার বিজেপিকেই নিশানা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ ভেদাভেদের রাজনীতি আমদানি করে রাজ্যকে অস্থির করতে চাইছে বিজেপি।

এই প্রশ্নে তিনি শুক্রবার সুর আরও চড়াতে পারেন।

নোট বাতিল থেকে জিএসটি। মোদি সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তকে জনস্বার্থবিরোধী তকমা দিয়ে, লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছে তৃণমূল। বিরোধী শিবিরকে ঐক্যবদ্ধ চেহারা দিতে, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে তারা। তাই একুশের বক্তৃতায় মোদি সরকারকে চড়া সুরে আক্রমণের জন্য মমতা যে বেশ কিছুটা সময় বরাদ্দ করবেন, সে সম্ভাবনা প্রবল।

বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলনেত্রীর অন্যতম প্রধান অভিযোগ হল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। সারদা, নারদ-সহ নানা ইস্যুতে, তাঁর দল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার, এমনটা বোঝাতে বেশ কিছুটা সময় ব্যয় করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। সূত্রের খবর, জানুয়ারিতে ভোট এগিয়ে আনা হতে পারে। সে কথা মাথায় রেখেই, একুশের সভায় পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বাজিয়ে দিতে পারেন মমতা।

এখন থেকেই ভোট প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীর বার্তা দিতে পারেন তিনি। সেই সঙ্গে নির্দেশ দিতে পারেন, বুথভিত্তিক সংগঠন আরও জোরদার করা এবং নিবিড় জনসংযোগ গড়ে তোলার।

সাম্প্রতিক সময়ে বাসন্তী-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দলের গোষ্ঠীকোন্দল মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের কাছে। যার জেরে রক্ত ঝরছে, বাড়ি পুড়ছে। অনেক জায়গায় আবার নেতৃত্বের কড়া বার্তাতেও কাজ হচ্ছে না। পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছে, দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নে একুশের সভায় কঠোর অবস্থান নিতে পারেন তৃণমূলনেত্রী। স্পষ্ট বুঝিয়ে দিতে পারেন দুর্নীতি, গোষ্ঠীকোন্দল কোনওভাবেই রেয়াত করবেন না। কোনও নেতা বা কর্মীর বিচ্যুতি হলে, তা যে কঠিন হাতে মোকাবিলা করা হবে, সে বার্তাও দিতে পারেন মমতা।

রাজনৈতিক-সাংগঠনিক নানা বিষয়ের পাশাপাশি, সবুজসাথী, খাদ্যসাথীর মতো জনকল্যাণমূলক সরকারি প্রকল্পের প্রসঙ্গও আসতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতায়।