উত্তর ২৪ পরগনা: হুমকি, শাসানির পর কি এবার ‘ভূতের ভয় দেখানো’কে নয়া কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে প্রোমোটারদের একাংশ? ক’দিন আগে এই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল বসিরহাটের সাধুবাড়ি। বাসিন্দারা দাবি করেছিলেন, রাত হলেই নাকি ওই বাড়িতে ভুতুড়ে আওয়াজ শোনা যায়!
এবার সেই অভিযোগকে জোরাল করল ব্যারাকপুরের  চক্রবর্তী পরিবারের বাড়ি! তবে আওয়াজ নয়। এখানে রহস্যের কেন্দ্রে আগুন! আতঙ্কে বাড়িছাড়া সস্ত্রীক গৃহকর্তা!


১৯৮২ সাল থেকে নগেন্দ্রনাথ বাগচি রোডের বাসিন্দা চক্রবর্তী পরিবার। গৃহকর্তা আগে পুলিশে চাকরি করতেন। তাঁর সঙ্গে বাড়িতে থাকেন স্ত্রী ও ছেলে।
পরিবারের দাবি, কয়েকদিন আগে বাড়ির সুইচ বোর্ডের ফিউজ পাল্টানো হয়। তারপর থেকে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন ঘরের সুইচ বোর্ড থেকে আগুনের ফুলকি বেরোচ্ছে।
বাড়ির বাসিন্দা তথা গৃহকর্তার ছেলে সুবীর চক্রবর্তী বলেন, মঙ্গলবার দমকল আসে। বিদ্যুৎ কর্মীরা আসে। মেইন সুইচ অফ করে দেয়। ওইদিনই ফের সুইচ বোর্ড থেকে আগুন। তারপর তার খুলে দেওয়া হল। তারপরও আগুন জ্বলছে।


একেই পাড়ার অনেকে বলছেন ভূতুড়ে ঘটনা! এই বাড়ির নাম হয়ে গিয়েছে ভূতের বাড়ি! প্রতিদিনই সেখানে ভিড় করছেন বহু মানুষ। আতঙ্কে ভিটে ছেড়ে, স্ত্রীকে নিয়ে মেয়ের বাড়িতে চলে গিয়েছেন গৃহকর্তা! এই পরিস্থিতিতে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন তাঁর ছেলে।  সুবীরবাবু বলেন, বুধবার এক অচেনা ব্যক্তি আসেন। বলল, সবাই তো চলে গিয়েছে, বিক্রি করে দিন। কত দাম চান বলুন?
প্রশ্ন উঠছে, এই দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে কি গোটাটাই পরিকল্পিত? উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাড়িটিকে ‘ভূতের বাড়ির‘ তকমা লাগানোর চেষ্টা?



বসিরহাটের সাধুবাড়ির মতো এখানেও কি ঘটনার নেপথ্যে প্রোমোটার চক্র? এই সব সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না চক্রবর্তী পরিবার। সুবীরবাবু বলেন, মাসখানেক আগে সংস্কার চলাকালীন, এক ব্যক্তি বলেন, বিক্রি হবে। অসাধু প্রোমোটার চক্র থাকতে পারে। যদিও আগুন-রহস্যের নেপথ্যে প্রোমোটার চক্রের হাত থাকার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন স্থানীয় উপ পুরপ্রধান।
অনেকেরই প্রশ্ন, তাহলে বারবার কেন এভাবে সুইচ বোর্ডে আগুন?  রহস্যভেদে তিনটি সুইচ বোর্ড পরীক্ষার জন্য নিয়ে গিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর, দমকল ও পুলিশ। বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।
এখন বাড়ি আগলে বসে গৃহকর্তার ছেলে। সঙ্গী অজানা আতঙ্ক আর একরাশ উৎকণ্ঠা....