সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষায় ( Upper Primary Recruitment ) নিয়োগে আগেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ( Justice Biswajit Basu ) বলেন, স্কুল সার্ভিস কমিশন জানে, তারা স্বচ্ছ নয়। 'ওয়েটিং লিস্ট কীভাবে তৈরি হয়েছিল?' । এরপরই, উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষায় ৭৫০টি শূন্যপদে নিয়োগে পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন তিনি। শুক্রবার ফের সেই মামলার শুনানিতে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার শূন্যপদে নিয়োগে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট। ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল আদালত।
'নিয়োগপত্র যেন না দেওয়া হয়'
সেই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ, যাঁরা সুপারিশপত্র পেয়েছেন তাঁদের নিয়োগপত্র যেন না দেওয়া হয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে হাইকোর্টের নির্দেশ। এরই মধ্যে আদালতের প্রশ্নের মুখে অবস্থান বদল করল কমিশন। বাতিল হওয়া প্রার্থীদের অতিরিক্ত শূন্যপদে নিয়োগের আবেদন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত দিল পর্ষদ। কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত নির্দেশিকা এসেছে, জানালেন কমিশনের আইনজীবী। রাজ্যের তৈরি শূন্যপদে চাকরি বাতিল হওয়া ব্যক্তিদের নিয়োগের আবেদন করে কমিশন। কমিশনের অবস্থানের উল্টো পথে হেঁটে রাজ্য জানিয়ে দেয় তারা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। কমিশনের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ? আজই জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। অন্যদিকে বিচারপতি বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি করার অধিকার রাজ্যের নেই।
আদালতে কী জানাল পর্ষদ?
সবাইকে সুপারিশ পত্র দেওয়া হয়েছে? কমিশনকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি। কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার ক্ষেত্রে সুপারিশ পত্র দেওয়া হয়েছে, জানায় কমিশন। ‘কর্মশিক্ষায় ৫৮৫টি শূন্যপদের মধ্যে ৫১৪ জনকে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে’। 'শারীরশিক্ষায় ৮২৪টি শূন্যপদের মধ্যে ৭৬৬ জনকে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে’ তবে সুপারিশপত্র দিলেও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি, আদালতে জানায় পর্ষদ।
SSC সূত্রে খবর, উচ্চ প্রাথমিকের কর্মশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং পর্ব শেষ হয়েছে। ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থী, যাঁরা কাউন্সেলিং-এ এসেছিলেন, তাঁদের নিয়োগের সুপারিশপত্রও দেওয়া হয়। এরপরই সোমা রায় নামে এক চাকরিপ্রার্থী মামলা করেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর থেকে কম নম্বর পেয়ে অনেকে কাউন্সেলিংয়ে ডাক পেয়েছেন। সেই মামলায়, গত মঙ্গলবার এসএসসির জবাব চান বিচারপতি। তাতেই, স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে জানানো হয়, বীরসা মুণ্ডার জন্মদিন উপলক্ষ্যে সেদিন অফিস বন্ধ , ফলে নিয়োগপত্র দেওয়ার প্রশ্নই নেই।
এরপরই, বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু প্রশ্ন করেন, ' কীভাবে তৈরি হয়েছিল ওয়েটিং লিস্ট? কমিশন জানে তারা স্বচ্ছ নয়। এমন শিক্ষক পাঠাচ্ছেন যার জন্য পড়ুয়াদের হেনস্থা হতে হচ্ছে। ' এরপর শুক্রবার মামলার শুনানিতে আদালত ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল।