কলকাতা: ইউরোপ উড়ে যাওয়ার আগে, সকালেই সুরটা বেঁধে দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া এই সুরেই বাঁধা পড়লেন সরকারি কর্মীরা।
শুক্রবার, ধর্মঘটের দিন রাজ্যের সব দফতরেই হাজিরা আর পাঁচ দিনের মতোই। হাজিরার পুরস্কারও মিলেছে। এদিন মমতা বলেন, মানুষ বনধকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে। এর জন্য বাংলার মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বাংলায় যে কর্মসংস্কৃতি ফেরে এসেছে, এটাই তার সবথেকে বড় প্রমাণ। তাকে স্যালুট জানাচ্ছি। সরকারি অফিসগুলিতে আজ ৯৫ শতাংশ হাজিরা। সরকারি কর্মচারীদের এর জন্য পুরস্কৃত করব। প্রয়োজনে, পুজোর সময় এক দিন বেশি ছুটি ঘোষণা করব।
ধর্মঘটের দিন নবান্নে উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশ! মহাকরণেও রোজকার চেনা ছবি। কলকাতা পুরসভাতেও উপস্থিতির হার আর পাঁচ দিনের মতোই। প্রায় ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ।
ধর্মঘটের দিনে সরকারি দফতরগুলির এই হাজিরা নিয়ে উচ্ছ্বসিত সরকার। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বনধ প্রত্যাখ্যান করেছে রাজ্যের মানুষ। সব জেলা থেকে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী সরকারি অফিসে উপস্থিতি ৯৮ শতাংশ। নবান্নে ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশ।
সরকারের এই দাবি মানতে নারাজ ধর্মঘটীরা। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর দাবি, ধর্মঘট সফল হয়েছে। বিকাশ ভবনের বেশ কিছু ঘরে অবশ্য দেখা গিয়েছে ফাঁকা চেয়ার-টেবিল। সূত্রের খবর, এ দিন যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের অনেকে প্রথমার্ধে সই করে বেড়িয়ে যান। জিপিওতেও কর্মীদের উপস্থিতি রোজকার তুলনায় কম। সকালের দিকে গ্রাহকদের জন্য খোলা ছিল মাত্র একটি কাউন্টার। তবে কলকাতা হাইকোর্টে সরকারি আইনজীবীদের হাজিরা ছিল স্বাভাবিক। পুলিশের গাড়িতে এদিন তাঁদের আদালতে আসতে দেখা যায়।
কিন্তু বেসরকারি ক্ষেত্রে কী অবস্থা? সল্টলেক সেক্টর ফাইভে উপস্থিতির হার অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম ছিল। হাওড়া শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জুটমিল এবং কারখানাগুলি খোলাই ছিল। কোথাও কোথাও আবার শ্রমিকদের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায়। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলেও রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিভিন্ন বেসরকারি কারখানায় শ্রমিকদের হাজিরা স্বাভাবিক। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলেও কাজ হয়েছে আর পাঁচ দিনের মতো। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলেও অধিকাংশ কারখানা ছিল খোলা। তবে শ্রমিকদের উপস্থিতির হার অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা কম। আসানসোল শিল্পাঞ্চলেও রোজকার চেনা ছবি।