কলকাতা: নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জলমগ্ন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা। তার ওপর ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার সম্ভাবনা থাকায় নতুন করে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।


দুর্গাপুর-
গতকাল থেকে একটানা বৃষ্টি। দুর্গাপুর পুরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড জলমগ্ন। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের নিকাশি নালাগুলি বৃষ্টির জলে উপছে পড়েছে। ফলে প্লাবিত হয়েছে শহরের নিচু এলাকাগুলি। প্রবল বর্ষণের ফলে অন্ডালে একটি কয়লাখনির ছাদ ধসে পড়েছে। পাণ্ডবেশ্বর থেকে গৌড়বাজারগামী রাস্তাতেও ধস নামে। ব্যাহত যান চলাচল।

আসানসোল-
প্রবল বৃষ্টিতে আসানসোলে জনজীবন বিপর্যস্ত। রানিগঞ্জের বল্লভপুরে ধস নেমেছে। আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জলমগ্ন কুলটির কুলতোড়া। আসানসোল স্টেশন সংলগ্ন রেলপাড় এলাকাতেও বহু বাড়ি জলমগ্ন। বৃষ্টির জেরে যান চলাচল ব্যাহত।

হাওড়া-
নাগাড়ে বৃষ্টির কারণে জলমগ্ন হাওড়া পুরসভার ১২টি ওয়ার্ড। নিচু এলাকাগুলিতে কোথাও কোথাও হাঁটুজল জমেছে। ঘুসুড়ির টিএল জয়সওয়াল হাসপাতাল চত্বর জল থই-থই। অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জরুরি বিভাগ। হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় পাম্প চালিয়ে জল নামানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। বৃষ্টির জেরে গঙ্গার জলস্তর বাড়তে থাকায় জল জমার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে হাওড়ায়। তৈরি রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। নবান্নর নির্দেশে, ছুটি বাতিল করা হয়েছে দফতরের কর্মীদের। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।

নদিয়া-
রাতভর বৃষ্টি। এর জেরে জল জমেছে নদিয়ার শান্তিপুর পুরসভা ও হাঁসখালি ব্লকের বেশ কয়েকটি এলাকায়। হাঁসখালি বাজারের আশপাশের এলাকা জলের তলায়। বিপর্যস্ত জনজীবন।

পুরুলিয়া-
একটানা বৃষ্টিতে প্লাবিত পুরুলিয়া পুরসভার একাধিক ওয়ার্ড। আদ্রা থানা এলাকার বেনিয়াশোলে শতাধিক মানুষ জলবন্দি। কয়েকটি এলাকায় রাস্তায় গাছ উপড়ে পড়ায় যান চলাচল ব্যাহত। বেশ কয়েকটি গ্রামে কাঁচা রাস্তা ধসে পড়ায় সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন।

এদিকে, ডিভিসি নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন আশঙ্কা। আবহবিদদের মতে, নিম্নচাপ এরাজ্য থেকে পশ্চিমদিকে চলে যাওয়ায় ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে, জলস্তর বাড়লে ডিভিসিও জল ছাড়তে শুরু করবে। সেক্ষেত্রে এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়।

ইতিমধ্যেই, গতকাল থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত দুর্গাপুর জলাধার থেকে ছাড়া হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ কিউসেক জল। মাইথন ও পাঞ্চে‍ৎ জলাধার থেকে ৪৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। তবে দামোদর অববাহিকায় বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকায় কোনও এলাকা প্লাবিত হয়নি।