কলকাতা: কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। ভবানীপুর-সহ ৩ কেন্দ্রের ভোটের ফল ঘোষণার শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। জানা যাবে জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের ফলও। আঁটোসাঁটো নিরাপত্তায় মোড়া হয়েছে স্ট্রংরুমগুলিকে। তবে সকলের নজর এখন ভবানীপুরে। এই কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে শাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলে। ভবানীপুরে গণনা হবে ২১ রাউন্ড। জঙ্গিপুরে ২৬ রাউন্ড ও সামশেরগঞ্জে ২৪ রাউন্ড গণনা হবে। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে ভোট গণনাকেন্দ্রগুলি। 


যদিও গোটা দেশের নজর এখন ভবানীপুরের দিকে। কারণ, এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে গণনা প্রক্রিয়া। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে মোড়া থাকবে গণনাকেন্দ্রে। প্রথম বলয়ে থাকবে স্থানীয় পুলিশ। দ্বিতীয় বলয়ে রাজ্য পুলিশ। তৃতীয় বলয় - অর্থাৎ গণনাকেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ২৪ জন জওয়ান। সকালে গণনাকেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে জারি করা হবে ১৪৪ ধারা।


অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভার ভোট গণনা হবে জঙ্গিপুর পলিটেকনিক কলেজে। কমিশন সূত্রের খবর, জঙ্গিপুরে ২৬ রাউন্ড এবং সামশেরগঞ্জের ২৪ রাউন্ড গণনা হবে। গত ২৬ এপ্রিল, সপ্তম দফায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও দুই প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার, ভবানীপুরের পাশাপাশি বকেয়া ভোটগ্রহণ হয় ওই দুই কেন্দ্রেও। জঙ্গিপুর বিধানসভা আসনে লড়াই হয় ত্রিমুখী।তৃণমূলের জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী সুজিত দাস। আরএসপি প্রার্থী জানে আলম মিঞা। সামেশরগঞ্জে লড়াই চতুর্মুখী। এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তৃণমূলের আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী মিলন ঘোষ। ময়দানে আছেন কংগ্রেসের জইদুর রহমান ও সিপিএমের মোদাসসর হোসেন। 


উপনির্বাচনের গণনার আগেই জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল, বিজেপি দুই দলই। ফিরহাদ হাকিম বলেন, "ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় নিশ্চিত। ৫০ থেকে ৭০ হাজার ভোটে জিতবেন তৃণমূল নেত্রী। আমাদের কাছে মমতার ভোট লড়াই একটা উৎসব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চিত জিতবেন, সবাই জানে। কত ভোটে জিতবেন, তার প্রতিক্ষায় সবাই।" অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, "আমরা জনতার উপরে ভরসা রেখেছি। হাতে আমাদের যা ক্ষমতা ছিল সেই ক্ষমতা নিয়ে আমরা প্রচার করেছি আমাদের প্রার্থী অসাধারণ লড়াই করেছেন।" এদিকে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এই লড়াই হয়েছে, এমনটাই দাবি বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যর। 


প্রসঙ্গত, গত ৭ এপ্রিল, সপ্তম দফায় ভোট হয় ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ২৮ হাজার ৭১৯ ভোটে হারান বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষকে। ৫ মাসের মধ্যে সেই ভবানীপুরেই উপ নির্বাচন। ভোটের ফলাফলে তৃণমূল সরকারের ওপর কোনও প্রভাব না পড়লেও, মুখ্যমন্ত্রিত্বের দিক থেকে এই ভোটের ফল যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। সিপিএমের হয়ে লড়ছেন শ্রীজীব বিশ্বাস। ৩০ সেপ্টেম্বরের উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল প্রায় ৫৫ শতাংশ। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে ভোট পড়েছিল এর থেকে অনেকটাই বেশি। 


২০১১ থেকে ২০২১, দশবছর ধরে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র একটানা তৃণমূলের দখলে। তবে এই একদশকে ভবানীপুরে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের হার অনেকটাই বেড়েছে। এবার উপনির্বাচনে কী হবে? বাজিমাত করবে কে? সেটা জানা যাবে এবারও কি সেই ধারা বজায় থাকবে? উত্তর মিলবে আজই।