সন্দীপ সরকার ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: ভারতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে করোনা। দেশে এখনও পর্যন্ত আড়াই লক্ষের বেশি ভারতীয়র প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
রাজ্যেও কোভিড পরিস্থিতি অত্যন্ত চিন্তাজনক। বাংলায় করোনায় এখনও মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার ছুঁইছুই। রাজ্যে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী করোনার গ্রাফ। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুও।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এবার রাজ্যের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে মৃত্যুহার। চলতি মাসের প্রথম দু’সপ্তাহে রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৬৪৮ জনের। এপ্রিলে ১ হাজার ১৫ জন মারা গেছিলেন। মার্চে মারা গেছিলেন ৬১ জন।
এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট পরিস্থিতির ভয়াবহতা। প্রতিদিন একশোর কাছাকাছি দেহ সৎকার হচ্ছে নিমতলা শ্মশানে। শ্মশানের চাতাল ছাড়িয়ে বাইরে এসে যাচ্ছে মৃতদেহের লাইন। টোকেন নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে পরিজনদের।
রাজ্যে প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণ। চলতি মাসে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৬৬ হাজার ৪৩৬ জন। এপ্রিলে এই সংখ্যাটা ছিল ২ লক্ষ ৪১ হাজার ৪৫১। মার্চে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১১ হাজার ৭৯৭ জন।
এই পরিস্থিতিতে, করোনা মোকাবিলায় রবিবার থেকে আরও কড়াকড়ি জারি হচ্ছে রাজ্যে। দু’সপ্তাহের জন্য বন্ধ সরকারি, বেসরকারি অফিস থেকে শুরু করে গণপরিবহণ। এদিন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সকলের স্বার্থে কিছু কড়াকড়ি করার প্রয়োজন, যাতে সকলের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকে, যাতে প্রাণহানি কমে। রাজ্য ঠিক করেছে রবিবার সকাল ৬টা থেকে ৩০ মে একপক্ষ কাল সন্ধে ৬টা পর্যন্ত বেশ কিছু অনুশাসন ও বিধিনিষেধ জারি হবে।
চিকিৎসকদের একাংশের মতে, অনেক ক্ষেত্রেই রোগী দেরিতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় বাড়ছে মৃত্যুর হার। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসেস ডক্টর্স-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, পরিকাঠামো যা আছে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না, মানুষ দেরি করে আসছেন, এবং যে পরিমান মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন, তাতে এই পরিস্থিতি হওয়াটা স্বাভাবিক। একই কথা বললেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিক। তিনিও জানালেন, যে পরিমান মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তাতে এই পরিস্থিতি হবেই।
ভয়ঙ্কর এই ভাইরাস যে আমাদের কাছ থেকে আরও কী কী কাড়বে, কে জানে...