করুণাময় সিংহ, মালদা: মালদার কালিয়াচকে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে উদ্ধার চার মৃতদেহ। মা-বাবা-সহ পরিবারের ৪ জনকে নৃশংসভাবে খুন করে বাড়ি লাগোয়া গুদামঘরে পুঁতে রাখার অভিযোগ ছোট ছেলের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে পৌঁছন ম্যাজিস্ট্রেট। তাঁর উপস্থিতিতেই শুরু হয় খোঁড়ার কাজ। কিছুক্ষণের মধ্যেই উদ্ধার হয় ওই চার মৃতদেহ।


চার মাসের পুরনো খুনের ঘটনায় গতকাল ১৯ বছরের আসিফ মহম্মদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াচকের পুরাতন ১৬ মাইল গ্রামে। পুলিশের দাবি, ধৃত আসিফ মহম্মদ জেরায় জানিয়েছে, মাসচারেক আগে মা-বাবা, বোন ও ঠাকুমাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বেহুঁশ করে গুদামঘরের চৌবাচ্চায় ফেলে দেয়। পরে চৌবাচ্চা থেকে চারজনের দেহ তুলে বাড়ি লাগোয়া গুদামঘরে পুঁতে দেয়। বড় ভাইকে খুনের হুমকি দেওয়ায় সে কলকাতায় পালিয়ে যায়। গতকাল বড় ভাই খুনের বিষয়টি কালিয়াচক থানায় জানালে গ্রেফতার হয় আসিফ। পুলিশের দাবি, জেরায় পরিবারের চারজনকে খুনের কথা কবুল করেছে অভিযুক্ত তরুণ। স্থানীয়দের দাবি, পরিবারের বাকি সদস্যদের দেখতে না পেয়ে তাঁদের সন্দেহ হয়। কী কারণে পরিবারের সদস্যদের নৃশংস খুন? খতিয়ে দেখছে কালিয়াচক থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।


পুলিশ সূত্রে খবর, চারমাস ধরে বাড়িতে একাই থাকত খুনে অভিযুক্ত আসিফ মহম্মদ। বাইরের কারও সঙ্গে মিশত না। অনলাইনে অর্ডার দিয়ে আনাত খাবার। প্রতিবেশীদের জানিয়েছিল, কিছুদিন জন্য পরিবারের সদস্যরা বাইরে গিয়েছেন। সন্দেহ এড়াতে বাড়িতে পরিচারিকাকেও ঢুকতে দেয়নি অভিযুক্ত। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আজ বাড়ি লাগোয়া গুদামঘরের মেঝে খুঁড়ে চারজনের দেহ উদ্ধার হয়।


ধৃতের আত্মীয়ের দাবি, সম্পত্তি ছোট ছেলে আসিফ মহম্মদের নামে লিখে দেন পরিবহণ ব্যবসায়ী জাওয়াদ আলি। সেই সম্পত্তি বিক্রি করতে চাওয়ায় সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। আসিফের দাদার সঙ্গে যোগাযোগ করায় সে-ই ফাঁস করে দেয় খুনের ঘটনা। স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্তের ল্যাপটপ ও অত্যাধুনিক গ্যাজেটস ব্যবহারের ঝোঁক ছিল। ল্যাপটপে অ্যাপ তৈরির নেশা ছিল অভিযুক্তের। মাধ্যমিক পাশ করার পর পালিয়েছিল বাড়ি থেকে। কোথায় পালিয়েছিল, কীভাবে ফিরে এল, সেসব খতিয়ে দেখছে পুলিশ।