চেন্নাই: কোয়েম্বাটুরের সুলুরে প্রশান্তের একটি চায়ের দোকান ছিল। লকডাউনে বন্ধ হয়ে গিয়েছে দোকান। বাড়ি ফিরতে মরিয়া প্রশান্ত একটি বাইক চুরি করে ছিলেন। স্ত্রী ও ২ সন্তানকে নিয়ে তাতে চেপে ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দেন তিনি।


প্রশান্তর বাড়ি মাভিলাদুথুরাইতে, সুলুর থেকে ২০০ কিলোমিটার। লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় বাস, ট্রেন ধরা সম্ভব ছিল না। ২ সন্তানকে নিয়ে এতটা রাস্তা হেঁটে ফেরাও প্রায় অসম্ভব। এই সময় ১৮ মে সুলুরের একটি ওয়ার্কশপের বাইরে তিনি একটি বাইক দাঁড় করানো দেখতে পান। কাউকে কিছু না বলে তাতে চড়েই স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। বাইকের মালিক সুরেশ কুমার তাঁর ওয়ার্কশপের বাইরে দাঁড় করানো বাইকটি চুরি হয়েছে জানতে পেরে খোঁজখবর শুরু করেন। যান পুলিশেও। কিন্তু পুলিশ বলে, তারা লকডাউন সংক্রান্ত কাজকর্মে ব্যস্ত, লকডাউন উঠে গেলে তদন্ত শুরু করবে।

সুরেশ তখন নিজেই নেমে পড়েন বাইকের সন্ধানে। সিসিটিভির ফুটেজ বার করে পড়শিদের সাহায্য নিয়ে তিনি সনাক্ত করেন, কে তাঁর বাইক চুরি করেছে। এদিকে প্রশান্ত ততক্ষণে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। জানতে পারেন, বাইকের মালিক তাঁর বাইক নিয়ে চম্পট দেওয়ার কথা জানতে পেরেছেন। বাইকটি মালিককে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। শনিবার একটি পার্সেল এজেন্সির থেকে সুরেশের কাছে ফোন আসে, তাঁর নামে একটি লাগেজ এসেছে। তিনি দেখেন, তাঁরই চুরি যাওয়া বাইকটি পার্সেল করা হয়েছে তাঁর নামে। ডেলিভারি বাবদ ১,৪০০ টাকা দিয়ে বাইক নিয়ে ফিরে আসেন তিনি। তিনি বলেছেন, ভাল অবস্থায় বাইক ফিরে পেয়েছেন, এই অনেক তাঁর কাছে। ওয়ার্কশপ খুলে ফেলেছেন তিনি, এই অবস্থায় বাইক না থাকলে বিরাট সমস্যা হত। পুলিশে দায়ের করা অভিযোগও তিনি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

দিনকয়েক আগে রাজস্থানেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ভরতপুরে আটকে পড়া উত্তর প্রদেশের বেরিলির এক শ্রমিক সাহেব সিংহ নামে এক ব্যক্তির বাইসাইকেল চুরি করেন। বেরিলি রওনা দেওয়ার আগে ক্ষমা চেয়ে চিঠিও লিখে যান মহম্মদ ইকবাল নামে ওই শ্রমিক। লেখেন, আমি অসহায়, আপনার অপরাধী। আপনার সাইকেলটা আমি নিচ্ছি, দয়া করে ক্ষমা করুন। আমার কাছে বাড়ি পৌঁছনোর আর কোনও উপায় ছিল না, আমার একটি প্রতিবন্ধী সন্তান রয়েছে।