হায়দরাবাদ: সঙ্গীর খোঁজে ৩০০ কিলোমিটার হেঁটে পেরোল ডোরাকাটা। মহারাষ্ট্রের টিপেশ্বর বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য কেন্দ্র থেকে হেঁটে তেলঙ্গানা পৌঁছে যায় বাঘটি। গলায় রেডিও কলার পরানো ছিল বলে, তার গতিবিধি ট্র্যাক করা সম্ভব হয়। বনজঙ্গল, কৃষিজমি পেরিয়ে মহারাষ্ট্র থেকে তেলঙ্গানা পৌঁছয় জনি নামের ওই বাঘ। সঙ্গীর খোঁজে তাঁর এই হন্যে হয়ে ঘোরায় আশাবাদী বন দফতরের আধিকারিকরা। এতে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। (Tiger Johnny)


জনি নামের ওই বাঘটির বয়স ছয় থেকে আট বছরের মধ্যে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের নানদেদ জেলার ওই অভয়ারণ্য থেকে যাত্রা শুরু করে সে। প্রথনে আদিলাবাদে তার দেখা পান বন দফতরের আধিকারিকরা। কুন্তলা, সারঙ্গপুর, মামাডা, পেম্বি মণ্ডল, একের পর এক অঞ্চল পেরিয়ে এগোতে থাকে। এর পর, হায়দরাবাদ-নাগপুর ৪৪ নম্বর জাতীয়সড়ক পেরোয় জনি। এই মুহূর্তে জনি তিরয়ানির দিকে এগোচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। (Indian Tiger Searches for Love)


আদিলাবাদের জেলা ফরেস্ট অফিসার প্রশান্ত বাজিরাও পাটিল জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক কারণেই এমন আচরণ জনির। শীতের আগে স্ত্রী বাঘের খোঁজে বেরিয়েছে সে। শীতের আগে এই সময় বাঘেদের বংশবৃদ্ধি হয়। সেই তাগিদেই ৩০০ কিলোমিটার পথ পার করে ফেলেছে জনি। প্রশান্ত বলেন, "নিজের এলাকায় যখন সঙ্গী মেলে না, পুরুষ বাঘেরা প্রায়শই এমন দীর্ঘ যাত্রায় বেরিয়ে পড়ে।" 


১০০ কিলোমিটার দূরেও যদি কোনও স্ত্রী বাঘ থাকে, ঘ্রাণশক্তির দ্বারা তা বুঝতে পারে পুরুষ বাঘেরা। সেই মতো গন্তব্যের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ে তারা। তবে জনি শুধুমাত্র সঙ্গীর খোঁজে বেরিয়েছে বলে মনে করছেন না বন দফতরের আধিকারিকরা। কারণ যাত্রাপথে ইতিমধ্যেই পাঁচটি বাছুর হত্যা করেছে জনি। কমপক্ষে তিন বার গরু-বাছুরের উপর হামলা করেছে সে। 


তবে জনির থেকে মানুষের কোনও বিপদ নেই বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঙ্গীর খোঁজে যখন বেরোয় পুরুষ বাঘ, অন্য দিকে তেমন বিশেষ নজর থাকে না। তার পরও স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। যে পথ ধরে এগোচ্ছে জনি, তাতে শীঘ্রই কাওয়াল ব্যাঘ্র সংরক্ষণে পৌঁছবে সে। সেখানে বাঘের আকাল বহু দিন ধরে। মাঝেমধ্যে সেখানে বাঘ ঢুকে পড়লেও, ২০২২ সাল থেকে স্থানী ভাবে থাকেনি কেউ। তাই জনি যদি কাওয়ালে থেকে যায়, সেক্ষেত্রে সেখানে বাঘের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।