নয়াদিল্লি: নয়া সংসদভবন উদ্বোধন ঘিরে তরজা জারি (New Parliament Building)। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন উদ্বোধন করবেন, প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি বিরোধী প্রায় সব শিবিরই। সেই আবহেই নয়া সংসদভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত তৃণমূল (TMC) এবং আম আদমি পার্টির (Aam Aadmi Party)। মঙ্গলবার তৃণমূলই প্রথম নয়া সংসদভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা করে। তাদের দেখানো পথে তারপর আপ-ও জানায়, ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না তারা। CPM এবং CPI-ও অনুষ্ঠানে থাকছে না।


মঙ্গলবার নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রাজ্যের উপর দিল্লির খবরদারি, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী অবস্থান-সহ একাধিক বিষয়ে বৈঠক হয় দু'জনের মধ্যে। তার পরই তৃণমূল নয়া সংসদভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করার কথা জানায়। তার পর, একই অবস্থান জানায় আপ। তাদের দাবি, নয়া সংসদভবন উদ্বোধন করতে না দিয়ে আসলে রাষ্ট্রপতিকে অপমান করা হচ্ছে।


মঙ্গলবার এ নিয়ে ট্যুইট করেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন। তিনি লেখেন, 'সংসদভবন শুধুমাত্র কোনও নির্মাণ নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ঐতিহ্য, মূল্যবোধ, নিয়ম-নীতি। ভারতীয় গণতন্ত্রের ভিত্তিই হল সংসদ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এসব বোঝেন না। তাঁর কাছে সবকিছুই আত্মসর্বস্ব। 'আমি, আমি, আর আমি' তত্ত্বে বিশ্বাসী তিনি। আমরা এর বাইরে'।


আরও পড়ুন: Panchayat Elections 2023: সাগরদিঘি জুগিয়েছে অক্সিজেন, কর্নাটকে বেড়েছে আত্মবিশ্বাস, তাতেই কি বাংলায় তাল কাটছে বাম-কংগ্রেস জোটে!


প্রশাসনিক বিষয়ে দিল্লি সরকারের সিদ্ধান্তে সুপ্রিম কোর্ট সিলমোহর দেওয়ার পরও, শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশ টপকে অধ্যাদেশ জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, যার আওতায় আমলা নিয়োগ থেকে বদলির ক্ষমতা দিল্লির নির্বাচিত সরকারের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট গভর্নরের হাতেই ন্যস্ত রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে অন্য বিরোধী দলগুলিকে পাশে পেতে তৎপর হয়েছে আপ। 



সেই আবহে নয়া সংসদভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপ-ও। দলের নেতা সঞ্জয় সিংহ ট্যুইটে লেখেন, 'রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে তাঁকে চূড়ান্ত অপমান করা হয়েছে। দলিত, উপজাতি এবং সমাজের বঞ্চিত মানুষের প্রতি কেন্দ্রের আচরণ অবমাননামূলক। রাষ্ট্রপতির এই অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে নয়া সংসদভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আম আদমি পার্টি'।


আরও পড়ুন: IIT Student Death:আদালতের নির্দেশে, শুরু IIT খড়গপুরের ছাত্রের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া


মোদির হাতে নয়া সংসদভবন উদ্বোধনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিজেপি বিরোধী শিবিরের একাধিক দল। কংগ্রেস, সিপিআই, শিবসেনা (সাবেক), অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের মতো দলও রয়েছে সেই তালিকায়। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের মতে, শোভন-অশোভনের ধার ধারে না এই সরকার। রাষ্ট্রপতি এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে ফের তার পুনরাবৃত্তি হল।


দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন যে, নয়া সংসদভবন উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তাঁকেও। সেই আবহেই নয়া সংসদভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করল তৃণমূল এবং আপ। প্রধানমন্ত্রী নন, রাষ্ট্রপতির হাতেই নয়া সংসদভবনের উদ্বোধন হওয়া উচিত বলে প্রকাশ্যে নিজের অবস্থান জানিয়েছেন রাহুল গাঁধীও। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করবে কিনা কংগ্রেস, তা এখনও জানা যায়নি। আগামী ২৮ মে নয়া সংসদভবনের উদ্বোধন।