কলকাতা: ২১-এর নির্বাচনে বঙ্গ বিধানসভার ২৯৪ আসনের মধ্যে ২০০ আসন দখলের টার্গেট বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন অমিত শাহ। আর সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পরদিনই বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে ময়দানে নেমে পড়েছে তারা। বিভিন্ন জোনে সাংগঠনিক বৈঠক শুরু করে দিলেন বিজেপি নেতারা। ইতিমধ্যে বৈঠক করে প্রাথমিক রণকৌশল ঠিক করে ফেলেছে সিপিএম-কংগ্রেসও।
বিজেপি সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, অমিতজি ২০০ আসন দখলের কথা বলেছেন, কিন্তু আমরা আশাবাদী ২০০-র বেশি হবে। পাল্টা তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের কটাক্ষ, যাঁরা লোকসভায় কটা আসনে জিতে বিধানসভা দখলের স্বপ্ন দেখছেন, তাঁরা দিবাস্বপ্ন দেখছেন!
সংগঠনকে মজবুত করতে মঙ্গলবারই রাজ্যকে ৫টি জোনে ভাগ করে পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর দায়িত্ব ভাগ হতেই এদিন কলকাতা ও মেদিনীপুর জোনের বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলেন সুনীল দেওধর, দুষ্মন্ত গৌতমরা। পোর্ট ট্রাস্টের গেস্ট হাউজে হয় কলকাতা জোনের বৈঠক। অন্যান্য নেতাদের পাশাপাশি সেখানে ডাকা হয়েছিল শমীক ভট্টাচার্য, জয়প্রকাশ মজুমদারদের মতো নেতাদেরও, যাঁরা আগে ভোটে লড়েছেন। সূত্রের খবর, দুষ্মন্ত গৌতম তাঁদের থেকে জানতে চান, অতীতে ভোটে লড়তে কী কী সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁদের? পুরনো ও নব্য নেতা-কর্মীদের মধ্যে কীভাবে সমন্বয় রক্ষা করা যায়? তৃণমূল থেকে যারা এসেছেন, তাঁদের নিয়ে কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা?
সূত্রের খবর, এই প্রসঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দুষ্মন্ত গৌতম বলেন, তৃণমূল থেকে আসতে চাইলেই সবাইকে দলে নেওয়া হবে না। রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভটাচার্য জানান, কী অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, হাওড়ায় মেদিনীপুর জোনের বৈঠকেও সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, জেলাভিত্তিক সংগঠনে কীকী সমস্যা রয়েছে? কারও বিরুদ্ধে ক্ষোভ আছে কিনা? বিজয়বর্গীয় বলেন,সাংগঠনিক জেলা নিয়ে বৈঠক, কী কী সমস্যা বলছেন, শুনছি, সমস্যা মেটানের চেষ্টা হচ্ছে। সামনে ভোট, সেটা মাথায় রেখে বৈঠক। ক্ষোভ হলে বদল? গাইডলাইন দেওয়া হবে, প্রয়োজনে বদল করা হবে।
যদিও এসব বৈঠক করে বিজেপি কোনও লাভ করতে পারবে না বলে কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, এই ৫ জন এসেছেন, যাঁদের মধ্যে সুনীল ছাড়া বাংলাতে কথা বলতে পারেন না কেউ, কী সমস্যা মেটাবে! আমার মনে হয় ভোটের আগে অমিত শাহ বিজেপির টাকা চ্যানেলাইজ করার জন্য এদের পাঠিয়েছে। সুখেন্দুশেখর আবার বাংলা দখল নয়, বৈঠকের পিছনে বিজেপির অন্য উদ্দেশ্যও থাকতে পারে, ইঙ্গিত করে বলেছেন, বহিরাগত বাহিনী, বিভাজন তৈরি করতে আসছে, নাকি ঘোড়া কেনাবেচা করতে এসেছে, সজাগ থাকতে হবে। বিভাজন করতে চাইলে মানুষ রুখে দাঁড়াবে। বাংলা দখলের কথা বলছে। বাংলা কী বাইরের রাজ্য, পাকিস্তান-চিনকে টার্গেট করুক! পাল্টা বিজয়বর্গীয়র প্রশ্ন, তৃণমূল বলছে বহিরাগত? চিন থেকে তো আসেনি, দিল্লি থেকেই এসেছে। এগুলি সব ভিত্তিহীন কথা।
রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, বিজেপি যখন বঙ্গ দখলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তখন ক্ষমতা ধরে রাখতে তৃণমূলের সেই চরম তৎপরতা কোথায়? কোথাও কি দলীয় দ্বন্দ্ব সামাল দিতে গিয়ে বিজেপির কাছে আসল লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ছে তৃণমূল? না কি অমিত শাহ-জে পি নাড্ডাদের যুদ্ধের হুঙ্কারের পাল্টা হুঙ্কার দিতে এবার শীঘ্রই ময়দানে নামবেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এরই মধ্যে বিজেপির মতো না জোরালভাবে না ঝাঁপালেও, বাম-কংগ্রেসও জোট বাঁধার আগেই একসঙ্গে রাস্তায় নামতে শুরু করে দিয়েছে। ২৩ তারিখ ধর্মঘটের সমর্থনে একসঙ্গে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। অধীর চৌধুরী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কলকাতা-কৃষ্ণনগর, বুধবার বাদুরিয়ায় বড় মিছিল করেছে কংগ্রেসও। তারাও তৃণমূল-বিজেপির দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে। অধীর বলেন, আমরাও তো নেমে পড়ছি। বৃহস্পতি ও শুক্রবার বাকি জোনের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
টার্গেট ২০০! রাজ্যকে ৫ জোনে ভেঙে সাংগঠনিক বৈঠক শুরু BJP নেতাদের, দিবাস্বপ্ন! কটাক্ষ TMC-র
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
18 Nov 2020 08:24 PM (IST)
দায়িত্ব ভাগ হতেই এদিন কলকাতা ও মেদিনীপুর জোনের বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলেন সুনীল দেওধর, দুষ্মন্ত গৌতমরা। পোর্ট ট্রাস্টের গেস্ট হাউজে হয় কলকাতা জোনের বৈঠক। অন্যান্য নেতাদের পাশাপাশি সেখানে ডাকা হয়েছিল শমীক ভট্টাচার্য, জয়প্রকাশ মজুমদারদের মতো নেতাদেরও, যাঁরা আগে ভোটে লড়েছেন।
NEXT
PREV
খবর (news) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -