নয়াদিল্লি: বিতর্কে জড়ালেন উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী কপিল দেব আগরওয়াল। গত শুক্রবারের নয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী প্রতিবাদ, বিক্ষোভের সময় হতাহতদের পরিবারগুলির সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা ছিল আজ। সেইমতো পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর জেলার নেহতাউরে সেদিনের হিংসা, অশান্তিতে জখম জনৈক ওম রাজ সাইনির কাছে গেলেও একই হিংসায় নিহত দুই মুসলিমের বাড়ি যেতে অস্বীকার করেন তিনি। সাইনি ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ ব্যাপারে বৈষম্য, ভেদাভেদের অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তাঁকে বলা হয়, সরকার সবকা সাথ, সবকা বিকাশ-এর কথা বলে। নেহতাউরে আপনি শুধু ওম রাজ সাইনির বাড়ি গেলেন। প্রিয়ঙ্কা গাঁধীও তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন, তবে তারপর বাকি দুই নিহতের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। এভাবে কেমন করে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ হবে?
কিন্তু কপিল বলেন, কেন দাঙ্গাবাজদের বাড়ি যাব? যারা দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে উত্তেজনা, উন্মাদনা ছড়াতে চায়, কী করে তারা সমাজের কেউ হয়। কেন ওদের কাছে যাব। এটা হিন্দু, মুসলিম ব্যাপারই নয়। নিহতদের ‘উপদ্রবী’ আখ্যা দিয়ে পেশাগত শিক্ষা ও স্কিল উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, কেন ওদের বাড়ি যাব! যারা দাঙ্গা-হাঙ্গামা করেছে, দেশে, রাজ্যে লুঠপাট চালিয়েছে, কী করে তারা সামাজিক মানুষ হতে পারে?
যদিও সাইনির পরিবারের দাবি, তিনি কোনও হামলাবাজ দলেই ছিলেন না, এক দাঙ্গাবাজের বেআইনি অস্ত্র থেকে ছোড়া গুলিতে মৃত্যুর সময় মাঠ থেকে ফিরছিলেন।
নাগরিকত্ব পাওয়ার ব্যাপারে ধর্মকে মাপকাঠি করা হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন, বিক্ষোভ চলছে একাধিক শহরে। উত্তরপ্রদেশে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ সবচেয়ে অশান্ত চেহারা নিয়েছে। সেখানে হিংসার বলি ২০-র বেশি, অধিকাংশই বুলেটের আঘাতে।
বিজনৌরের শুক্রবারের হিংসায় নিহতরা হলেন ২০ বছরের সুলেমান ও ২৫ বছর বয়সি আনাস। সুলেমান ছিলেন আইএএস পদপ্রত্যাশী। প্রথমে অস্বীকার করলেও স্থানীয় পুলিশ পরে মিডিয়ার সামনে মেনে নেয়, পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তার। তবে পুলিশের দাবি, দাঙ্গাবাজ বলে অভিযুক্ত যারা দেশি বন্দুক থেকে এক পুলিশকর্মীকে গুলি করেছিল, সে তাদের মধ্যে ছিল। পুলিশকর্মী আত্মরক্ষায় গুলি চালালে সে মারা যায়। সুলেমানের পরিবার অবশ্য এই ব্যাখ্যা উড়িয়ে সিএএ-এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে তার যোগ অস্বীকার করেছে।