নয়াদিল্লি: দৌড়ে পেরে উঠল না ইতালির পম্পেই সভ্যতার ধ্বংসাবশেষও। বরং তাকে ছাপিয়ে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্যের শিরোপা পেল কম্বোডিয়ার অঙ্কোরবাট মন্দির। আগে থেকেই UNESCO ওয়র্ল্ড হেরিটেজের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সেটি। বৃহত্তম ধর্মীয় নির্মাণস্থল হিসেবে এমনিতেই গিনেস ওয়র্ল্ড রেকর্ডসে নাম রয়েছে। অভাবনীয় নির্মাণের জন্য এবার অষ্টম আশ্চর্যের শিরোপা মাথায় উঠল। (Angkor Wat Temple)
পৃথিবীর যে সমস্ত জায়গায় বছর বছর ভিড় জমান পর্যটকরা, তার মধ্যে অন্যতম কম্বোডিয়ার এই অঙ্কোরবাট মন্দির। কম্বোডিয়ার প্রাণকেন্দ্রে, ৫০০ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত সেটি। ইতিহাসবিদদের মতে, ১২ শতকে রাজা দ্বিতীয় সূর্যবর্মণ মন্দিরটির নির্মাণ করেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আরাধ্য ভগবান বিষ্ণুকে ওই মন্দিরটি নিবেদন করেন তিনি। (Viral News)
পরবর্তী কালে হিন্দু মন্দির থেকে বৌদ্ধ মন্দিরে পরিণত হয় অঙ্কোরবাট। তাই সাংস্কৃতিক দিক থেকেও মন্দিরটির গুরুত্ব রয়েছে। তবে মন্দিরের কাঠামো, গাত্রে খোদাই করা কারুকার্যে তেমন কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। আট হাতের ভগবান বিষ্ণুর মূর্তি রয়েছে এখনও। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, ওই মূর্তিই বিপদ-আপদ থেকে তাঁদের রক্ষা করে আসছে। পাশাপিশ বৌদ্ধ পুরাণও খোদাই করা রয়েছে মন্দিরের গাত্রে। ফলে হিন্দু থেকে বৌদ্ধ ধর্মস্থলে রূপান্তরিত হওয়ার স্মারক হিসেবে যেমন রয়ে গিয়েছে মন্দিরটি, তেমনই ওই অঞ্চলের ধর্মীয় এবং ঐতিহাসিক বিবর্তনের সাক্ষীও ওই মন্দির। এখনও সন্ন্যাসীরা প্রার্থনা করতে হাজির হন সেখানে।
আরও পড়ুন: China Pneumonia Outbreak: চিনে নিউমোনিয়ার থাবা! ভারতে তড়িঘড়ি এই পদক্ষেপ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের
স্থাপত্য এবং ভাস্কর্যের নিরিখেও মন্দিরটির জুড়ি নেই। মূল মন্দিরে চত্বরে পাঁচটি পদ্মের আকারের মিনার রয়েছে, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং জৈন গ্রন্থে উল্লেখিত পঞ্চশিখরবিশিষ্ট মেরু পর্বতের প্রতিরূপ যেটি। একটি পরিখা ঘিরে রয়েছে মূল মন্দিরটিকে, যা আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। মন্দিরগাত্রের কারুকার্যও রীতিমতো নজর কাড়ে। হিন্দু পুরাণের বিভিন্ন কাহিনি থেকে ঐতিহাসিক ঘটনাবলী এবং এশিয়া মহাদেশে প্রাচীন কালে বসবাসকারী খমের জাতির দৈনন্দিন জীবনের বৃত্তান্ত, শিল্প-সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তাতে।
তবে অঙ্কোরবাট মন্দিরের মূল আকর্ষণ হল, রাজকীয় মিনারের মধ্যে দিয়ে সূর্যোদয় দেখা। ভোরের আলো-আঁধারি কাটিয়ে পূর্ব দিকে যখন সূর্য দেখা দিতে শুরু করে, গোলাপি, কমলা এবং স্বর্ণাভায় ঢেকে যায় গোটা মন্দির। শুধুমাত্র সেই দৃশ্য চাক্ষুষ এবং ক্যামেরাবন্দি করতেই হাজার হাজার মানুষ ছুটে যান।