নয়াদিল্লি: পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক কর্নেল সহ ২০ ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে ‘বয়কট চিন’-এর ডাক দিয়েছে দেশের বেশ কিছু মহল। ভারতের বাজারে চিনে তৈরি পণ্য বর্জনের দাবিতে প্রচার চলছে। এই আবহে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বক্তব্য, বৃদ্ধি চাঙ্গা করতে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি অন্যায় নয়, কিন্তু তা বলে গণেশমূর্তিও কেন চিন থেকে কিনতে হবে!
বিজেপির তামিলনাড়ু শাখা কর্মীদের উদ্দেশে ভার্চুয়াল লিঙ্কের মাধ্যমে দেওয়া ভাষণে তিনি দেশে পাওয়া যায় না, কিন্তু শিল্পের জন্য দরকারি, এমন কাঁচামাল আমদানি করা ভুল নয় বলে অভিমত জানান। কেন্দ্রের ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’ উদ্যোগ সম্পর্কে ভাষণে নির্মলা বলেন, উত্পাদন বাড়লে, কাজের সুযোগ সৃষ্টি হলে আমদানি করায় অন্যায় কিছু নেই, অবশ্যই তা করা উচিত। কিন্তু যে আমদানিতে কর্মসংস্থানের মতো সুফল মেলে না, বৃদ্ধি চাঙ্গা হয় না, তা আত্মনির্ভর হতে সাহায্য করে না, তাতে ভারতীয় অর্থনীতিরও লাভ হয় না।
তিনি বলেন, প্রতি বছর গণেশ চতুর্থী উত্সবের সময় স্থানীয় মৃত্শিল্পীদের কাছ থেকে মাটির তৈরি গণেশ মূর্তি কেনার চলই ছিল, কিন্তু আজকাল গণেশ মূর্তিও চিন থেকে আমদানি করতে হয়, কেন এমন পরিস্থিতি হল, মাটির গণেশ মূর্তিও তৈরি করতে পারি না আমরা?
সাবান-বাক্স, প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বা পুজোআচ্চায় লাগা ধূপকাঠির মতো প্রতিদিনের ঘরোয়া সামগ্রী যখন দেশেই ভারতীয় সংস্থা, ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি কোম্পানিগুলি বানায়, তখন সেগুলি বিদেশ থেকে আমদানি করলে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠায় কীভাবে সুবিধা হয়, বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, স্থানীয় ভাবে তৈরি হয়, পাওয়া যায়, এমন সামগ্রী আমদানি করার পরিস্থিতি বদলাতে হবে, আত্মনির্ভর অভিযানের পিছনে স্বনির্ভর হয়ে ওঠাই মূল ভাবনা। দীর্ঘকাল ভারতে স্বনির্ভরতার চর্চা ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে ছবিটা বদলে যায়। এখন আত্মনির্ভর ভারত অভিযান চলছে স্থানীয় স্তরে নির্মাণের জন্য। তবে আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের অর্থ একেবারেই আমদানি চলবে না, এমনটা নয়।
তামিলে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘মোদি আয়া’ সম্বোধন করে কেন্দ্রে তাঁর সরকারের ক্ষমতা ফেরার পর গত এক বছরের ‘সাফল্যে’র তালিকাও দেন নির্মলা।