ওয়াশিংটন: নরেন্দ্র মোদী গতকাল লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে তাঁদের সম্প্রদায়ের ওপর পাকিস্তানের অত্যাচারের কথা বলে সহানুভূতি প্রকাশ করায় চাঙ্গা প্রবাসী বালোচ নেতারা এবার পাশে চাইলেন আমেরিকা, ইউরোপীয় দেশগুলিকে। এজন্য মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওয়াশিংটনের বালোচ ন্যাশনাল মুভমেন্ট-এর চেয়ারম্যান খালিল বালোচ এক বিবৃতিতে বলেছেন, গোটা দুনিয়াকে বুঝতে হবে যে, পাকিস্তানের ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ ব্যবহারের নীতি সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। সন্ত্রাসবাদকে নিয়ন্ত্রণে রাখলে চলে না, একে সফলভাবে মোকাবিলা করতে হয়। তিনি এও বলেন, পাকিস্তান ৬৮ বছর ধরে বালোচিস্তান দখলে রেখে বালোচদের ওপর যুদ্ধাপরাধ করেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, বালোচদের ৫ বছরের স্বাধীনতার লড়াইয়ের ওপর দমনপীড়ন চালিয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমেরিকা, ইউরোপ পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় তুলবে, এটাই আশা করে বালোচরা।


মোদীর বালোচিস্তান নীতিকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এক ইতিবাচক ব্যাপার। সেইসঙ্গে বলেন, অধিকৃত বালোচিস্তানে গণহত্যা চলছে। একটা জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানের এহেন যুদ্ধাপরাধের প্রতি উদাসীন হয়ে রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এটা উদ্বেগের ব্যাপার।

বালোচিস্তান নিয়ে গতকালের বক্তব্যের জন্য মোদীকে ধন্যবাদ দিয়ে ভারত সরকার, ভারতীয় মিডিয়া, গোটা দেশ বালোচদের পক্ষে সরব তো হবেই, বালোচ স্বাধীনতা সংগ্রামকে বাস্তবে জোরদার করতে সাহায্য করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন বালোচ রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট ব্রাহুমদাহ বুগটি। ঘটনাচক্রে তিনি হলেন পাক সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হওয়া বালোচ জাতীয়তাবাদী নেতা নবাব আকবর বুগটির পৌত্র। ব্রাহুমদাহ বলেন, কাশ্মীরে পাকিস্তানের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের কথা গোটা দুনিয়ার জানা। মুম্বই, পঠানকোটের মতো ভারতে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসবাদী হামলায়ও যে পাকিস্তান সরাসরি জড়িত, সেটাও সবাই জানে। তিনি বলেন, এই প্রেক্ষাপটে বালোচ জনগণের কণ্ঠ শক্তিশালী করা ভারত সরকারের সাময়িক কৌশল হলে চলবে না, অত্যাচারিত বালোচ ভাই-বোনেদের পাশে থাকার আন্তরিক প্রয়াস হতে হবে। ভারত সরকারের বিদেশনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ করতে হবে একে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত সরকারের পাকিস্তানি নৃশংস অত্যাচারের মুখে বাংলাদেশীদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বালোচরা, গোটা দুনিয়ার অত্যাচারিত জনগণ আজও মনে রেখেছে, জানান তিনি। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, পাকিস্তান কাশ্মীরীদের আত্মনিয়্ন্ত্রণ, স্বশাসনের অধিকার দাবি করে। কিন্তু তারাই আবার বালোচ জনগণের একই দাবিকে নির্মম ভাবে দমন করছে। এটা শুধু ওদের দ্বিচারিতাই নয়, এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ধ্বংস করতে পাকিস্তানের অভিসন্ধিকেও প্রকট করে দিচ্ছে।