বেজিং: রোহিঙ্গা ইস্যুতে মায়ানমারের পাশে চিন। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে আগস্টের শেষে পুলিশ ফাঁড়িতে সন্ত্রাসবাদী হামলার পাল্টা সামরিক অভিযানে সেখানকার ৩ লক্ষের বেশি সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম ভিটেছাড়া হয়ে বাংলাদেশে পালিয়েছে। তাদের ওপর তীব্র সামরিক দমনপীড়নের অভিযোগকে কেন্দ্র করে মায়ানমার সরকারের ওপর প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হচ্ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান জেইজ রাদ আল হুসেইনের মন্তব্য, যে কায়দায় হিংসা চলছে, তা 'একটি জাতিগোষ্ঠীকে সমূলে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ায় আদর্শ উদাহরণ' হতে পারে।

রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আগামীকাল জরুরি বৈঠকে বসার কথা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের কূটনীতিকরা বলছেন, মায়ানমারের ব্যাবসা, বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান শরিক চিন। তাই রাষ্ট্রপুঞ্জের শীর্ষ সংস্থার রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধানে জড়ানোর বিরোধিতা করছে তারা।

চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শ্যুয়াং আজ বলেন, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে হিংসাত্মক আক্রমণের নিন্দা করছি। রাখাইন প্রদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা বহাল রাখায় মায়ানমারের প্রয়াস সমর্থন করি আমরা। সেখানে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, শৃঙ্খলা শীঘ্রই পুনরুদ্ধার করা যাবে আশা করছি। জাতীয় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত, সুরক্ষিত রাখতে মায়ানমারের প্রয়াসের পাশে আন্তর্জাতিক মহলের অবশ্যই থাকা উচিত বলে মনে করি আমরা।

এদিকে হোয়াইট হাউস মায়ানমারে হিংসার নিন্দা করেছে। তাদের প্রেস সচিব সারাহ স্যান্ডার্স বলেছেন, মায়ানমার থেকে ব্যাপক পরিমাণে মানুষের উত্খাত হওয়া, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও অন্য সংখ্যালঘু সহ মানুষজনের ক্ষয়ক্ষতি ও বিপর্যয় থেকে প্রমাণ, মায়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনী নাগরিকদের রক্ষা করছে না। রাখাইনের চলতি সঙ্কটে গভীর বিচলিত আমেরিকা। ২৫ আগস্ট মায়ানমারের নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর থেকে অন্তত ৩ লক্ষ মানুষ ঘরবাড়ি ফেলে পালিয়েছে। আমরা ওই হামলা, তার ফলে উদ্ভূত হিংসার নিন্দার পুনরাবৃত্তি করছি।

স্যান্ডার্স এও বলেন, নিরাপত্তাবাহিনী ও তাদের সম্মতি নিয়ে চলা লোকজন দ্বারা আইনবহির্ভূত হত্যা, গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া, গণহত্যা, ধর্ষণ সহ ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আমেরিকা উদ্বিগ্ন। মায়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনীকে আইনের শাসন মেনে হিংসা বন্ধ করতে সব সম্প্রদায়ের লোকজনের উত্খাত হওয়ার অবসান ঘটাতে আহ্বান জানাই।