ইসলামাবাদ: পাকিস্তানে ১২ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাস আক্রান্ত বলে সন্দেহ। এরমধ্যে ১,৪৯৫ জনের সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে। পাকিস্তানের স্বাস্থ্য বিভাগের এক পদস্থ আধিকারিক এ কথা জানিয়েছেন। এরইমধ্যে দেশে এই সংক্রমক অসুখের নয়া ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে পঞ্জাব প্রদেশ।

সরকারের স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা জাফর মির্জা বলেছেন, সারাদেশে এখন সন্দেহভাজন আক্রান্তর সংখ্যা ১২,২১৮ জন।

আক্রান্তদের বেশিরভাগই ইরান-ফেরত। ইরানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার। মৃতের সংখ্যা ২,৩০০।

পাকিস্তানে পঞ্জাবে ৫৫৭, সিন্ধে ৪৬৯, খাইবার-পাখতুনখোয়ায় ১৮৮, বালুচিস্তানে ১৩৩, গিলগিট-বাল্টিস্তানে ১০৭, ইসলামাবাদে ৩৯ এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ২ জন সংক্রমণের শিকার হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক এই তথ্য জানিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেরে উঠেছে ২৫ জন। সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পঞ্জাব প্রদেশ করোনা সংক্রমণের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এখানে ২২ বছরের এক করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী উসমান বুজদার।সবমিলিয়ে এই প্রদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

ইসলামাবাদে এক চিকিত্সদের পরীক্ষার ফল পজিটিভ হওয়ায় একটি পলিক্লিনিক হাসপাতালের ৩০ জন চিকিত্সককে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

মির্জা জানিয়েছেন, পলিমেরেজ চেন ট্র্যাকশন (পিসিআর) টেস্টই বিশ্বে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য এবং সারা দেশের ১৪ ল্যাবে এই টেস্ট চালানো হচ্ছে। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের মৃত্যুর অনুপাত ০.৭৮, যা অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক কম।

পাকিস্তানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরামর্শদাতা মোইদ ইউসুফ, দেশের বিমান পরিবহণ আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। আগামীকাল থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশ থেকে দেশের বাইরে উড়ানও বন্ধ থাকবে।  তিনি বলেছেন, ব্যাঙ্কক থেকে আটক পাক নাগরিকদের নিয়ে বিমান ফিরলেই অন্যদেশ থেকে নাগরিকদের ফেরত নিয়ে আসার কাজ শেষ হবে।

দেশে আসা প্রত্যেক যাত্রীকে পরীক্ষা করে দেখার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলে ৪ এপ্রিলের পর থেকে ধীরে ধীরে বিমান পরিবহণ শুরু করা হবে।  দেশের পূর্ব ও পশ্চিমপ্রান্তের সীমান্ত আরও দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকবে।

পাকিস্তানের বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহম্মদ আফজল আগামী সপ্তাহগুলিতে দেখে টেস্টিং ল্যাবের সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০ করা হবে বলে জানিয়েছেন।  তিনি জানিয়েছেন, চিন থেকে আরও বেশি টেস্টিং কিটট ও প্রোটেকটিভ গিয়ার আমদানি করা হবে। ভেন্টিলেটরের ঘাটতিও খুব শীঘ্রই পূরণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মির্জা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ পর্যালোচনা করতে চিনের চিকিত্সকদের একটি দল শীঘ্রই পাকিস্তানে আসবে। চিনের ওই দল স্থানীয় চিকিত্সকদের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে।

এরইমধ্যে অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের প্রকোপের প্রভাব মোকাবিলায় পাকিস্তানের আর্থিক সহায়তার আর্জি বিবেচনা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)।

.