ফ্লোরিডা: গতির নেশায় তখন বুঁদ বুড়ো থেকে ছোড়া। এতটাই লাগামছাড়া আচরণ যে জীবনের মায়াও ভুলেছেন (Road Accident)। সেই অবস্থায় গতির সপক্ষেই ভিড়ের মধ্যে থেকে মাথা তুলেছিলেন তিনি। দু’চাকার গতির টানে জীবন যায় যাক, ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে ছিলেন তিনি (Helmet Laws)। তাই হেলমেট পরা, না পরাকে ব্যক্তিসিদ্ধান্তের মধ্যেই রাখার পক্ষপাতী ছিলেন। ১৯৯০ সালের সেই লড়াকু যুবক, ২০২২ সালে পৌঁছে গিয়েছিলেন বার্ধক্যে। আর এই বয়সে পৌঁছে সেই দু’চাকার নিজেই গতির বলি হলেন রন স্মিথ। গত ২০ অগাস্ট মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। ঘটনাচক্রে সেই সময় রনের মাথাতেই হেলমেট ছিল না (Florida HElmet Law)।
হেলমেটের বিরোধিতায় কেটেছে জীবন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু রন স্মিথের
রন নিজেও গতির নেশায় বুঁদ ছিলেন (Ron Smith)। নিজেও অভিজ্ঞ রাইডার ছিলেন তিনি। নয়ের দশকে বাইকার হওয়ার নেশায় যখন বুঁদ সকলে, সেই সময় জীবনের নিরাপত্তার থেকে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন রন। পেশায় আইনজীবী রন তাই হেলমেট বাধ্যতামূলক না করার দাবিতে সরব হন। তা নিয়ে বিস্তর কোর্ট-কাছারিও করতে হয়। রন সেই সময় ABATE অর্থাথ A Brotherhood Against Totalitarian Enactments And American Bikers Aimed Toward Education-এরও সদস্য ছিলেন। সেই সময় আমেরিকার ফ্লোরিডায় আইনি ভাবে হেলমেট বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু সেখানকার জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা এবং মোটরযান বিভাগ যদিও সড়ক নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরকারি তালিকায় হেলমেটকে রাখতে ব্যর্থই হয়।
আরও পড়ুন: Rishi Sunak : প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বক্তৃতা দেওয়ার সময়ই নজরে ঋষির হাতে বাঁধা লাল সুতো
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০ অগাস্ট প্রেমিকা ব্রেন্ডা জেনান ভল্পের সঙ্গে একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন রন। মোটর সাইকেলে চেপেই রওনা দেন রন এবং ব্রেন্ডা। কিন্তু দু'জনের মাথাতেই হেলমেট ছিল না বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেই সময়, ট্রাফিক সিগনাল দেখে গতি কমিয়েই এনেছিলেন রন। কিন্তু সেই সময়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। তাতে রাস্তার উপর থেকে চাকা পিছলে একটি ট্রেলারে ধাক্কা মারে মোটর সাইকেলটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় রন নিয়ন্ত্রণ হারানোয় ঘড়ির কাঁটার মতো গোল হয়ে ঘুরতে ঘুরতে ঘুরতেই রাস্তা থেকে ছিটকে ট্রেলারে ধাক্কা মারে মোটর সাইকেলটি। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান রন। ব্রেন্ডাকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন থাকাকালীন সেখানেই মৃত্য়ু হয় তাঁর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাথায় চোট লাগাতেই মৃত্যু হয় রন এবং ব্রেন্ডার।
জোর করে নয়, হেলমেট হোক ঐচ্ছিক, দাবি ছিল রনের
রন এবং ব্রেন্ডার বন্ধুরা জানিয়েছেন, রন এবং ব্রেন্ডা দুই জনেই ব্যক্তি স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন। হেলমেট না পরে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে আইনি ঝামেলায় জড়ানো মানুষজনের পাশে দাঁড়ান তাঁরা। তাতেই ২০০০ সালে হেলমেট বাধ্যতামূলক থাকার আইন পাল্টে যায় ফ্লোরিডায়। রনের বন্ধু ডেভ নিউম্যান বলেন, "রনের বিশ্বাস ছিল, হেলমেট পরা, না পরা ব্যক্তিগত পছন্দ হওয়া উচিত।" তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, ব্যক্তি স্বাধীনতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল রনের জীবনে। তাঁর উদ্যোগেই ২০০০ সালে ২১ বছরের ঊর্ধ্বে কারও ১০ হাজার ডলারের দুর্ঘটনা বিমা থাকলে, হেলমেট পরার প্রয়োজন নেই বলে জানায় ফ্লোরিডা সরকার।