নয়াদিল্লি: ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পদে এবার এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত অ-শ্বেতাঙ্গ। লিজ ট্রাস পদত্যাগ করার পরে, দীপাবলির দিন বিপুল ভোটে জয়ী হলেন ঋষি সুনক (Rishi Sunak)। ঋষি সুনকের দাদু ছিলেন অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাবের বাসিন্দা। তখনই চাকরি নিয়ে ইংল্যন্ডে গেছিলেন ঋষির ঠাকুমা। ইংলন্ডেই জন্ম ঋষি সুনকের। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তির জামাই ঋষি সুনক। 


ঋষি-পরিচয়:
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের দাদু ছিলেন পাঞ্জাবের বাসিন্দা। চাকরি নিয়ে ইংল্যন্ডে গেছিলেন ঋষির ঠাকুমা। তার বছর খানেক পরে, স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে তিনি চলে যান ব্রিটেনে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষির ভারতীয় যোগের আরও একটি দিক রয়েছে। তিনি, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা এনআর নারায়ণমূর্তির জামাই। নারায়ণ মূর্তির মেয়ে অক্ষতাকে বিয়ে করেছেন ঋষি সুনক। একসময় বেঙ্গালুরুতে এন আর নারায়ণমূর্তির গ্যারাজে তৈরি হয়েছিল ইনফোসিস৷ ধীরে ধীরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে তা পরিণত হয় মহীরূহে। শূন্য থেকে শুরু করে, যেমন শীর্ষে পৌঁছেছিলেন নারায়ণ মূর্তি। ঠিক তেমনই, উত্থান তাঁর ভারতীয় বংশোদ্ভূত জামাইয়েরও। ২০০৯ সালে, ক্যালিফর্নিয়ায় নারায়ণ মূর্তির মেয়ে অক্ষতার সঙ্গে পরিচয় হয় ঋষির। প্রথম দেখাতেই ভালো লাগা। সে বছরই বিয়ে করেন তাঁরা। ঋষি-অক্ষতার ২ মেয়ে, অনুষ্কা ও কৃষ্ণা।


পড়াশোনা ও পেশা:
সদ্য চল্লিশ পেরোনো ঋষি সুনকের জন্ম, ১৯৮০ সালের ১২ মে। ব্রিটেনের বন্দর শহর সাউদাম্পটনে জন্মেছিলেন ঋষি। বাবা পেশায় চিকিৎসক। মা ফার্মাসিস্ট, তাঁর ওষুধের দোকান ছিল। ছোট থেকেই ঋষি'র দু'চোখে ছিল আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন। পড়াশোনাতেও তুখোড় ছিলেন ঋষি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী তিনি। রাজনীতিতে নামার আগে তিনি ছিলেন একজন বিনিয়োগ ব্যবসায়ী। ব্রিটেনের অন্যতম বড় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ঋষি সুনক।


রাজনীতির ময়দানে:
ঋষি'র রাজনীতিতে হাতেখড়ি ২০১৫ সালে। কনজারভেটিভ পার্টির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে রিচমন্ড ইয়র্কশায়ার থেকে জিতে সাংসদ হন তিনি। তার পর আর তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি। এক সময়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। তার ফলে, বরিস-মন্ত্রিসভায় 'চ্যান্সেলর অব দ্য এক্সচেকার' বা অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ঋষি। ক্রমেই দলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। ব্রেক্সিটেরও অন্যতম প্রচারক ছিলেন তিনি। বরিসের হয়ে, 'ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন' থেকে বেরিয়ে আসা অর্থাৎ, 'ব্রেক্সিটে'র পক্ষে প্রচার করেছিলেন সুনক।


রয়েছে বিতর্কও:
এই ঋষি সুনক আবার বিভিন্ন সময়, বিতর্কে জড়িয়েছেন। ইনফোসিসে তাঁর স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির অংশীদারিত্ব এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত আয় বাবদ অর্থের উপর কর না দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল। এছাড়া করোনা অতিমারির সময় লকডাউন অগ্রাহ্য করে ডাউনিং স্ট্রিটে হইহুল্লোড় করার অভিযোগও ওঠে ঋষি সুনকের বিরুদ্ধে। এরজন্য তাঁকে জরিমানাও দিতে হয়েছিল। ঋষি সুনকের স্ত্রী অক্ষিতার সম্পত্তির পরিমাণ, রানি এলিজাবেথের চেয়েও বেশি।


আরও পড়ুন: প্রাইম মিনিস্টার ঋষি সুনক, ব্রিটেনের রাশ ভারতীয় বংশোদ্ভুতের হাতে