নয়াদিল্লি: আয়তনে মেরেকেটে ৪৬ একর। শেষ আদমসুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ১০০। রুশ আগ্রাসন থেকে সেই দ্বীপকে বাঁচাতেই প্রাণ দিলেন ১৩ ইউক্রেনীয় সেনা (Russia-Ukraine War)। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষমতা বিশ্লেষণে যখন মশগুল গোটা বিশ্ব, সেই সময় সাহসিকতা এবং বীরত্বের এমনই নজির গড়লেন যুদ্ধের বলি কিভের উপকূল রক্ষী বাহিনীর ওই সৈনিকরা।


ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ড থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে কৃষ্ণ সাগরের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ‘স্নেক আইল্যান্ড’, বাংলায় তর্জমায় যার অর্থ দাঁড়ায় সর্প-দ্বীপ (Ukraine Snake Island)/Zmiinyi Island)। বৃহস্পতিবার রুশ সেনা সেটির দখল নেয় (Russia Invades Ukraine)। জানায়, ৮২ জন ইউক্রেনীয় সেনা আত্মসমর্পণ করেছেন। আগামী দিনে তাঁরা যাতে যুদ্ধ অংশ নেন, তাই নিয়ে মুচলেকা লেখানোর পর্ব চলছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।


কিন্তু ইউক্রেনীয় সরকারের তরফে যে ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে শেষ মুহূর্তে রুশ রণতরী এবং তাদের সেনার যে কথোপকথন শোনা গিয়েছে, তা রাশিয়ার দাবির পরিপন্থী (Russia Ukraine War News)। ওই ফুটেজে রুশ রণতরী থেকে ঘোষণা হয়, ‘‘রুশ যুদ্ধ জাহাজ থেকে বলছি। আবারও বলছি, আমি রুশ সেনা। আপনাদের বলব, রক্তপাত এবং অহেতুক মৃত্যু যদি এড়াতে চান, তাহলে হাতিয়ার ফেলে অবিলম্বে আত্মসমর্পণ করুন। নইলে বোমা ফেলব।’’





আরও পড়ুন: Russia-Ukraine War : ভালবাসার রাইফেল! বিয়ে সেরে দেশের জন্য বন্দুক জোগাড়ে নামলেন ইউক্রেনের নবদম্পতি


কিন্তু রুশ সেনার হুঁশিয়ারির জবাবে ইউক্রেনীয় সেনা পাল্টা মাইকিং করে বলে, ‘‘তবে তা-ই হোক। রুশ যুদ্ধজাহাজ নিপাত যাও।’’ এর পরই রুশ যুদ্ধ জাহাজ থেকে বোমাবর্ষণ করে দ্বীপটির দখল নেওয়া হয় এবং তাতে ১৩ জন ইউক্রেনীয় সেনা প্রাণ হারান বলে জানিয়েছেন সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রীর উপদেষ্টা অ্যান্টন হেরাশচেঙ্কো। নেটমাধ্যমে দু’পক্ষের ওই কথোপকথনের ফুটেজ ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে অকুতোভয় রুশ সেনাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলে।


 ইউক্রেন এবং পড়শি দেশ রোমানিয়া থেকে অনতিদূরে অবস্থিত সর্প-দ্বীপ দ্বীপ ইউক্রেনের জলসীমা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১৪ সালে রাশিয়া যে ক্রাইমিয়ার দখল নেয়, সেখান থেকে দ্বীপটির দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটার। মূলত ইউক্রেনীয় সেনা এবং তাঁদের পরিবার মিলিয়ে জন ১০০-র বসবাস ছিল ওই দ্বীপে। তা সত্ত্বেও শেষ মুহূর্তে পর্যন্ত যে ভাবে লড়ে গিয়েছেন মৃতরা, তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘‘বীরত্বের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করেছেন আমাদের সৈনিকরা। শেষ মুহূর্তেও হার মানেননি।’’ মৃত সৈনিকদের মরণোত্তর ‘হিরো অফ ইউক্রেন’ সম্মান দেওয়া হবে বলেও জানান জেলেনস্কি।