লাহোর: ছাড়া পেয়েই ভারত-বিরোধী সুর হাফিজ সঈদের গলায়। কাশ্মীর নিয়ে ভারতকে হুমকি দিয়েছেন ২০০৮ এর মুম্বই সন্ত্রাসবাদী হামলার মাস্টারমাইন্ড।
পাকিস্তানের জুডিশিয়াল বোর্ডের নির্দেশে গতকাল রাতে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। গত ৩১ জানুয়ারি থেকে গৃহবন্দি ছিলেন তিনি। সমর্থকদের উল্লাসের মধ্যে বাড়িতে পা দিয়ে কেক কেটে সঙ্গীসাথীদের নিয়ে মুক্তির আনন্দে সেলিব্রেট করেন সঈদ। সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, কাশ্মীর নিয়ে আমার মুখ বন্ধ রাখতেই দশ মাস আটকে রাখা হয়। কাশ্মীরীদের জন্যই আমার /লড়াই। কাশ্মীরের জন্য দেশব্যাপী লোকজনকে সমবেত করে স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনে কাশ্মীরীদের সাহায্য করব। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এখানেই থেমে না থেকে ২৬/১১-র মুম্বই হামলার নবম বর্ষপূর্ষিতে তিনি আইএসআই ও পাকিস্তান সেনার নির্দেশে পাক অধিকৃত কাশ্মীর যাচ্ছেন। সেখানে নিয়ন্ত্রণ রেখায় সন্ত্রাসবাদীদের ট্রেনিং ক্যাম্প ও হামলা চালানোর সূচনা কেন্দ্র ঘুরে দেখবেন।
ভারত গতকালই সঈদকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে। লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে তৈরি পঞ্জাব জুডিশিয়াল রিভিউ বোর্ড বুধবার সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে ছেড়ে দিতে বলে। আগের রাতেই সঈদের গৃহবন্দি থাকার ৩০ দিনের মেয়াদ শেষ হয়। অসন্তুষ্ট ভারত বলেছে, ফের প্রমাণিত হল, রাষ্ট্রপুঞ্জের তকমা পাওয়া লোকজন, সংগঠন সহ সন্ত্রাসবাদীদের বিচার করে সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে পাকিস্তান সিরিয়াস নয়। রাষ্ট্রবহির্ভূত লোকজনকে লাগাতার সমর্থন চালিয়ে যাওয়ার প্রমাণ এটা। পাকিস্তানি সিস্টেমের নিষিদ্ধ জঙ্গিদের মূল স্রোতে জায়গা করে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা বলেও মনে হয়। পাকিস্তান রাষ্ট্রবহির্ভূত শক্তিগুলিকে আড়াল করা, সমর্থনের নীতি বদলায়নি। ওদের আসল রূপ সবার কাছেই স্পষ্ট।
সঈদ অবশ্য তাঁর রিলিজ অর্ডার দেখিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। বলেন, আমি খুশি। লাহোর হাইকোর্টের তিন বিচারপতিই আমাকে ছেড়ে দিতে বলেছেন। আমার বিরুদ্ধে আনা কোনও অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। আমার নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছিল ভারত। লাহোর হাইকোর্টের রিভিউ বোর্ডের সিদ্ধান্তে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি।
এদিন দুপুরে জামাত-উদ-দাওয়া সদর দপ্তরে শুক্রবারের প্রার্থনায়ও ভাষণ দেন সঈদ। পাকিস্তান সরকার ভারতকে 'তুষ্ট করতে' আন্তর্জাতিক প্রভুদের নির্দেশে চলছে বলে অভিযোগ করেন। কাশ্মীরে 'ভারতের অত্যাচারের' কথাও বলেন।
একইসঙ্গে বরখাস্ত পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকেও নিশানা করেন। বলেন, কাশ্মীরীদের প্রত্যাখ্যান করায় শাস্তি পেতে হয়েছে শরিফকে। উনি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে গিয়ে কাশ্মীরীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। পুরোপুরি উপেক্ষা করেছেন কাশ্মীর ইস্যুকে। সেজন্যই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে উত্খাত হয়েছেন। শাসকদের আমেরিকা ও অন্য দেশের নির্দেশ না নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।