নয়াদিল্লি: দুর্বোধ্য আঁকিবুঁকি নয়, প্রেসক্রিপশন এবং মেডিকো-লিগাল রিপোর্ট লেখার ক্ষেত্রে যথাসম্ভব 'ক্যাপিটল লেটার' এবং 'টাইপড' ফর্মাটের ব্যবহার করুন ডাক্তাররা, এই মর্মে রাজ্য সরকারকে নির্দেশিকা জারি করতে নির্দেশ দিল ওড়িশা হাইকোর্ট। গত সপ্তাহে ওড়িশা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে সাফ লেখা, এর ফলে, এই ধরনের নথিপত্র পড়ে তার অর্থ বোঝার ক্ষেত্রে বিচারব্যবস্থাকে 'অপ্রয়োজনীয় পরিশ্রম' করতে হবে না। ওড়িশা হাইকোর্টের বিচারপতি এস কে পানিগ্রাহীকে হালেই একটি মামলার নিষ্পত্তি করতে গিয়ে এই ধরনের একটি সমস্যার মুখোমুখি হতে হন। তার পরই এই নির্দেশ।


কী বললেন বিচারপতি?
মামলাটির আবেদনের সঙ্গে যে পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল, তাতে ঠিক কী লেখা ছিল পড়েই উঠতে পারেননি বিচারপতি পানিগ্রাহী। স্বাভাবিক ভাবেই দুর্বোধ্য সেই লেখার অর্থও বুঝে উঠতে বিস্তর ধাক্কা খেতে হয়। মামলাটিতে পুত্রহারা এক পিতা হাইকোর্টের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, যাতে সরকার তাঁকে এককালীন আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আবেদনকারী জানান, সর্পাঘাতে মারা গিয়েছেন তাঁর বড় ছেলে।  যে ডাক্তার নিজে হাতে পোস্ট মর্টেম রিপোর্টটি লিখেছিলেন, তাঁকে নির্দেশ জারি করে ভার্চুয়াল মোডে হাজির থাকতে বলে ওড়িশা হাইকোর্ট। কারণ একটাই। তাঁর লেখা পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট পড়েই ওঠা যায়নি। অবশেষে তিনি নিজে শুনানিতে হাজির থেকে সেই রিপোর্ট পড়ে শোনান এবং নিজের মতামতও জানান। সেই শুনে হাইকোর্ট বুঝতে পারে যে সর্পাঘাতেই মারা গিয়েছিলেন আবেদনকারীর ছেলে। সেই অনুযায়ী মামলার নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু স্রেফ দুর্বোধ্য হাতের লেখা বোঝার জন্য এতটা সময় ও শ্রম ব্যয় করার মতো জায়গায় কি রয়েছে বিপুল চাপে জর্জরিত আদালতগুলি?বিচারপতি পানিগ্রাহী তাই নির্দেশিকায় লেখেন, 'বহু ক্ষেত্রে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট লেখার সময় ডাক্তারদের এই দায়সারা মনোভাব মেডিকো-লিগাল কেস বোঝার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিচারবিভাগের পক্ষে সেগুলির অর্থ উদ্ধার করে সিদ্ধান্তে আসা কঠিন হয়ে পড়ছে।' তাঁর পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের 'জিগজ্যাগ' হাতের লেখায় সব কিছু লেখা ডাক্তারদের মধ্যে প্রচলিত দস্তুর হয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষ হোন বা বিচারবিভাগীয় অফিসার, কেউই এগুলি বোঝেন না। তার পরেই কোর্টের তরফে সমস্ত চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন এবং সমস্ত মেডিকো-লিগাল রিপোর্ট 'ক্যাপিটল লেটার' এবং সহজবোধ্য হাতের লেখায় লেখার জন্য রাজ্যকে নির্দেশিকা জারির নির্দেশ দেওয়া হয়।


 


আরও পড়ুন:কৃষ্ণা-গোদাবরী অববাহিকায় গভীর সমুদ্র প্রকল্প থেকে প্রথম তেল উত্তোলন ভারতের