নয়াদিল্লি: 'দু'দেশের ব্যাপার', পাকিস্তানের (Iran Attacks Pakistan) মাটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হানা নিয়ে এমনই মনে করে ভারত। তবে সে সঙ্গে বিদেশমন্ত্রক মনে করিয়েছে, সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে 'জিরো টলারেন্স' (India Reaction On Iran Missile Attack) নীতিতে বিশ্বাসী নয়াদিল্লি। তারা এটাও বোঝে, কোনও দেশ আত্মরক্ষার তাগিদ থেকে ঠিক কী কী ধরনের  করতে পারে। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের প্রেক্ষিতে নয়াদিল্লির এই মন্তব্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।


যা ঘটল...
ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়ওয়াল সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বলেন, 'এটি ইরান ও পাকিস্তানের বিষয়। তবে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে জানতে চাইলে বলব, সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে আমাদের আপসহীন জিরো টলারেন্স নীতি কায়েম রয়েছে। কোনও দেশ আত্মরক্ষার তাগিদে কোনও পদক্ষেপ করলে সেটিও বুঝি আমরা।' উল্লেখ্য, যে জঙ্গিগোষ্ঠীর দুটি ঘাঁটি ইরান নষ্ট করেছে বলে দাবি, তার সঙ্গে ভারতের একরকম 'সম্পর্ক' রয়েছে বলে গত কালই দাবি করে ওয়াকিবহাল মহল। চরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানে ধৃত কুলভূষণ সুধীর যাদবই ভারত এবং জইশ আল-আদলের মধ্যে যোগসূত্র। নাশকতার ষড়যন্ত্র এবং চরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানের জেলে এই মুহূর্তে বন্দি রয়েছেন কুলভূষণ। আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বিষয়টি। দিল্লির দাবি, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ইরান থেকে কুলভূষণকে অপহরণ করা হয়। ব্যবসার কাজে চাবাহার এবং বন্দর আব্বাসে ছিলেন কুলভূষণ। সেখান থেকেই তাঁকে অপহরণ করে পাক জঙ্গিরা। ওই জঙ্গিরা জইশ আল-আদল সংগঠনের সদস্য বলে দাবি দিল্লির। 


ইরানের অবস্থান...
গত কাল অর্থাৎ বুধবার, ইরান জানায়, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে জইশ অল-অদল নামে একটি সুন্নি বালোচি জঙ্গিগোষ্ঠীর দুটি ঘাঁটি তছনছ করে দিয়েছে। তেহরানের দাবি, অতীতে তাদের নিরাপত্তাবাহিনীর উপর হামলা চালায় এই গোষ্ঠী। গত ১৫ ডিসেম্বর, জইশ অল-অদল গোষ্ঠীর সদস্যদের আক্রমণে প্রাণ হারান ইরানের পুলিশ আধিকারিকরা। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির-আবদোল্লাহিয়ান বলেন, 'পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতাকে আমরাও সম্মান করি। কিন্তু আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি  খেলা হলে তা মানব না।' তাদের বক্তব্য, সব দিক মাথায় রেখে পাকিস্তানের মাটিতে একেবারে সুনির্দিষ্ট ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর ঘাঁটিতেই হামলা করা হয়েছে।
ইসলামাবাদের দাবি, ইরানের হানায় দুই শিশুর প্রাণ যায়। এর 'গুরুতর পরিণাম' হতে পারে, এই মর্মে তেহরানকে হুঁশিয়ারিও দেয় ইসলামাবাদ। ঘটনার প্রতিবাদে, ইরানে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ফেরত এনেছে পাকিস্তান। সমস্ত উচ্চপর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও মুলতুবি রাখা হয়েছে। প্রসঙ্গত, পাকিস্তান মাটিতে হামলার আগের দিনই ইরাক ও সিরিয়াতেও ক্ষেপণাস্ত্র হানা চালায় ইরান। তাদের দাবি, সেখানেও ইরান-বিরোধী জঙ্গিগোষ্ঠীই হামলার লক্ষ্য ছিল তাদের। 


আরও পড়ুন:ক্রমশ তেতে উঠছে পশ্চিম এশিয়া, এবার মোসাদের সদর দফতরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের