Mithila on New Film: পুরুলিয়ায় শ্যুটিং করতে গিয়ে অসুস্থ, মিথিলা বলছেন, 'একা ছবি টেনে নিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি'
ছবির সম্পূর্ণ প্রচারে না থাকতে পারার জন্য, মনটা একটু খারাপই ছিল তাঁর। আর তাই, প্রিমিয়ারে এসে তিনি বলেছিলেন, যতই সময় লাগুক, সব্বাইকে সাক্ষাৎকার দেবেন। আর তাই করতে গিয়েই আপাতত জ্বরে পড়েছেন নায়িকা। ঢাকায় ফিরে গিয়ে, একটু বিশ্রামে রয়েছেন বটে, তবে সে মাত্র কয়েকটা দিনের জন্য। একদিকে অভিনয় অন্যদিকে NGO-র কাজ নিয়ে তাঁর রুটিন রীতিমতো ছকে বাঁধা থাকে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appআর ফাঁকেই, একটু সময় বের করে ঢাকা থেকে এবিপি লাইভের (ABP Live) সঙ্গে মোবাইলে আড্ডা জমালেন 'ও অভাগী'-র নায়িকা, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা (Rafiath Rashid Mithila)।
ছবির জন্য মাত্র ১দিনই আসতে পেরেছেন মিথিলা, কেমন প্রতিক্রিয়া পেলেন? অভিনেত্রী বলছেন, 'প্রিমিয়ার আর তার পরেরদিন, কলকাতায় তো এটুকুই থাকার সময় পেলাম এই ছুটিতে। তার মধ্যে যাঁরা ছবিটা দেখেছেন, ব্যক্তিগতভাবে জানিয়েছেন ভাল লাগার কথা। আসলে গল্পটা ভীষণ মনে থাকার মতো, আমরাও খুবই পরিশ্রম করে কাজটা করেছি। তবে যদি বক্সঅফিসের হিসেব চান, তাহলে কলকাতায় আর কেমন ব্লকবাস্টার হিট ছবি হচ্ছে কই? খুবই কম, হাতে গোনা।'
মিথিলা বলছেন, 'অথচ প্রচুর ভাল ভাল ছবি তৈরি হচ্ছে। বুঝতে পারছি না, মানুষ কি তবে হলে গিয়ে সিনেমা দেখাটা বন্ধই করে দিলেন? বাংলাদেশেও ছবির বাজার মাঝে খারাপ হয়েছিল। অনেক সিঙ্গল স্ক্রিন বন্ধ হয়েছে। তবে এখন আবার নতুন করে বেশ কিছু মাল্টিপ্লেক্স খুলেছে। ভাল কাজও হচ্ছে।'
ছবি বাছার সময় কি বড় প্রযোজনা সংস্থা বা স্টারকাস্টিংয়ের কথা মাথায় রাখেন মিথিলা? অভিনেত্রী বলছেন, 'আমি কেবল আমার চরিত্র আর চিত্রনাট্য দেখি। আসলে খুব মুষ্ঠিমেয় কিছু প্রযোজনা সংস্থা ছাড়া, ছবি তৈরির পিছনে এত টাকা প্রযোজকের খরচ হয়ে যায় যে আলাদা করে ছবির প্রচারের জন্য তেমন টাকা বাঁচে না। মানুষ যে ছবিটা দেখবেন, তাঁদের তো জানতে হবে যে ছবিটা চলছে। কিন্তু তাই বলে ভাল কাজের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে তো চলবে না। বাংলায় বাজেট একটা খুব বড় সমস্যা। 'ও অভাগী' ছবিটাই তো কত কষ্ট করে করেছি আমরা। পুরুলিয়ার ওই তীব্র গরম আর কনকনে শীত.. দুইই পেয়েছি। একদিন মনে আছে, ভীষণ গরমে একটা জলে ডুব দেওয়ার শট দিতে হল। বাইরে খুব গরম কিন্তু অসম্ভব ঠাণ্ডা জল। সেদিনের শ্যুটিংয়ের শেষে জ্বর চলে এল।'
এই ছবির অফার মিথিলার কাছে এসেছিল কী ভাবে? অভিনেত্রী বলছেন, 'অনির্বাণ ফোন নম্বর জোগাড় করে আমার সঙ্গে কথা বলেছিল প্রথমে। জানিয়েছিল ও এই গল্পটা নিয়ে ছবি করতে চায়। তারপরে চিত্রনাট্য লেখার সময়ও আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। চিত্রনাট্য পড়ে আমার ভীষণ ভাল লাগে। কাজটা করতে রাজি হয়ে যাই। অনির্বাণ আমায় বলেছিল যে এই ছবিতে তেমন কোনও স্টারকাস্ট নেই। এই বিষয়গুলো আমায় আর ভাবায় না।'
একার কাঁধে গোটা ছবিটাকে টেনে নিয়ে যাওয়া কি চাপ সৃষ্টি করে? একটু হেসে মিথিলার উত্তর, 'তা তো করেই। তবে এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিই আমি। এতদিন কাজ করছি। বাংলাদেশের যে পরিচালকেরা বর্তমানে জনপ্রিয় হয়েছেন, যেমন আশফাক নিপুণ, তাঁদের কেরিয়ারের এক্কেবারে শুরু থেকে কাজ করছি ওদের সঙ্গে। আমার এখন নতুন চরিত্রে চ্যালেঞ্জ নিতে ভাল লাগে।'
মেয়ে আয়রাকে নিয়ে মিথিলার স্থায়ী ঠিকানা কি এখন ঢাকাই? একটু হেসে নায়িকার উত্তর, 'একেবারেই না। আয়রা তো মাঝখানে কলকাতার স্কুলেই ভর্তি হয়েছিল। তবে করোনা চলে যাওয়ার পরে, আমার NGO-র ব্যস্ততা বাড়ল। পাশাপাশি আমি পিএইডি-ও করছি, জেনেভাতে। এটা আমার শেষ বছর। ক্লাস ৩ থেকে থিয়েটার করছি আমি। চিরকালই অনেক কাজ একসঙ্গে করা আমার অভ্যাস। আয়রাও আমার এই জীবনধারার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই বড় হয়ে উঠেছে। ঢাকায় আমার একটা সাপোর্ট সিস্টেম রয়েছে। আমার পরিবারে অনেকে রয়েছেন, আয়রা ওদের কাছেই থাকছে, স্কুল করছে। আর আমি কখনও ঢাকা, কখনও কলকাতা তো কখনও তানজা়নিয়া। যখন ছোট ছিল আয়রা, ওকে কোলে নিয়েই সমস্ত জায়গায় ঘুরতাম। তবে এখন ওর পড়াশোনার জন্য সব জায়গায় নিয়ে যেতে পারি না। আমি মাসে ১ থেকে ২ বার কলকাতা আসি। অন্তত একবার সঙ্গে আয়রাও থাকে। তবে সেই কলকাতা আসাগুলো আমি প্রচার করতে চাই না। অনেক সময় তো মানুষের ব্যক্তিগতভাবে সময় কাটাতেও ইচ্ছে করে।'
কলকাতার বাড়ির পাইথনের সঙ্গে আলাপ হল? হাসতে হাসতে মিথিলা বললেন, 'পাইথন নয়, বলুন পাইথনদের। আপাতত বাড়িতে ৪টে বল পাইথন আছে। একটা তো আবার শোওয়ার ঘরেই থাকে। দেখা হয়েছে ওদের সঙ্গে, তবে হাতে নিয়ে আলাপ হয়নি। আমি কুকুর-বেড়াল খুব ভালবাসি, কিন্তু সাপকে ভয় না পাওয়ার কোনও কারণ এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাইনি। বাড়িতে ঢুকলে মনে হয় একটা চিড়িয়াখানায় এসেছি। তবে হ্যাঁ, আমিও যেমন বাগান করতে ভালবাসি। ছাদে বাগান নীচে চিড়িয়াখানা। যার যেটা পছন্দ।' (হাসি)
সৃজিত কী বললেন ছবি দেখে? মিথিলা বলছেন, 'প্রিমিয়ারে এসেছিল। ওর কাজ ছিল বলে জানিয়েছিল হাফ টাইমেই বেরিয়ে যাবে। তবে দেখলাম হাফ টাইমের পরে আবার হলে ঢুকে গেল, বলল সিট ছেড়ে উঠতে পারছি না। তখনই বুঝলাম ওর ভাল লেগেছে ছবিটা। তারপরে ও অবশ্য সবার সামনে আমার প্রশংসাও করেছে।'
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -