শত্রু-হামলা থেকে কতটা সুরক্ষিত আমাদের দেশ? দেখে নিন ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র-সম্ভার
শৌর্য - ভূমি থেকে ভূমি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। পাল্লা ১৯০০ কিমি। সর্বোচ্চ গতি শব্দের ৭.৫ গুণ। বহনক্ষমতা ২০০ কেজি। পাল্লা ৭০০ কিমি।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appবারাক ৮ - ইজরায়েল ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে তৈরি বিপুল জনপ্রিয় দূরপাল্লার ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র(এলআরস্যাম)।
স্যাটেলাইট বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র (এস্যাট) - ২০১৯ সালের মার্চ মাসে ভূপৃষ্ঠ থেকে ২৮৩ কিমি উচ্চতায় একটি কৃত্রিম উপগ্রহকে এই ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংস করেছে ভারত। ডিআরডিও-র দাবি, ১২০০ কিমি উচ্চতায় সেকেন্ডে ১০ কিমি গতিতে চলা কোনও উপগ্রহকেও ধ্বংস করতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র। পাশাপাশি, বায়ুমণ্ডলে ওপরস্তরে শত্রুদেশের আইসিবিএম ধ্বংস করতেও এই ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষম।
কে-১৫ সাগরিকা - সমুদ্রতল থেকে ভূমি। সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। পাল্লা ৭০০ কিমি।
কে-৪ - সমুদ্রতল থেকে ভূমি। সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। পাল্লা ৩,৫০০ কিমি। বর্তমানে গবেষণাগার পর্যায়ে রয়েছে কে ৫ (৫০০০ কিমি পাল্লা) ও কে-৬ (৬০০০ কিমি পাল্লা)
ধনুষ - সমুদ্র থেকে সমুদ্র। স্বল্প পাল্লার জাহাজ-বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। পাল্লা ৩০০ কিমি।
নির্ভয় - ভূমি, সমুদ্র ও আকাশ। তিন জায়গা থেকেই উৎক্ষেপণযোগ্য সাবসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। পাল্লা ১০০০ কিমি।
ব্রহ্মোস - সুপারসনিক তো বটেই, এই মুহূর্তে বিশ্বের সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। ভূমি, সমুদ্র ও আকাশ-- তিন জায়গা থেকেই উৎক্ষেপণযোগ্য। যে কারণে, দেশের স্থল, নৌ ও বায়ুসেনার জন্য তিনটি পৃথক সংস্করণ প্রস্তুত করা হয়েছে। পাল্লা ৩০০ কিমি। এখন ভারত মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম(এমটিসিআর)-এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তা মাথায় রেখে বর্তমানে গবেষণাপর্বে রয়েছে ব্রহ্মোস-২ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি। এটির গতি হবে মাক ৭। পাল্লা ৪৫০-৬০০ কিমি পর্যন্ত।
প্রলয় - নতুন অন্তর্ভুক্ত হওয়া স্বল্প পাল্লার ভূমি থেকে ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র । পাল্লা ৩৫০-৫০০ কিমি। বহনক্ষমতা ৫০০-১০০০ কেজি।
প্রহার - স্বল্প পাল্লার ভূমি থেকে ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র (এসআরবিএম)। পাল্লা ১৫০ কিমি। এর দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের নাম প্রগতি।
পিনাকা - মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার (এমবিআরএল)। মার্ক ওয়ানের পাল্লা ৪০ কিমি। মার্ক টু-এর পাল্লা ৭৫-৮০ কিমি। নির্মাণপর্বে রয়েছে মার্ক-থ্রি সংস্করণ। এর পাল্লা সম্ভবত ৯০-১০০ কিমি।
নাগ - ভূমি থেকে ভূমি ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র (এটিজিএম)। ভূমি ও আকাশ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য। পাল্লা ৪ কিমি।
অগ্নি ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি ১ - মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (এমআরবিএম)। পাল্লা ৭০০-৯০০ কিমি। বহনক্ষমতা ১০০০ কেজি। অগ্নি ২ - মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (এমআরবিএম)। পাল্লা ২০০০-৩০০০ কিমি। বহনক্ষমতা ৭৫০-১০০০ কেজি। অগ্নি ৩ - অন্তর্বর্তী পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইআরবিএম)। পাল্লা ৩৫০০-৫০০০ কিমি। বহনক্ষমতা ২০০০-২৫০০ কেজি। অগ্নি ৪ - অন্তর্বর্তী পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইআরবিএম)। পাল্লা ৩০০০-৪০০০ কিমি। বহনক্ষমতা ৮০০-১০০০ কেজি। অগ্নি ৫ - আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)। পাল্লা ৫০০০-৮০০০ কিমি। বহনক্ষমতা ১৫০০ কেজি। ৩-১০টি আলাদা ওয়ারহেড (অন্তর্ভুক্তিকরণ পর্যায়ে) অগ্নি ৬ - আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্রের অপর নাম সূর্য। পাল্লা ৮০০০-১০০০০ কিমি। বহনক্ষমতা ১০০০ কেজি। ১০টি আলাদা ওয়ারহেড (নির্মাণপর্বে রয়েছে)।
পৃথ্বী - ভূমি থেকে ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র (এসএসএম)। পৃধ্বী ১ - স্থলসেনার জন্য - পাল্লা ১৫০ কিমি। বহনক্ষমতা ১০০০ কেজি। পৃধ্বী ২ - বায়ুসেনার জন্য - পাল্লা ২৫০ কিমি। বহনক্ষমতা ৫০০ কেজি। পৃধ্বী ৩ - নৌসেনার জন্য - পাল্লা ৩৫০ কিমি। বহনক্ষমতা ১০০০ কেজি।
আকাশ - দ্রুত প্রতিক্রিয়া সম্পন্ন ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র। পাল্লা ২৫-৩০ কিমি। যে কোনও দিক দিয়ে আসা (৩৬০ ডিগ্রি) শত্রু ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান ও ড্রোনকে ধ্বংস করতে সক্ষম।
পৃথ্বী এয়ার ডিফেন্স (পিএডি) - দেশের ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স (বিএমডি) বা বহুস্তরীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থার অন্তর্গত এই ক্ষেপণাস্ত্রকে রাখা হয়েছে। মূলত, শত্রুর হানা থেকে দেশের আকাশসীমাকে রক্ষা করাই এর কাজ। সর্বোচ্চ পাল্লা ২ হাজার কিমি। এটি মূলত অ্যান্টি ব্য়ালিস্টিক মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। বলে রাখা দরকার, এর পিছনে থাকবে অ্যাডভান্সড এয়ার ডিফেন্স সস্টেম (এএডি)। এর অন্তর্গত রুশ নির্মিত বিশ্বখ্যাত এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেম কিনেছে ভারত, যার পাল্লা ৪০০ কিমি।
অস্ত্র - বিয়ন্ড ভিজুয়াল রেঞ্জ (বিভিআর) প্রযুক্তিসম্পন্ন আকাশ থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র (এএএম)। পাল্লা ৮০ কিমি। সর্বোচ্চ গতি ৪.৫ ম্যাক (১ ম্যাক= শব্দের গতি)। বহনক্ষমতা ১৫ কেজি। সুখোই-৩০এমকেআই, মিরাজ-২০০০, এলসিএ তেজস ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানে ব্যবহার করা হয়।
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র- এই প্রজাতির ক্ষেপণাস্ত্র সাধারণত ব্যালিস্টিক ট্র্যাজেক্টরি অনুসরণ করে। লক্ষ্য, পূর্বনির্ধারিত টার্গেটে এক বা একাধিক ওয়ারহেড নিক্ষেপ। এই ক্ষেপণাস্ত্র সাধারণত স্থিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। বড় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে ব্যবহৃত। যাত্রার প্রথম কিছুটা সময় নিয়ন্ত্রণ করা হয় একটি উচ্চতা ও গতি পর্যন্ত। এরপর জ্বালানির সাহায্যে গতি ও উচ্চতার ভরে এগিয়ে চলে। শেষদিকে জ্বালানি ছাড়াই ক্ষেপণাস্ত্রটি নিম্নমুখী যাত্রা শুরু করে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির ওপর ভর করে। উচ্চতা অধিক হওয়ায় একে সহজেই ট্র্যাক করা যায়।
একদিকে পাকিস্তান। অন্যদিকে চিন। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রর শ্যেনদৃষ্টি বরাবর ভারতের ওপর রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে স্থলসীমান্ত, জলসীমান্ত ও আকাশসীমাকে নিরাপদ রাখতে প্রতিনিয়ত সর্বাধুনিক অস্ত্রসরঞ্জাম মজুত করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে ভারতকে। ভারত যে ধরনের অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন, তাতে দেশের সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিপুল অস্ত্র মজুদ যৌক্তিক বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। আর সেই অস্ত্রভাণ্ডারের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র-- যা শক্তি ও তালিকা বিশ্বের যে কোনও শক্তিশালী ও প্রভাবশালী দেশের সঙ্গে তুল্যমূল্য। চরিত্র অনুযায়ী যদি বিচার করা হয়, তাহলে ক্ষেপণাস্ত্র হয় দুটি প্রজাতির। এক-) ব্যালিস্টিক ও দুই-) ক্রুজ।
ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র- এটি মূলত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র যা কম উচ্চতায় গন্তব্যের দিকে এগোতে থাকে এবং অধিকাংশ যাত্রা সম্পন্ন করে একই গতিতে। এই ক্ষেপণাস্ত্র চলমান লক্ষ্যবস্তুর জন্য কার্যকর। মূলত, ছোট লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানার জন্য ব্যবহৃত। স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের গতি পরিবর্তন করতে পারে। উচ্চতা কম হওয়ায় রেডারে সহজে ধরা পড়ে না। এক নজরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্রের তালিকা--
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -