Vladimir Putin: বিদেশের মাটিতে বলি কেউ, কেউ বেঁচেছেন বরাত জোরে, মর্মান্তিক পরিণতি পুতিন-বিরোধীদের
প্রবল শক্তিধর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট তিনি। আন্তর্জাতিক রাজনীতির অন্যতম মুখ্য চরিত্র। এহেন ভ্লাদিমির পুতিনের কথা মুখে মুখে ফিরবে, সেটাই স্বাভাবিক। তাঁকে নিয়ে যা রটে, তার কতটা ঘটে, সেই নিয়ে প্রশ্ন থাকাই স্বাভাবিক।-ফাইল চিত্র।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appকিন্তু গত কয়েক বছরে পর পর যে সব ঘটনাবলী সামনে আসছে, তাতে পুতিনের ব্যক্তিত্ব ঘিরে রহস্যের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। পুতিনের সমালোচক আলেক্সেই নাভালানির মৃত্যুতে তাতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। কারণ নাভালনিই প্রথম নন, পুতিন সমালোচক বলে পরিচিত, একাধিক ব্যক্তির রহস্যমৃত্যু ঘিরে শোরগোল পড়েছে আগেও। মৃত্যুকে ছুঁয়ে ভাগ্যক্রমে ফিরে এসেছেন কেউ কেউ। -ফাইল চিত্র।
আলেক্সেই নাভালনি: পুতিনের প্রতিদ্বন্দ্বী, পুতিনের সমালোচক আলেক্সেই নাভালনির মৃত্যু ঘিরে এই মুহূর্তে শোরগোল। ২০২৩ সালে জালিয়াতি মামলায় ১৯ বছরের কারাবাস দেওয়া হয় তাঁকে। আগেও দীর্ঘ সময় জেলে কেটেছে। শুক্রবার জেলের মধ্যেই রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলেই দাবি অনুগামীদের। -ফাইল চিত্র।
ইয়েভগেনি প্রিগোজিন: ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেই বিদ্রোহ মাথাচাড়া দেয় রাশিয়ায়। বন্দুকধারীদের নিয়ে ক্রেমলিনের দিকে এগোতে থাকেন, রাশিয়ার বেসরকারি সেনা সংস্থা Wagner-এর শীর্ষস্থানীয় লেফটেন্যান্ট ইয়েভগেনি। সশস্ত্র যোদ্ধাদের নিয়ে তিনি পুতিনকে উৎখাত করে দেশের দখল নিতে চলেছেন বলে খবর আসে। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে পুতিনের সমালোচনাও করেন ইয়েভগেনি। কিন্তু হঠাৎই বদলে যায় পরিস্থিতি। সকলকে অস্ত্র সমর্পণ করার নির্দেশ দে ইয়েভগেনি। এর পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বেলারুসে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের সকলকে। বেলারুসের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে পুতিনের গোপন সন্ধি হয় বলে জানা যায়। এর পর দু’মাস পেরিয়েছিল সবে। ২০২৩ সালের অগাস্ট মাসে বিমান দুর্ঘটনায় মারা ইয়েভগেনির মৃত্যুর খবর সামনে আসে। মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ যাওয়ার পথে বিমানটিতে বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানা যায়। ইয়েভগেনির মৃত্যুতে পুতিনের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু অভিযোগ অস্বীকার করে ক্রেমলিন। -ফাইল চিত্র।
রাভিল মাগানভ: রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী সংস্থা Lukoil-এর বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন রাভিল। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে সরব হন তিনি। প্রকাশ্যেই সমালোচনা করেন পুতিনের। এর ছ’মাসের মাথায় মৃত্যু হয় তাঁর। মস্কোর সেন্ট্রাল ক্লিনিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন রাভিল। জানা যায়, হাসপাতালের ছ’তলার জানলা থেকে পড়ে মারা যান তিনি। রাভিলকে নিয়ে ২০২২ সালে অষ্টম রুশ তৈল কর্ণধারের রহস্যমৃত্যু ঘটে। -ফাইল চিত্র।
আলেকজান্ডার লিৎভিনেঙ্কো: রাশিয়ার বিদ্রোহী নেতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন আলেকজান্ডার লিৎভিনেঙ্কো। ২০০৬ সালে লন্ডনে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। জানা যায়, চা পান করেছিলেন লিৎভিনেঙ্কো, যাতে রেডিও অ্যাক্টিভ পোলোনিয়াম-২১০ মেশানো হয়েছিল।লিৎভিনেঙ্কোকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে সেবারও। রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থা KGB, পরবর্তীতে যা FSB হয়, তার এজেন্ট ছিলেন তিনি। ব্রিটেনের তদন্তকারীরা জানান, পুতিনের নির্দেশে রুশ গুপ্তচররাই খুন করেছেন লিৎভিনেঙ্কোকে। যদিও ক্রেমলিন অভিযোগ অস্বীকার করে।রাশিয়ার সাংবাদিক অ্যানা পলিৎকোভস্কায়ার মৃত্যুর তদন্ত করছিলেন লিৎভিনেঙ্কো। সংগঠিত অপরাধের সঙ্গে রাশিয়ার গুপ্তচরদের সংযোগ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। মৃত্যুর আগে লিৎভেনেঙ্কো জানান, সোভিয়েত যুগের বিষ তৈরির একটি গবেষণাগার এখনও চালিয়ে যাচ্ছে FSB. -ফাইল চিত্র।
অ্যানা পলিৎকোভস্কায়া: রুশ সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মী ছিলেন অ্যানা পলিৎকোভস্কায়া। নিজের অ্যাপার্টমেন্টের লিফ্টে খুন হন অ্যানা। বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর। অ্যানার মৃত্যু ঘিরেও রহস্য দানা বাধে। তাঁর মৃত্যুর পর পুতিন জানান, সাংবাদিক হিসেবে অ্যানার কর্মজীবন রুশ রাজনীতির জন্য একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। কিন্তু তাঁর মৃত্যুতে রাশিয়ার জন্য ক্ষতিকর। অ্যানার খুনের নেপথ্যে কার হাত ছিল, আজও ধোঁয়াশা রয়েছে সেই নিয়ে। -ফাইল চিত্র।
সেরগেই স্ক্রিপল: সেরগেই স্ক্রিপল রাশিয়ার প্রাক্তন গুপ্তচর। ২০১৮ সালে ব্রিটেনে বিষক্রিয়ার শিকার হন বলে অভিযোগ। সেরগেই এবং তাঁর কন্যা ইউলিয়া আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ক্রমাগত অবনতি হয় তাঁদের স্বাস্থ্যে। কিন্তু সেরগেই এবং ইউলিয়ার সংস্পর্শে আসা এক ব্রিটিশ মহিলার মৃত্যু হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এক পুরুষ এবং এক পুলিশ আধিকারিক। সেরগেই এবং ইউলিয়ার উপর রাসায়নিক অস্ত্র Novichok-এর প্রয়োগ হয়েছিল বলে পরে দাবি করেন তদন্তকারীরা। -ফাইল চিত্র।
পিয়োত্র ভার্জিলভ: রাশিয়ায় প্রতিবাদী সংগঠনের প্রতিষ্ঠা করেন পিয়োত্র ভার্জিলভ। ২০১৮ সালে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কোনও রকমে বার্লিন পালিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, তাঁর উপর বিষপ্রয়োগ হয়ে থাকতে পারে। পরে সেরে ওঠেন পিয়োত্র। ২০১৮ সালের গোড়ার দিকে মস্কোয় ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালীন মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন পিয়োত্র। পুলিশি নৃশংসতা নিয়ে সেখানে বেশ কয়েক জনের সঙ্গে মিলে ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। বিষক্রিয়ার নেপথ্যে ক্রেমলিনের হাত থাকতে পারে বলে দাবি ওঠে। -ফাইল চিত্র।
বরিস নেমৎসভ: ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী বরিস ইয়েরৎসিনের আমলে রুশ রাজনীতিতে জনপ্রিয়তা পান বরিস নেমৎসভ। পুতিনের সমালোচক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে ক্রেমলিন সংলগ্ন একটি সেতুর উপর দিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছিলেন বরিস। সেই সময় আততায়ীদের গুলিতে মারা যান। সেই ঘটনায় চেচনিয়া থেকে পাঁচ জন দোষী সাব্যস্ত হন। ২০ বছরের জেল হয় তাঁদের। যদি নেমৎসভের অনুগামীদের দাবি, ক্রেমলিনের নির্দেশেই খুন করা হয় বরিসকে। পরে ওই পাঁচ জনের ঘাড়ে দোষ ঠেলা হয়। -ফাইল চিত্র।
ভ্লাদিমির কারা-মুর্ৎজা: রাশিয়ার পুতিন বিরোধী রাজনীতিক ভ্লাদিমির কারা-মুর্ৎজা। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় তাঁকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয় বলে দাবি করেন তিনি। প্রথম বার কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন তিনি। ২০১৭ সালেও হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় মুর্ৎজাকে। কোমায় চলে যান তিনি। চিকিৎসকরা জানান, বিষপ্রয়োগ হয়েছে তাঁর উপর। পুলিশ তদন্তে রাজি হয়নি বলে জানান মুর্ৎজার আইনজীবী। ২০২৩ সালে দেশদ্রোহের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন মুর্ৎজা। ২৫ বছরের সাজা হয়েছে তাঁর। -ফাইল চিত্র।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -