Bhimrao Ambedkar Death Anniversary: পাশে বসতেন না সহপাঠীরা, লেখার খাতা ছুঁতেন না শিক্ষকরা, লড়াইয়ের আর এক নাম অম্বেডকর
ভারতীয় সমাজব্যবস্থার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে জাতপাতের প্রথা। ছোট্ট বয়সেই তার ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন তিনি। তাই দারিদ্র্য এবং জাতপাতের বিরুদ্ধেই লড়াই করে গিয়েছিলেন আজীবন। আজ ৬৬তম মৃত্যুবার্ষিকী স্বাধীন ভারতের সংবিধানের রূপকার বিআর অম্বেডকরের।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appমহারাষ্ট্রের তথাকথিত নিম্নবর্গীয় মাহার পরিবারে ১৮৯১ সালের ১৪ এপ্রিল জন্ম অম্বেডকরের। তৎকালীন সমাজব্যবস্থায় মাহাররা ছিলেন অস্পৃশ্য। ছোট থেকে পরিবারের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ দেখে এসেছেন।
এমনকি স্কুলে নিজেও বৈষ্যম্যমূলক আচরণের শিকার হন অম্বেডকর। ‘নিচু জাত’ বলে স্কুলে পাশে বসতেন সহপাঠীরা। একসঙ্গে বসে খেতেন না কেউ। এমনকি যে বই-খাতায় লেখা-পড়া ছিল তাঁর, তা স্পর্শ করতেন না শিক্ষকরাও।
অস্পৃশ্যতার সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা কাঁধে নিয়েই ইউনিভার্সিটি অফ বম্বের এলফিনস্টোন কলেজ থেকে স্নাতক হন অম্বেডকর। এর পর কলোম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন। লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিকস-এরও ছাত্র ছিলেন। ১৯২৩ এবং ১৯২৭ সালে ডক্টরেটও অর্জন করেন।
হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও, পরবর্তী কালে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হন অম্বেডকর। ১৯৫৬ সালে ধর্মান্তরিত হন। ভারতে পিরে ১৯৩৬ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদান করেন। জাতপাতের ভয়াবহতা নিয়ে লেখেন, ‘অ্যানহাইলিয়েশন অফ কাস্ট’ বই। স্বাধীন ভারতের সংবিধানের রূপকারও তিনিই।
জন্মসূত্রে পদবী ছিল অম্বাওয়াড়েকর। এক শিক্ষক স্কুলের রেকর্ডে তা পাল্টে অম্বেডকর করে দেন। ১৯৯০ সালে, মরণোত্তর দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘ভারত রত্ন’-এ সম্মানিত হন। আজও যুবসমাজের অনুপ্রেরণা হয়ে রয়েছেন অম্বেডকর।
আজীবন জাতপাত, অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, “মানুষ মরণশীল। একই ভাবে মরণশীল চিন্তাভাবনাও। তাই গাছ বড় হতে যেমন জলের প্রয়োজন, তেমনই প্রজ্ঞাপনের প্রয়োজন চিন্তা-ভাবনারও, নইলে দুইয়ের অবলুপ্তি আটকানো সম্ভব নয়।”
নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে সরব ছিলেন অম্বেডকর। তাঁর বক্তব্য ছিল, “নারীর উন্নয়নই সামাজিক উন্নয়নের মাপকাঠি।” “উদাসীনতাই সবচেয়ে খারাপ রোগ” বলে মত ছিল তাঁর।
স্বাধীনতা সংগ্রামী অম্বেডকর মনে করতেন, মনের স্বাধীনতাই আসল স্বাধীনতা। তিনি বলেন, “কোনও মানুষের মন যদি মুক্ত না হয়, সে ক্ষেত্রে শৃঙ্খলাবদ্ধ না হলেও, দাসত্ব না করলেও, সেই মানুষ কখনও স্বাধীন হতে পারেন না। মন মুক্ত না হলে, জেলে না থেকেও সেই ব্যক্তি আসেল বন্দি। যে ব্যক্তির মন মুক্ত নয়, মারা না গিয়েও মৃতের সমান তিনি। মুক্ত মনই অস্তিত্বের প্রমাণ।”
জাতপাত, অস্পৃশ্যতা নিয়ে অম্বেডকরের বক্তব্য ছিল, “জাতপাত ইঁট-কাঠ-পাথরের দেওয়াল বা কাঁটাতারের মতো ভৌত নয়, যা হিন্দুদের সহাবস্থানের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাই সেই দেওয়াল সহজে ভেঙে ফেলা সম্ভব নয়। জাতপাত হল একটা ভাবনা, মানসিক অবস্থা।”
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -