Roshanara Lake Rejuvenation: শাহজাহান-কন্যার তৈরি, বাঁচিয়ে তোলা হচ্ছে দিল্লির রোশনারা ঝিল
কংক্রিটের শহরের বুকে একচিলতে সবুজ। তার মাঝে আবার চারকোনা ঝিল। একসময় প্রকৃতি প্রেমীদের হটস্পট ছিল দিল্লির রোশনারা বাগ। শীতের সময় পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা, ঝিলের টলটলে জলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দলে দলে ভিড় জমাতেন মানুষ।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appকিন্তু সময়ের প্রলেপে সেসব এখন অতীত। গাছগাছালি টিকে থাকলেও, ঝিলের অস্তিত্ব নেই। শক্ত মাটির চড়া জেগ উঠেছে। রাজধানী দিল্লির বুকে রোশনারা বাগের এই ঝিলই বাঁচিয়ে তোলার উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
উত্তর দিল্লির শক্তিনগর এলাকায় অবস্থিত মুঘল আমলে তৈরি রোশনার বাগ। তার মধ্যে অবস্থিত এই ঝিল প্রায় সাড়ে তিন একর বিস্তৃত। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দিল্লি সরকার তার মাঝের মরে যাওয়া ঝিলটিকে বাঁচিয়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে।
কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির সরকার জানিয়েছে, ঝিলটির খনন শুরু হয়েছে। তাতে প্রতিদিন ২২ লক্ষ ৫০ হাজার লিটার জল ব্যবহার করা হবে। দিল্লির জল বোর্ড গোটা বিষটির দায়িত্বে রয়েছে। পাল্টানো হবে সেখানে অবস্থিত ১৬টি টিউবওয়েল। রক্ষা করা হবে ভূগর্ভস্থ জলের জোগান।
দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয়কুমার সাক্সেনা পৌরসভাকে সেই মতো নির্দেশ দিয়েছেন, রোশনারা বাগের মোট সাড়ে একর এলাকাকে বিশ্বমানের নার্সারি হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। ৪ মিটার গভীর করা হবে ঝিলটিকে।
শুধুমাত্র বৃষ্টির জলের ভরসায় থেকে ঝিল ভরানো সম্ভব নয়। তাই বৃষ্টিপ্রবণ এবং অল্প বৃষ্টিতেই যে সমস্ত এলাকায় জল জমে যায়, সেখান থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল ঝিলে এনে ফেলার পরিকল্পনা রয়েছে।
মুঘল সম্রাট শাহজাহানের কন্যা রোশনারা বেগমের হাতে তৈরি রোশনারা বাগ। দিল্লিবাসীর জন্য উপহারস্বরূপ ওই ঝিল এবং তাকে ঘিরে থাকা গাছগাছালিতে ভরা উদ্যান তৈরি করান তিনি।
রোশনারা বাগে দেশ-বিদেশের বহু বিরল প্রজাতির গাছও রয়েছে। এমনকি জাপান থেকেও চারা এনে রোপণ করা হয়। ঝিলের আশাপাশে আজও পরিযায়ী পাখিদের সমাগম ঘটে। পক্ষীপ্রেমীরা তাই সেখানে ছুটে যান।
শাহজাহানের দ্বিতীয় কন্যা রোশনারা বেগম। ময়ূর সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে যখন দ্বন্দ্ব চরমে, সেই সময় চিঠি লিখে ঔরঙ্গজেবকে দিল্লিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনিই। কিন্তু গুপ্তচর মারফত জানতে পারেন, ঔরঙ্গজেবকে বন্দি করে খুনে পরিকল্পনা রয়েছে শাহজানের। ফলে চর পাঠিয়ে ঔরঙ্গজেবকে সতর্ক করে দেন তিনি। দিল্লি থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন।
তার পরের ইতিহাস সকলেরই জানা। তবে আজীবন রোশনারার কাছে কৃতজ্ঞ ছিলেন ঔরঙ্গজেব। ঔরঙ্গজেবের দরবারে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল রোশনারার। তবে রোশনারার জীবনযাপন, তাঁর একাধিক পুরুষসঙ্গী এবং সর্বোপরি তাঁকে টপকে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়ে পরবর্তীকালে অসন্তুষ্ট হন ঔরঙ্গজেব। সব পদ থেকে রোশনারাকে সরিয়ে দেন তিনি। ১৬৭১ সালে মৃত্যু হয় রোশনারার। রোশনারা বাগেই তাঁর সমাধি রয়েছে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -