এক্সপ্লোর
Masood Azhar: স্কুল ছেড়ে মাদ্রাসা যাওয়াই কি কাল হয়? সাধারণ হেডমাস্টারের ছেলে থেকে সন্ত্রাসের কারবারি, মাসুদের সেকাল ও একাল
Masood Azhar Profile: অল্পবয়সেই ছিটকে যাওয়া। এখন পৃথিবীর সর্বত্র কুখ্যাতি। চিনে নিন মাসুদ আজহারকে। ছবি: Freepik, ফাইল চিত্র।
-ফাইল চিত্র।
1/15

গত ২২ জানুয়ারী কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সেনা অভিযান চালায় ভারত। সেখানে মাসুদের সংগঠনে ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ভারতের স্ট্রাইকে মারা যান মাসুদের দিদি ও জামাইবাবু, তাঁদের পরিবার। মারা গিয়েছে মাসুদের ভাই রউফও। কিন্তু কোনও আফশোস, হতাশা নেই বলে বিবৃতি দিয়েছে মাসুদ।
2/15

১৯৬৮ সালের ১০ জুলাই পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের বাহওয়ালপুরে জন্ম মাসুদের। ১১ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সেজো। মাসুদের বাবা আল্লা বখশ শাব্বির ছিলেন সরকারি স্কুলের হেডমাস্টার। পাশাপাশি, মৌলানার ভূমিকাও পালন করতেন। তাঁর পরিবারের ডেয়ারি এবং পোলট্রি ব্যবসা ছিল।অষ্টম শ্রেণিতেই মূলধারার শিক্ষাপর্ব সাঙ্গ হয় মাসুদের। এর পর জামিয়া উলুম ইসলামিক মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। ১৯৮৯ সালে সেখান থেকে আলিম হিসেবে স্নাতক হয় এবং সেখানেই শিক্ষাদানের জন্য নিযুক্ত হয়।
3/15

অষ্টম শ্রেণিতেই মূলধারার শিক্ষাপর্ব সাঙ্গ হয় মাসুদের। এর পর জামিয়া উলুম ইসলামিক মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। ১৯৮৯ সালে সেখান থেকে আলিম হিসেবে স্নাতক হয় এবং সেখানেই শিক্ষাদানের জন্য নিযুক্ত হয়।
4/15

ওই মাদ্রাসাতেই হরকত-উল-আনসার জিহাদি সংগঠনের সংস্পর্শে আসে মাসুদ। সেই সূত্রেই জাম্বিয়া, আবু ধাবি, সৌদি আরব, মঙ্গোলিয়া, ব্রিটেন, আলবেনিয়া, নাইরোবি এবং কেনিয়া গমন। আল-কায়দার সহযোগী সংগঠন আল-ইতিহাদ আল-ইসলামিয়ার নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। ওই সংগঠন লোক এবং টাকা চায় মাসুদের কাছে হরকত-উল-মুজাহিদিনের জন্য। পাশাপাশি, ইয়েমেনের সশস্ত্র যোদ্ধাদের সোমালিয়া নিয়ে যেতেও সাহায্য় করে।
5/15

১৯৯৩ সালে ব্রিটেনে একটি সভায় বক্তৃতা করতে এবং টাকা তুলতে যায় মাসুদ। সেখানে ব্রিচেনের ঐতিহ্যশালী ইসলামি সংগঠনে জিহাদের বার্তা দেয় সে। দারুল উলুম বারি সেমিনারি, জাকারিয়া মসজিদ, মদিনা মসজিদ, জামিয়া মসজিদে বার্তা পাঠায়। ব্রিটেনেই সন্ত্রাসী পরিকল্পনার যাবতীয় রসদ হাতে পায় মাসুদ। ২০০৬ সালে 7/7, 21/7 কামান, বোমা বানানোর তরল উপাদান ব্রিটেন থেকে বিমানে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। হরকত-এ যুক্ত থাকার সময় খাটো উচ্চতার জন্য জিহাদি প্রশিক্ষণের পরীক্ষায় উতরোতে পারেনি মাসুদ। তাই সংগঠনের পত্রিকা ‘ভয়েস অফ দ্য় মুজাহিদে’ লেখার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। পত্রিকার জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে তারও পদোন্নতি হয়।
6/15

১৯৯৪ সালেই ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়ে ভারতের শ্রীনগরে ঢোকে মাসুদ। সেই সময় হরকত-উল-জিহাদের বিভিন্ন শাখার মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল, যা নিষ্পত্তির দায়িত্ব পায় সে। সে বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত তাকে গ্রেফতার করে। সেই সময় মাসুদের বক্তব্য ছিল, ‘ইসলামের সৈনিকরা পৃথিবীর ১২টি দেশ থেকে কাশ্মীরকে মুক্ত করতে এসেছে। কার্বাইের জবাব লকেট লঞ্চারের মাধ্যমে দেব আমরা।’ শ্রীনগর জেল, দিল্লির তিহাড় জেল এবং জম্মুর কোট বলওয়াল জেলে বন্দি ছিল সে। জম্মুর জেল থেকে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালাকেও উদ্যত হয় মাসুদ। কিন্তু ধরা পড়ে যায় সে। মারা যায় তার সহযোগী।
7/15

১৯৯৫ সালের জুলাই মাসে কাশ্মীরে ছয় বিদেশি পর্যটককে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা মাসুদের মুক্তি দাবি করে। একবন্দি তাদের হাত ছাড়িয়ে পালাতে সফল হন, একজনের শিরচ্ছেদ করা হয়, বাকিদের কোনও খোঁজই মেলেনি। আমেরিকার FBI মাসুদকে জেরাও করে একাধিক বার। কিন্তু অপহরণকাণ্ডের সুরাহা হয়নি।
8/15

১৯৯৯ সালের ডিসেম্বর মাসে নেপাল থেকে দিল্লিগামী Indian Airlines Flight 814 বিমানটিকে হাইজ্যাক করা হয়। তালিবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের কান্দাহারে নামানো হয় বিমানটিকে। সেই সময় তালিবানকে সমর্থন করছিল পাকিস্তানের ISI.
9/15

পাঁচ ছিনতাইকারী-সহ সেই সময় বিমানে ১৯০ জন সওয়ার ছিলেন। ছিনতাইকারীদের নেতৃত্ব দিয়েছিল মাসুদের ভাই ইব্রাহিম আতাহার। বিমান ছিনতাইয়ের চক্রান্ত করে আর এক ভাই আব্দুল রউফ আসগর। যাত্রীদের প্রাণের বিনিময়ে, জঙ্গিদের দাবি মেনে মাসুদকে সেই সময় ছেড়ে দেওয়া হয়। কান্দাহার থেকে সটান পাকিস্তান চলে যায় মাসুদরা। কান্দাহারে মাসুদের নামে কোনও মামলা না থাকায় তাকে দেশে ফিরতে অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানায় পাকিস্তান সরকারও।
10/15

দেশে ফিরেই করাচিতে ১০ হাজার মানুষের জনসভায় বক্তৃতা করে মাসুদ। সে বলে, “আজ এখানে নিজের দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। বলতে এসেছি, ভারতকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত মুসলিমদের শান্তিতে বসে থাকা উচিত নয়। কাশ্মীরকে ভারতের হাত থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি নিচ্ছে।”
11/15

মাসুদ যখন জইশ-ই-মহম্মদের সূচনার সিদ্ধান্ত নেয়, সেই সময় তাকে পাকিস্তানের ISI সমর্থন জোগায় বলে জানা যায়। আফগানিস্তানের তদানীন্তন তালিবান, ওসামা বিন লাদেন এবং অন্য সংগঠনগুলির সমর্থনও মেলে। পারিবারিক ব্যবসার মতোই জইশ-কে চালায় মাসুদের পরিবার।
12/15

২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতীয় সংসদভবনে হামলা চালায় জইশ। লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে মিলে হামলা চালানো হয়, যা ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। ওই হামলায় পাঁচ জঙ্গি মারা যায়, মারা যান দিল্লি পুলিশের ছয় কর্মী, সংসদভবনের দুই নিরাপত্তারক্ষী। ওই হামলার পর এক বছরের জন্য মাসুদকে আটক করে রাখে পাকিস্তান সরকার। ভারত এবং আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে পড়ে যাও বা আটক করা হয়, ২০০২ সালের ১৪ ডিসেম্বর লাহৌর কোর্ট গৃহবন্দি অবস্থা থেকে মুক্ত করে মাসুদকে। তার পর আর কখনও মাসুদকে গ্রেফতার করা হয়নি।
13/15

২০০৮ সালের ২৬/১১ মুম্বই হামলার জন্য মাসুদকে দায়ী করা হয়। সে বছর ডিসেম্বর মাসে মাসুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি শোনা যায়। কিন্তু পাকিস্তান সরকার জানায়, মাসুদকে গ্রেফতার করা হয়নি, সে কোথায় আছে তা জানা নেই তাদের। দু’বছর অজ্ঞাতবাসে থাকার র ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি মুজফ্ফরাবাদের সভায় ফের কাশ্মীরে জিহাদের ঘোষণা করে মাসুদ। সেবছর মার্চ মাসে জইশ জানায়, ভারতের শ্রীনগরে রয়েছে মাসুদ।
14/15

২০১৬ সালে পাঠানকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে হামলা চালায় জইশ, যার মূলচক্রী ছিল মাসুদ ও তার ভাই। হামলার সময় ফোনে জঙ্গিদের সঙ্গে কথাও হচ্ছিল তাদের।
15/15

২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় CRPF কনভয়ে হামলা চালায় জইশ। মারা যান ৪৪ জন জওয়ান। পাকিস্তানের সেনা হাসপাতাল থেকে বসে হামলায় মাসুদই অনুমোদন দেয়। ওই হামলার পর মাসুদকে জঙ্গি ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রস্তাব জমা দেয় ফ্রান্স, ব্রিটেন, আমেরিকা।মাসুদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণার পথে সেই সময় বাধা দেয় চিন। শেষ পর্যন্ত চিন ভেটো তুলে নিলে, ২০১৯ সালের মে মাসে মাসুদ আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষিত হয়।
Published at : 08 May 2025 07:05 PM (IST)
আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement






















