শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যান বা নিজের দল গড়ুন, লাভ পদ্ম শিবিরের, মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের মতে, শুভেন্দু যদি বিজেপিতে যান, তাহলে গেরুয়া ব্রিগেডেরই লাভ! আর তিনি যদি আলাদা দল গড়েন, তাহলেও লাভ বিজেপিরই। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক জাদ মেহমুদ বলছেন, ‘এই ধরনের পরিস্থিতি আগে ফেস করেননি মমতা, ব্যক্তিকেন্দ্রিক দলে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। শুভেন্দু যদি বিজেপিতে যান, বিজেপির লাভ। যদি আলাদা লড়েন, তাতেও বিজেপির লাভ। যখন ইন্দিরা মারা গিয়েছিলেন, তখন রাজীব প্রধানমন্ত্রী হন, তখন প্রণব একই কাজ করেছিলেন, যেমন করেছেন শুভেন্দু।’ প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘শুভেন্দু যদি নিজে দল গড়েন, সেক্ষেত্রে বিজেপিরই লাভ। যদি শুভেন্দু দল গড়ে, বিজেপি ভাল জায়গায় আছে, তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। শুভেন্দু ভোট কাটবে তৃণমূলের, ত্রিশঙ্কু বিধানসভা তৈরি হলে শুভেন্দু ডিসাইডিং ফ্যাক্টর হতে পারেন।’আবার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ঈশানী নস্কর বলছেন, ‘এখনই বিজেপির লাভ বলা যাচ্ছে না, সাদা-কালো রাজনীতি করলে চলবে না, তৃণমূলের ক্ষতি তো হবেই।’
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appশুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। সূত্রের দাবি, সৌগত রায়কে পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়। তাহলে এবার তিনি কী করবেন? বিজেপিতে যাবেন? না অন্য দল তৈরি করবেন? সেই প্রশ্ন ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।
এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, শুভেন্দু শেষ অবধি করবেন টা কী? বিজেপিতে যাবেন? নিজের দল তৈরি করবেন? না কি অন্য বিকল্প? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, মঙ্গলবার রাতে শুভেন্দু-অভিষেক-পিকের বৈঠকের পর যখন তৃণমূল দাবি করেছিল, সব মিটে গেছে তখনও কিন্তু রাজ্য বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কৈলাস বিজয়বর্গীয়র গলার ছিল আত্মবিশ্বাসের সুর। বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় না শুভেন্দু মাথা নত করবে।’ আর বুধবার আচমকাই নাটকীয় পরিবর্তনের পর, যখন শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব আরও বাড়ার জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখনও কৈলাস বলছেন, এটাই তো হওয়ার ছিল।
শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকের পর তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন, 'ভালো বৈঠক হয়েছে। সব মিটে গিয়েছে। আমি প্রথম থেকেই বলেছিলাম, কথা বললেই এই সমস্যা মিটে যাবে।’ যদিও বুধবার দুপুরে সৌগত বলেছেন, ‘যা বলেছি সত্যনিষ্ঠ বলেছি। শুভেন্দু মত বদলালে সেটা তার বিষয়।’ খাতায় কলমে সৌগত-শুভেন্দু এখনও এক দলে, কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, সব কিছু আর আগের মতো স্বাভাবিক নেই।
সূত্রের খবর রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করবেন শুভেন্দু অধিকারী। সেদিনই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন তিনি। এদিকে এরই মধ্যে ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ককে নিয়েও অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূল শিবিরে। বুধবার ফেসবুকে গেরুয়া টেমপ্লেটে শীলভদ্র দত্তের এই লেখা ঘিরে জল্পনা আরও মাথাচাড়া দেয়! শীলভদ্র লেখেন,‘বন্ধু দেখা হবে।’কীসের ইঙ্গিত দিলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক? ধোঁয়াশা বজায় রেখে শীলভদ্র দত্তর প্রতিক্রিয়া, পুরনো বন্ধুদের উদ্দেশ্যেই তিনি একথা লিখেছেন। তাছাড়া ভারতের জাতীয় পতাকার রং-ও তো গেরুয়া। সবমিলিয়ে একুশের হাইভোল্টেজ যুদ্ধের আগে পরতে পরতে নাটক।
যদিও সৌগতকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি মুকুল রায়। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি বলেছেন, 'সৌগতদার বয়স হয়েছে। কাল কী হয়েছে বুঝতে ভুল করেছেন।' সেই সঙ্গে মুকুল বলেছেন, 'শুভেন্দু জন আন্দোলনের ফসল। ও দলে এলে স্বাগত। এত হইচইয়ের কী আছে?'
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -