Suryakumar Yadav: থাই প্যাড ছাড়াই ডাকাবুকো ব্যাটিং, মন জিতে নিয়েছেন সূর্য
তাঁকে বলা হচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের নতুন মিস্টার থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 World Cup) ভারতের গেমচেঞ্জার হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন। অথচ বছর দুয়েক আগেও ছবিটা ছিল আলাদা।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appজাতীয় দলে সুযোগ না পেয়ে মুষড়ে পড়েছিলেন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। সেই সঙ্গে নিয়েছিলেন নতুন শপথ। জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের অঙ্গীকার।
যে অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর স্ট্রোকের ফুলঝুরি দেখে ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছে, সেই দেশেই সফরকারী ভারতীয় দলে ডাক না পেয়ে বিরাট ধাক্কা খেয়েছিলেন মুম্বইয়ের তারকা।
রবিবার জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে তাঁর ম্যাচ জেতানো ইনিংসের রেশ এখনও মোহিত করে রেখেছে ক্রিকেটবিশ্বকে। তার মাঝেই লড়াইয়ের দিনগুলি মনে পড়ে যাচ্ছে সুফিয়ান শেখের। যিনি মুম্বই দলে সূর্যর দীর্ঘদিনের সতীর্থ। অনূর্ধ্ব ১৩ দল থেকে একসঙ্গে খেলছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে বহু টুর্নামেন্টে ছিলেন সূর্যর রুমমেট।
সোমবার মুম্বই থেকে ফোনে উইকেটকিপার-ব্যাটার সুফিয়ান এবিপি লাইভকে বলছিলেন, '২০২০ সালের ঘটনা। তখন করোনা অতিমারীতে গোটা বিশ্ব জবুথবু। তারই মাঝে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিল ভারত। সেই সফরে ভারতের সীমিত ওভারের দলে সুযোগ পায়নি সূর্য। সেটা ছিল ওর কাছে বিরাট ধাক্কা। কিন্তু ও অন্য ধাতুতে গড়া। হাল ছাড়ার পাত্র নয়। যার পরিচয় পেয়ে চমকে উঠেছিলাম আমি।'
কীভাবে? সূর্যর দীর্ঘদিনের সতীর্থ বলছেন, 'আমাদের সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির খেলা ছিল। সূর্যই মুম্বই দলের অধিনায়ক। আমরা তাজ ট্রাইডেন্টে হোটেলে ছিলাম। কোয়ারেন্টিনের কড়াকড়ি। জৈব সুরক্ষা বলয়ে এক সপ্তাহ কেউ কারও ঘর ছেড়ে বেরতে পারিনি। সাতদিন কাটার পর ওর ঘরে গিয়েই চমকে উঠেছিলাম। দেখি, সারা ঘরে লেখা 'ইন্ডিয়া'। কাগজে লিখে জানলায়, দরজায়, বিছানায়, এমনকী ওয়াশরুমের আয়নায়, টিভিতে সর্বত্র আঠা দিয়ে আটকে রেখেছিল। আমি যেতেই বলল, দ্যাখ, আমি ছাড়ব না। জাতীয় দলে ফিরবই।'
সুফিয়ান যোগ করলেন, 'ও লড়াইটা সেই হোটেলের ঘর থেকেই শুরু করে দিয়েছিল। করোনার আতঙ্কে আমাদের জিমে যাওয়াও বন্ধ ছিল। সূর্য মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে বলে হোটেলের ঘরেই নিজের জন্য জিম করে নিয়েছিল। ও বিশেষ ফিটনেস ডায়েট মেনে চলে। অনেক ক্রিকেটারই এত কঠোর ডায়েট মেনে চলতে পারবে না। ২০ দিনের খাবার সঙ্গে নিয়ে এসেছিল সূর্য। প্রোটিন শেক থেকে শুরু করে সবরকম খাবার এনেছিল। নিজের রান্না নিজেই করত। বাইরে থেকে কিছু আনতে পারতাম না। কিন্তু তাতেও দমেনি ও। সেই জেদের প্রতিফলন আজ বাইশ গজে দেখা যাচ্ছে।'
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 World Cup) ভারতের ম্যাচ উইনার হিসাবে হাজির হয়েছেন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। যদিও একটা সময় তাঁকে পেরতে হয়েছে অনেক প্রতিকূলতা। এমনকী, শৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন মুম্বইয়ের তারকা। 'স্কাই'-এর অজানা সেই কাহিনি শোনালেন মুম্বই রাজ্য দলে তাঁর দীর্ঘদিনের সতীর্থ ও বন্ধু সুফিয়ান শেখ (Sufiyan Shaikh)।
পেসারদের বলেও সাবলীলভাবে স্কুপ মারেন। রবিবার মেলবোর্নে সূর্যর দাপট দেখেননি বন্ধু। সুফিয়ান বলছেন, 'আমার ম্যাচ ছিল। ম্যাচের সরাসরি সম্প্রচার দেখতে পাইনি। পরে রিপ্লে দেখি। আমি ওর সেই শট দেখিনি। তবে সবার মুখে আলোচনা শুনে ওকে হোয়াটসঅ্যাপে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কী শট মেরেছিস ভাই, হৈ চৈ পড়ে গিয়েছে যে! শট খেলার সময় ওর মাথা সরে না। ওর মাথা সব সময় দৃঢ় থাকে। তাই এত নিখুঁতভাবে শটটা খেলতে পারে।'
সুফিয়ান শোনালেন আরও এক অত্যাশ্চর্য গল্প। বললেন, 'লক্ষ্য করে দেখবেন, ও থাই প্যাড পরে না। ঘণ্টায় ১৪৫-১৫০ কিলোমিটার গতির বল খেলে থাই প্যাড না পড়ে। আমি বলতাম, আঘাত লেগে যাবে তো। ও বলত, যাতে লাগে সেই জন্যই থাই প্যাড পরে না! আশ্চর্য আত্মবিশ্বাস। আসলে শরীরের কাছাকাছি বল এলে খেলে। বলে, শরীরে লাগলে লাগুক না। তবে ও চোট পায় না। ঠিক ব্যাটে করে মেরে দেয়। ওর খেলার ধরনই তাই। দশবারের মধ্যে ৯ বার ওইরকম বলে মারবে।'
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -