ODI World Cup: সেমিফাইনালের স্বপ্ন আঁকড়ে ইডেনে বিশেষ প্রস্তুতি বাবরদের, ম্যাড-ম্যাক্স ঝড় উচ্ছ্বাস
অফস্টাম্পের ওপর বসানো জলের একটি বোতল। বোলিং কোচ দলের পেসারদের ডেকে বলে দিলেন, এমনভাবে বল করো, যাতে ওই বোতলেই আছড়ে পড়ে বল। টানা বল করে যাও করিডর অফ আনসার্টেনটি-তে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appঅনিশ্চয়তার করিডর। ক্রিকেটের বিখ্যাত টার্ম। যার অর্থ, অফস্টাম্পের ওপর এমন একটা জায়গায় বোলিং করো, যাতে ব্যাটসম্যান ধন্দে পড়ে যাবে, কীভাবে খেলা উচিত। সামনের পায়ে। নাকি ব্যাকফুটে। আর সেই দ্বিধার সুযোগ নিয়ে বোলার আক্রমণ শানাবে। ব্যাটসম্যান আচমকা উবলব্ধি করবে যে, হয় বল তার স্টাম্প ভেঙে দিয়েছে। অথবা ব্যাটের কানায় লেগে বল জমা পড়েছে উইকেটকিপার বা স্লিপ কর্ডনের হাতে। একটা সময় অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি গ্লেন ম্যাকগ্রা ঘণ্টার পর ঘণ্টা করিডর অফ আনসার্টেনটি-তে বল করে যেতে পারতেন।
শুরুতেই যে বোলিং ড্রিলের কথা লেখা হল, তা বুধবার দেখা গেল ইডেন গার্ডেন্সে। নির্দেশ দিলেন মর্নি মর্কেল। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন পেসার এখন পাকিস্তানের (Pakistan Cricket Team) বোলিং কোচ। আর তাঁর নির্দেশ মেনে টানা অফস্টাম্প লাইনে বোলিং করে গেলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি, হ্যারিস রউফ, হাসান আলি, মহম্মদ ওয়াসিমরা।
শনিবার ক্রিকেটের নন্দনকাননে বিশ্বকাপে (ODI World Cup) বাঁচার লড়াই পাকিস্তানের। প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। যারা গতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তবে এবার করুণ পরিণতি কাপ ধরে রাখার স্বপ্নের। অনেক আগেই সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছেন জস বাটলাররা। তবে ইংল্যান্ড শিবির এখন মরিয়া পয়েন্ট টেবিলের প্রথম সাতের মধ্যে থেকে শেষ করতে। যাতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যোগ্যতা অর্জন করা যায়। বুধবার পুণেতে নেদারল্যান্ডসকে উড়িয়ে বৃহস্পতিবারই কলকাতায় পৌঁছে যাচ্ছে ইংরেজ ব্রিগেড।
সেমিফাইনালে উঠতে হলে শনিবার ইডেনে ইংল্যান্ডকে হারাতেই হবে বাবর আজ়মদের। সেই ম্যাচের ৬ দিন আগে কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছে পাকিস্তান দল। এখানকার আবহাওয়া ও পরিবেশ, পরিস্থিতির সঙ্গে সড়গড় হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। প্রথম আড়াই দিন বিশ্রামেই কেটেছে পাক ক্রিকেটারদের। নেট অনুশীলন হয়নি। শুধু জিম ও পুল সেশন ছিল ক্রিকেটারদের। বাবর আজ়মদের দেখা গিয়েছে কখনও গলফ কোর্সে, কখনও শপিং মল বা মাল্টিপ্লেক্সে।
তবে বুধবার থেকে ইডেনে প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে পাক দল। আর সেখানে বিশেষ প্রস্তুতি নিতে দেখা গিয়েছে পেসারদের। পাকিস্তানের পেসাররা প্রতিপক্ষের ওপর চাপ তৈরি করছেন। তবে মাঝে মধ্যেই এলোমেলো বোলিং করে ফেলছেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যাতে নিশানায় অভ্রান্ত থাকেন শাহিন, হ্যারিস, ওয়াসিমরা, নিশ্চিত করতে চাইছেন বোলিং গুরু মর্কেল। তাই অভিনব প্রস্তুতি।
মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম। স্বপ্নের ওয়াংখেড়ে। ভারতের বিশ্বকাপ (ODI World Cup) জয়ের ওয়াংখেড়ে। আর সেই স্টেডিয়াম পাকিস্তানের (Pakistan Cricket Team) সেমিফাইনাল স্বপ্নকেও যেন বাঁচিয়ে দিয়ে গেল।
কীভাবে? ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রায় হারা ম্যাচ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। আর সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে অবিশ্বাস্যভাবে ম্য়াচ জিতিয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তাঁর ১২৮ বলে অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংস নিয়ে ক্রিকেটবিশ্বে রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। আর ম্যাক্সওয়েলের সেই রূপকথা অক্সিজেন জুগিয়েছে পাক শিবিরকে।
আফগানিস্তান যদি মুম্বইয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিত, তাহলে ১০ পয়েন্ট হয়ে যেত হাশমাতুল্লাহ হাশিদিদের। পয়েন্টে নিউজ়িল্যান্ড ও পাকিস্তানকে ছাপিয়ে যেত তারা। সেমিফাইনালের দৌড়েও এগিয়ে যেতেন আফগানরা। তবে ম্যাড-ম্যাক্স ঝড়ে সেই সম্ভাবনা উড়ে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে সেমিফাইনালের দৌড়ে বাঁচিয়ে রেখেছিল পাকিস্তানকে।
যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত পাক শিবিরও। বুধবার ইডেন গার্ডেন্সে প্র্যাক্টিসের পর পাকিস্তানের লেগস্পিনার উসামা মীর বলেন, 'অস্ট্রেলিয়ার জয় আমাদের সামনে সেমিফাইনালের রাস্তা ফের খুলে দিয়েছে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অবিশ্বাস্য ব্যাটিং নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে আমাদের শিবিরে। ভীষণ ইতিবাচক থাকছি আমরা। শেষ ম্যাচে জয় ছাড়া কিছু ভাবছি না।' ছবি - পিটিআই
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -