সাইক্লোন উমপুন: কোন জেলায় প্রভাব কেমন, দেখুন
ঘূর্ণিঝড় উমপুনের জের। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ভাগিরথী ও অজয় নদে সমস্ত ফেরি চলাচল বন্ধ। কাটোয়া-বল্লভপাড়া, কাটোয়া-শাঁখাই, দাঁইহাট-মাটিয়ারি ফেরিঘাট সহ কাটোয়া মহকুমার ৯টি ফেরিঘাট পুরোপুরি বন্ধ। প্রতিটি ঘাটে চলছে পুলিশি নজরদারি। কাটোয়া পুরসভায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
বীরভূমে সকাল থেকে বৃষ্টি। সঙ্গে দমকা হাওয়া। সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় দোকানপাট খোলা থাকলেও, মানুষজনের দেখা মেলেনি।
ঘূর্ণিঝড় উমপুনে সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা সুন্দরবনে। রাজ্য সরকারের তরফে বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছেছেন মন্ত্রী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির দেউলবাড়ি-দেবীপুর এলাকায় জলের তোড়ে ভাঙল মাতলা নদীর বাঁধ। নদীর ধার থেকে আগেই সরানো হয় আশপাশের গ্রামের হাজারখানেক বাসিন্দাকে। সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় গবাদি পশুদের। সকালে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেন। বাঁধ সারানোর কাজে প্রশাসনের সঙ্গে হাত লাগান স্থানীয়রাও।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালি, কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জে সকাল থেকে টানা বৃষ্টি। গতকাল রাতেও বৃষ্টি হয়েছে। প্রবল বেগে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। দোকানপাট খোলেনি। রাস্তাও ফাঁকা।
উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে রাত থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। সকাল থেকেই বইতে শুরু করেছে ঝোড়ো হাওয়া। ফেরি চলাচল বন্ধ। ইছামতী নদীতে জলোচ্ছ্বাস। এলাকায় দোকানপাট খোলেনি। রাস্তা শুনশান।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঝড়খালির বিরিঞ্চিবাড়ি এলাকায় নদী বাঁধে ভাঙনের আশঙ্কা।আতঙ্কিত ঝড়খালি ও বাসন্তীর বাসিন্দারা। নদী বাঁধ নির্মাণের কাজে প্রশাসনের সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আয়লা বা বুলবুলের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় উমপুন। ঘূর্ণিঝড়ের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়বে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে।
পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি পুরসভা এলাকায় মাটির ও ভগ্নপ্রায় বাড়ি থেকে সরানো হয় বাসিন্দাদের। নিয়ে যাওয়া হয় সরকারি স্কুলগুলিতে। থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে কাঁথি পুরসভা।
পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় উমপুনের প্রভাব। সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি। হলদি নদীর জলস্তর বাড়ছে। নদীর ওপারে নয়াচর থেকে প্রায় এগারোশো মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের। এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। হলদিয়া পুরসভার পক্ষ থেকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে। হলদিয়া বন্দরের ১২টি বার্থে কাজ বন্ধ। শিল্প সংস্থাগুলির গ্যাস নিগর্মন ব্যবস্থা সহ নিরাপত্তার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দিঘার সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস। গার্ডওয়াল টপকে রাস্তায় চলে এসেছে জল। গড়িয়ে আসে বোল্ডার। রাত থেকেই শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। সঙ্গে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া। জলমগ্ন সৈকত লাগোয়া রাস্তা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর প্রশাসন।