কলকাতা : দীপান্বিতা অমাবস্যার আগের দিন চতুর্দশী ( Bhut Chaturdashi )। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের এই দিনটি ভূত চতুর্দশী বা নরক চতুর্দশী ( Narak Chaturdashi ) হিসেবে পালিত হয় বাংলার ঘরে ঘরে। কথিত আছে, কার্তিক মাসের এই তিথিতেই নরকাসুরকে বধ করেন শ্রীকৃষ্ণ। বিশ্বাস, নরকাসুররূপী রাজা বলি কালীপুজোর ( Kali puja 2023 ) আগের দিন ভূত চতুর্দশীর তিথিতে অসংখ্য অনুচর-সহ ভূত, প্রেত নিয়ে মর্ত্যে নেমে আসেন পুজো নিতে। সেই থেকে নাম নরক চতুর্দশী। মানুষের বিশ্বাস, এই তিথিতেই প্রেতাত্মা বা ভূতের দল নেমে আসে পৃথিবীতে। তাই এই দিনটিকে বলা হয় ভূত চতুর্দশীও। রীতি অনুসারে, ঘরের মধ্যে জ্বালানো হয় ১৪টি মাটির প্রদীপ। খাওয়া হয় ১৪ রকমের শাক।
এই ১৪ শাকের মধ্যে কী কী আছে। এদিন কোন কোন শাক খাবেন - ওল, ভাটপাতা, কেঁউ, শৌলফ, শাঞ্চে, কালকাসুন্দে, পলতা, বেতো, সরষে, নিম, গুলঞ্চ, শুষণী, হিলঞ্চ বা হিঞ্চে, জয়ন্তী। ভূত চতুর্দশীতে এই ১৪ রকম শাক খাওয়ার পিছনে আছে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও , মনে করেন অনেকে।
চোদ্দ শাক নিয়ে নানারকম বিশ্বাস। লোকমুখ প্রচলিত,শ্রী কৃষ্ণ কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে নরকাসুরকে বধ করেন । তাই এই দিনটিকে পালন করা হয় সবকিছু ১৪ রকম জিনিস দিয়ে। তাই একে'নরক চতুর্দশী'ও বলে । সাধারণের বিশ্বাস ভূতপ্রেতদের দূরে রাখতেই এদিন ১৪ শাক খেয়ে, ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং ১৪ ফোঁটা দিয়ে এই উৎসব পালন করা হয়।
কারও কারও বিশ্বাস, পূর্বপুরুষেরা ওই দিন পরলোক থেকে ইহলোকে নেমে আসেন। তাঁরা দেখতে আসেন, তাঁদের ছেড়ে যাওয়া পরিবার, বাড়ি, দোর দালান। তাঁদের দিশা দিতে ও আলো দেখিয়ে ফিরিয়ে দিতেই ১৪ প্রদীপ জ্বালার প্রথা। বৈজ্ঞানিক মতে, ঋতু পরিবর্তনের জন্য এই সময় নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ করে থাকে। ১৪ শাক খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। আবার হেমন্তের শুরুতে নানারকম পোকার উপদ্রব হয়। তা থেকে রক্ষা পেতেই শাক খাওয়া জরুরি।
কীভাবে রান্না করবেন চোদ্দ শাক
কালোজিরে, কাঁচালঙ্কা, রসুন, শুকনো লঙ্কা,পাঁচফোড়ন যেমন খুশি ফোড়ন দিয়ে শাক ভাজতে পারেন৷ পছন্দ হলে আলু , বেগুনও দিতে পারেন ।
১৪ রকমের শাক খেয়ে দিনটি পবিত্র ভাবে পালন করে সন্ধেয় পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে প্রদীপ জ্বলে ওঠে ঘরে ঘরে। মনে করা হয়, এতে যমরাজ প্রসন্ন হয়ে মৃত ব্যাক্তির আত্মাকে মুক্ত করেন।