অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: বাংলার কোণায় কোণায় রয়েছে না উৎসব। নানা সম্প্রদায় নানাভাবে উৎসব-পরবে মেতে ওঠেন। এরকমই একটি উৎসব হয় বাংলার জঙ্গলমহলে। বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে নয়াগ্ৰামের জারকা গ্রামে পালিত হয় বাঁদনা পরব- যার আরেকটি নাম গরু খুঁটান উৎসব। প্রাচীন রীতি মেনে এই উৎসব হয় জঙ্গলমহলের ওই এলাকায়। জঙ্গলমহলের অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী উৎসব (Festival) এটি।
কী এই উৎসব?
এই উৎসবের দিন গ্রামের মহিলা-পুরুষ সবাই শোভাযাত্রা করেন। তারপরে গ্রামের বেশ কিছু গরুকে খুঁটিতে বেঁধে রাখেন। এটা এই উৎসবের অন্যতম অঙ্গ। আগে থেকে ওই গরুগুলিকে বেছে রাখা হয়। জারকা গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই ঐতিহ্যবাহী বাঁদনা পরব দেখতে জড়ো হন এলাকার প্রচুর সাধারণ মানুষ।
জনশ্রুতি, বাঁদনা পরব বা গরু খুঁটান উৎসব জঙ্গলমহলের (Jangal Mahal) আদিবাসী সম্প্রদায়ের একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী উৎসব। আদিবাসী ভাষায় এটি 'সহরায়' উৎসব বলেও পরিচিত। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, মূলত কালী পুজোর পরে হয় এই উৎসব। দাবি, গরুকে আনন্দ দিতে এই প্রথা হয়। এই উৎসব পালনের একটি রীতি রয়েছে। সেই রীতি মেনে গরু খুঁটান উৎসবের তিন দিন আগে থেকে বাড়ির গরুকে পুজো করা হয়। পরে উৎসবের আগের দিন গরুকে রাতভর জাগিয়ে রাখা হয়। পরে কালীপুজোর তিনদিন পর বিকালে শোভাযাত্রা করা হয়, সেখানে গরুকে নাচানো হয়। ঐতিহ্যবাহী সেই রীতি মেনে জরকা গ্রামে পালিত হয় বাঁদনা পরব। শুধু জারকা গ্রামই নয়, গোপীবল্লভপুরের সোনাহারা গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাসিন্দারাও এতদিন মেতেছেন বাঁদনা পরব বা গরু খুঁটান উৎসবে।এদিন গ্রামের মাঝি বাবার নেতৃত্বে মহিলা-পুরুষ সবাই শোভাযাত্রা করেন। গ্রামের একাধিক গরুকে আগে থেকে বেছে রাখা হয়। খুঁটিতে বেঁধে উৎসবে মাতেন সকলে। সোনাহারা গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই ঐতিহ্যবাহী বাঁদনা পরব দেখতে জড়ো হন এলাকার প্রচুর সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন: ভেলায় ভেসে পুকুর পরিক্রমা দেব-দেবীর! প্রাচীন প্রথা মেনে চলছে বুদবুদের এই অনুষ্ঠান