Bhoot Chaturdashi : আজ ভূত চতুর্দশীতে কি দোরে এসে দাঁড়াবে প্রেতাত্মা? কোন রহস্য এই ১৪ সংখ্যাটিকে ঘিরে?
Bhut Chaturdashi : মনে করা হয় এই তিথিতে সন্ধ্যা নামার পর পরই অশরীরী প্রেতাত্মারা বের হয়ে আসেন। আর তাদের হাত থেকে নিস্তার পেতে সন্ধ্যায় পর গৃহস্থের বাড়িতে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম।

ভূত চতুর্দশীর সঙ্গে অনেকেই গা ছমছমে একটা ভাবনা তুলে ধরে। এ দিন নাকি দলবল নিয়ে মর্ত্যে আসে প্রেতাত্মারা বা ভূতেরা। আর সেই ভূতেরা যাতে বাড়ির অন্দরে না প্রবেশ করতে পারে, তার জন্যই দোরে দোরে দেওয়া হয় ১৪ প্রদীপ । এদিনই আবার ১৪ ধরনের শাক খাওয়ার রীতি রয়েছে। উত্তর ভারতে এই ভূত চতুর্দশীকেই বলা হয় নরক চতুর্দশী। যদিও তাঁদের বিশ্বাস-ভাবনার সঙ্গে বাঙালিদের ভূত চতুর্দশী নিয়ে ভাবনার ফারাক অনেক।
পঞ্চভূতের মাহাত্ম্য ও ভূত চতুর্দশী
আদতে কিন্তু এই ভূত চতুর্দশীর সঙ্গে কোনও গা-ছমছমে বিষয় নেই। ভূত বলতে এখানে বোঝানো হয় পঞ্চভূতকে। হিন্দুধর্ম অনুসারে, হিন্দুধর্ম এবং ভারতীয় দর্শনে মহাজাগতিক সৃষ্টির ভিত্তি হল পঞ্চভূত। মানবদেহ পাঁচটি উপাদান দিয়ে তৈরি। মানবদেহকে এই পাঁচটি উপাদান দিয়ে তৈরি প্রতিটি জীবদেহ। তাই মৃত্যুর পর মানবশরীর বিলীন হয় এই পঞ্চভূতেই। ভূত চতুর্দশীর সঙ্গে আদতে জড়িয়ে রয়েছে পঞ্চভূতের ভাবনা। চতুর্দশ সংখ্যাটির মধ্যে লুকিয়ে আছে রহস্য। ঊর্ধ্বলোকের দিকে তাকালে সেখানে ৭ টি লোক আছে। ঊর্ধ্বলোকের সপ্তলোক অর্থাৎ সপ্তস্বর্গ, ভূঃ ভুবঃ স্বঃ জনঃ মহঃ তপঃ সত্য। আবার পাতালের দিকে তাকালেও সেখানে ৭ লোক - অতললোক, বিতললোক, সুতললোক, তলাতললোক, মহাতললোক, রসাতললোক, পাতাললোক। এই সাত ও সাত মিলিয়ে ১৪। এই ১৪ লোকে যেখানে যেখানে ভূতের অবস্থান তাকে আলোকিত করার প্রয়াসেই ১৪ বাতি প্রজ্জ্বলন।
পরলোকগত পিতৃপুরুষদের আগমন
আবার মনে করা হয় এই তিথিতে সন্ধ্যা নামার পর পরই অশরীরী প্রেতাত্মারা বের হয়ে আসেন। আর তাদের হাত থেকে নিস্তার পেতে সন্ধ্যায় পর গৃহস্থের বাড়িতে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম। তবে জ্ঞানীজনেরা বলেন, ভূত চতুর্দশীতে উত্তরসূরীদের দেখতে আসেন পরলোকগত পিতৃপুরুষরা। তাঁদের দিকনির্দেশ করতেই এই দোরে দোরে ১৪ বাতি দেওয়া। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে কালীপুজোর ঠিক আগের দিন পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে প্রদীপ জ্বালানোই ১৪ প্রদীপ দেওয়ার উদ্দেশ্য।
চামুণ্ডা রূপে মায়ের আগমন
আরেকটি মত বলে, এই দিন দেবী কালী চামুণ্ডা রূপে তাঁর ভক্তের বাড়িতে আসেন অশুভ শক্তি নাশ করতে। তাঁর সঙ্গে আসে ভূত এবং প্রেতাত্মারা।
রাজা বলির নরকাসুর রূপে আগমন
আরেক মতে, ভগবান বিষ্ণু ভক্ত রাজা বলির নরকাসুর রূপের পুজোর প্রবর্তন করেন। নরকাসুররূপী রাজা বলি নাকি কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশীর তিথিতে অসংখ্য ভূত, প্রেত নিয়ে মর্ত্যে নেমে আসেন পুজো নিতে। তাই একে নরক চতুর্দশীও বলা হয়।
তবে নানা মুনির নানা মতের একটাই সারবত্তা "তমসো মা জ্যোতির্গময়", যার অর্থ "অন্ধকার থেকে আমাকে আলোতে নিয়ে যাও"।























