কলকাতা : শাস্ত্রে শনিদেবকে ন্যায়ের দেবতা বলা হয়েছে। শনিপুজো করলে সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কথিত আছে যে, শনিদেবের আশীর্বাদ যাঁর জীবনে, তাঁর জীবনে কোনও কিছুরই অভাব থাকে না। কিন্তু, শনির কুদৃষ্টি যাঁর উপর পড়ে, তাঁর খারাপ দিন শুরু হয়।


হিন্দু ধর্মে, মূর্তি পুজোর বিশেষ গুরুত্ব আছে। বাড়িতে বাড়িতে দেব-দেবতার মূর্তি স্থাপন করে পুজো করা হয়। এই ধর্মের মানুষরা, বাড়িতে শিব-পার্বতী, রাধা-কৃষ্ণ, রাম-সীতা, শ্রহরি বিষ্ণু, লক্ষ্মী, মা দুর্গার-সহ বহু দেবদেবীর মূর্তি বা ছবি রেখে পুজো-অর্চনা করেন। কিন্তু, এমন দেবদেবীও রয়েছেন যাঁর মূর্তি বাড়িতে রেখে পুজো করা হয় না। তারই মধ্যে একটি হচ্ছে শনিদেব।


সকলেই জানেন, বাড়িতে বিভিন্ন দেবদেবীর ছবি রেখে পুজো করা হয়। কিন্তু, শনিদেবের পুজোর জন্য আমরা শনি মন্দির যাই। এর কারণ, শনিদেবের পুজো শুধুমাত্র শনিমন্দিরেই করা হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী, শনিদেবের মূর্তি বা ছবি ঘরে রাখা যাবে না। কিন্তু, এর কারণ জানেন ?


শনিদেবের পুজোর জন্য শনিবার মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়া হয়। কারণ, শনিবারই শনিদেবের পুজোর জন্য নির্ধারিত। মন্দির গিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে শনিদেবের পুজো দেন ভক্তরা। কিন্তু, বাড়িতে শনিদেবের পুজো না করার পেছনে একটি পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে। যে অনুসারে, শনিদেবে এমন অভিশাপ পেয়েছিলেন যে অনুযায়ী, যাঁর উপর শনির দৃষ্টি পড়বে তাঁর অনিষ্ট হয়ে যাবে।


পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, শনিদেব ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত ছিলেন এবং সর্বদা কৃষ্ণের ভক্তিতে মগ্ন থাকতেন। একবার শনিদেবের স্ত্রী সন্তান হওয়ার পর তাঁর কাছে আসেন। সেই সময়েও শনিদেব কৃষ্ণের ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। অক্লান্ত পরিশ্রম করেও শনিদেবের স্ত্রী তাঁকে বিভ্রান্ত করতে না পেরে ক্ষুব্ধ হন। ক্রোধে তিনি শনিদেবকে অভিশাপ দেন যে, আজকের পর যার দিকে শনিদেবের দৃষ্টি পড়বে তার ক্ষতি হবে।


পরে শনিদেব নিজের ভুল বুঝতে পেরে স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। কিন্তু, তাঁর স্ত্রীর কাছে, সেই শাপ ফিরিয়ে নেওয়ার বা খণ্ডন করার শক্তি ছিল না। তাই সেই ঘটনার পর থেকেই, শনিদেব নিজের মাথা নিচু করে চলেন। কারণ, তাঁর দৃষ্টিতে অন্য কারও অনিষ্ট হয়ে যেতে পারে। বলা হয়, সেই কারণে শনিদেবের খারাপ দৃষ্টি থেকে বাঁচতে, কেউ বাড়িতে শনির মূর্তি বা ছবি রাখেন না। ঘরে তার পুজোও করেন না।