কলকাতা: পৃথিবীর (Earth) টান ছেড়ে চাঁদের (Moon) পথে পাড়ি- বিপদের আশঙ্কা কিংবা প্রতিকূলতা সবকিছুকেই এতদিন অতিক্রম করে চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পথে এগিয়েছে চন্দ্রযান (Chandrayaan-3)। কক্ষপথ পরিবর্তন থেকে ল্যান্ডার বিক্রম (Vikram Lander), রোভার প্রজ্ঞানের (Rover Pragyan) সঙ্গে বিচ্ছেদ, ইসরোর (ISRO) পরিকল্পনামাফিকই সুষ্ঠুভাবে এগিয়েছে সেসব কাজ। এবার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। লক্ষ্য- সঠিক এলাকায় সঠিক ভাবে অবতরণ।
চারদিকে গর্ত, মাটি অসমান, বন্ধুর। যেখানে সেখানে পড়ে রয়েছে পাথর। চাঁদের মেরু লাগোয়া এলাকার ছবি প্রকাশ্যে আনল ইসরো। দু'দিন পর এমন একটা এলাকাতেই নামবে চন্দ্রযান-৩। চাঁদের মাটি থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার উপর থেকে উড়ে যাওয়া মহাকাশযানের হ্যাজার্ড ডিটেকশন ক্যামেরার ছবি নিয়ে পরীক্ষায় ইসরো। এমন একটা এলাকায় চন্দ্রযান তিনকে নামানোই আপাতত তাদের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ।
অবতরণের আগের পর্যায়ে চাঁদের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে চন্দ্রযান-৩। ভারতীয় সময় অনুযায়ী, ২৩ অগাস্ট বিকেল ৫টা বেজে ৪৫ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সন্ধে ৬টা বেজে ৪ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্ঠে সফট ল্যান্ডিং করার কথা রয়েছে ল্যান্ডার বিক্রমের।
আরও পড়ুন, পৃথিবীর উপগ্রহকেই ভবিষ্যতের লাভজনক বিনিয়োগ হিসেবে দেখছে বিশ্ব! কী আছে চাঁদের বুকে?
এবারের ল্যান্ডারেও বেশ কিছু ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে। যেমন এই ল্যান্ডারে একটির বদলে চারটি থ্রাস্টার রাখা হয়েছে। যাতে অবতরণের ধকল সইয়ে নিয়ে পালকের মতো মাটি ছুঁতে পারে বিক্রম।
চন্দ্রযান-৩ এ আছে একাধিক ইলেকট্রনিক এবং যান্ত্রিক সাবসিস্টেম। চন্দ্রযান--২ এর ল্যান্ডিং সমস্যা থেকে শিক্ষা নিয়েই নেভিগেশন সেন্সর, প্রপালশন সিস্টেম, নির্দেশকেন্দ্র এবং নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রকে আরও উন্নত প্রযুক্তিতে সাজানো হয়েছে। ল্যান্ডার বিক্রমের পাশাপাশি রোভারকেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে ডিজাইন করা হয়েছে। ল্যান্ডার বিক্রমে মোট ৭টি পে-লোড রয়েছে। চন্দ্রযান-৩ অভিযানে প্রতিটি পে-লোডের ভূমিকা অপরিসীম। এই প্রতিটি পে-লোড প্রথমে সিগন্যাল পাঠাবে রিলে স্যাটেলাইটে। এই রিলে স্যাটেলাইট সেই সিগন্যালগুলিকে ডিকোড করবে তারপর সেগুলি পাঠাবে ইসরোর কন্ট্রোল রুমের কাছে। আরও সরলীকরণ করে বললে, এই প্রোপালশন মডিউল বর্তমানে 'সেতু'র কাজ করবে ল্যান্ডার এবং ইসরোর যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে।