কলকাতা: ক্রিকেট খেলতে খেলতেই সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে প্রার্থী করেছিল। শাসক দলের টিকিটে বিধায়ক হন। পেয়েছিলেন গুরুদায়িত্বও। রাজ্যের ক্রীড়াপ্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। যদিও লক্ষ্মীরতন শুক্লর (Laxmiratan Shukla )রাজনীতির সফর দীর্ঘ ছিল না। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে মন্ত্রিত্ব ছাড়েন। তাঁর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। তবে বিরোধী শিবিরেও নাম লেখাননি তিনি। সরে দাঁড়িয়েছিলেন রাজনীতি থেকেই। কিন্তু কেন রাজনীতি ছাড়লেন জাতীয় দল তথা বাংলার প্রাক্তন এই ক্রিকেটার? সম্প্রতি বাংলার অনূর্ধ্ব ২৩ দলের কোচ হিসাবে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন। এবিপি লাইভের প্রশ্নে সমস্ত কৌতূহল নিরসন করলেন লক্ষ্মীরতন নিজেই।
লক্ষ্মীরতন বললেন, 'আমি খেলাধুলোকে আরও বেশি সময় দিতে চেয়েছিলাম। রাজনীতির জন্য আমার বয়স বেশ কম। সদ্য চল্লিশ পেরিয়েছি। রাজনীতিতে যাওয়ার জন্য অনেক সময় রয়েছে। আমার মনে হয়েছে বাংলার খেলাধুলোকে অনেক কিছু দেওয়ার আছে। শুধু ক্রিকেট নয়, ফুটবল, হকি, ভলিবল, বাস্কেটবল, টেনিস, কবাডি, সব খেলার উন্নয়নে কাজ করতে চাই। শুধু ক্রিকেটের জন্য রাজনীতি ছাড়িনি। খেলাধুলোর জন্য রাজনীতি থেকে সরে থাকছি। আমার মনে হয় খেলাধুলোর দুনিয়ায় আমাকে অনেক বেশি প্রয়োজন। রাজনীতিতে অনেক গুণী লোকজন রয়েছেন।'
এক সময়কার দুই সতীর্থ মনোজ তিওয়ারি ও অশোক দিন্দা রাজনীতিতে এসেছেন। দুজনই নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। মনোজ তো তাঁর ফেলে যাওয়া জায়গাতেই দায়িত্ব পেয়েছেন। হয়েছেন রাজ্যের ক্রীড়াপ্রতিমন্ত্রী। কথা হয় দুজনের সঙ্গে? লক্ষ্মীরতন বলছেন, 'ভোটের পর দুজনকেই অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। সবাই ভাল কাজ করুক, মন দিয়ে কাজ করুক। মনোজ তো এবছর বাংলার হয়ে খেলবেও। প্রস্তুতি নিচ্ছে। দিন্দা বেঙ্গালুরুতে লেভেল টু কোচিং কোর্স করতে গিয়েছিল। এটা খুব ভাল দিক যে, ওরা ক্রিকেটের সংস্পর্শেই রয়েছে। একইসঙ্গে ওরা নিজেদের বিধানসভা এলাকাকেও দেখুক। দুজনে আলাদা আলাদা দল থেকে জিতেছে। রাজনীতিতে ভাল মানুষ থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।'
তবে রাজনৈতিক হানাহানি যেন ক্ষতবিক্ষত করছে বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ককে। ২০১২ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন দলের অলরাউন্ডার বলছেন, 'দিনের শেষে আমরা সবাই বন্ধু। সাধারণ মানুষকেও এটাই বলব যে, ম্যাচের পর দুই প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়েরা হাত মিলিয়ে নেয়। রাজনীতিতেও সেই ছবি দেখতে চাই। সৌজন্য দেখতে চাই। রাজনীতিতেও আরও একটু জেন্টলম্যানস গেম দেখতে চাই।'
বাংলার তরুণ ক্রিকেটারদের তৈরি করার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন লক্ষ্মীরতন। ভবিষ্যতেও খেলার মাঠেই আরও বেশি করে জড়িয়ে রাখতে চান নিজের অস্তিত্ব।