মোহালি: করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও, কিংবদন্তী অ্যাথলিট মিলখা সিংহের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তাঁকে এখনও অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হচ্ছে। তবে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। বুধবার তাঁকে আইসিইউ থেকে বের করে আনা হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, এটা শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ার লক্ষণ।


তবে মিলখার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও, তাঁর স্ত্রী ভারতের জাতীয় মহিলা ভলিবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক নির্মল কউরেরও করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। মিলখা যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন, সেখানেই তাঁর স্ত্রীকে ভর্তি করতে হয়েছে।


মোহালির ওই হাসপাতালের পক্ষ থেকে মিলখার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানানো হয়েছে, ‘মিলখা সিংহ অক্সিজেন সাপোর্টে স্থিতিশীল। তবে তাঁর শরীর এখনও দুর্বল। তিনি যাতে খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান, সেটা বোঝানোর চেষ্টা করছি আমরা। আমরা আজ তাঁকে আইসিইউ থেকে বের করে এনেছি। তাঁর স্ত্রী নির্মল মিলখা সিংহেরও করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তিনিও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের দু’জনকে একই ঘরে রাখা হয়েছে। তাঁদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’


গত বুধবার বুধবার মিলখার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সেদিনই তাঁর কোভিড নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। সেই সময় তাঁর পরিবারের সবারই করোনা পরীক্ষা করা হয়। তখন নির্মলের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু পরে তিনিও করোনা আক্রান্ত হন।


বাড়ির পরিচারকদের মাধ্যমেই মিলখা সংক্রমিত হয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাঁর অসুস্থতার খবরে ভারতীয় ক্রীড়ামহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।


ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সের ইতিহাসে মিলখা সবচেয়ে বড় নাম। তিনি শুধু ভারতেরই নন, এশিয়ার সেরা অ্যাথলিট ছিলেন। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের আঙিনাতেও তিনি নিজের সময়ে অন্যতম সেরা ছিলেন। এশিয়ান গেমসে চারবার সোনা জিতেছিলেন মিলখা। ১৯৫৮ সালে কমনওয়েলথ গেমসেও চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। তবে তাঁর সবচেয়ে স্মরণীয় পারফরম্যান্স ছিল ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিক্সে ৪০০ মিটার দৌড়ের ফাইনালে। পদক না পেলেও, তাঁর দৌড় বিশ্বে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছিল। রোমে তিনি জাতীয় রেকর্ড গড়েন, যা ৩৮ বছর অক্ষত ছিল। ১৯৯৮ সালে সেই রেকর্ড ভাঙেন পরমজিৎ সিংহ। রোম ছাড়াও ১৯৫৬ সালে মেলবোর্ন এবং ১৯৬৪ সালে টোকিও অলিম্পিক্সেও ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন মিলখা। তাঁকে ১৯৫৯ সালে পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়া হয়।