(Source: ECI | ABP NEWS)
Laxmiratan Shukla Exclusive: “বাংলা দলে তারকাপ্রথা নেই, যেই খেলুক শূন্য থেকে শুরু করতে হবে”
Ranji Trophy: বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে রঞ্জি ট্রফি (Ranji Trophy)। ঘরের মাঠে অভিযান শুরু করছেন অভিমন্যু ঈশ্বরণরা। ইডেনে জোর কদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।

সন্দীপ সরকার, কলকাতা: বাংলার ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা যোদ্ধাদের মধ্যে অন্যতম তিনি। প্রাক্তন অলরাউন্ডার লক্ষ্মীরতন শুক্ল দলের বহু জয়ের কারিগরও। ক্রিকেট থেকে অবসরের পর এখন বাংলার কোচ। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে রঞ্জি ট্রফি (Ranji Trophy)। ঘরের মাঠে অভিযান শুরু করছেন অভিমন্যু ঈশ্বরণরা। ইডেনে জোর কদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। নতুন মরশুম শুরুর আগে দীর্ঘ, একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন এবিপি লাইভ বাংলাকে। শোনালেন বাংলার ক্রিকেট নিয়ে তাঁর স্বপ্নের কথা। কোন প্রসঙ্গে কী বললেন, তুলে ধরা হল...
কোচিং সংস্কৃতি
কোচ নয়, আমি টিমম্যান হিসাবে কাজ করি। যখন খেলতাম, তখনও টিমম্যান ছিলাম। আমি দরকারে ছেলেদের বল থ্রো-ও করি, জল বয়ে নিয়ে যাই। এটাই আমাদের সংস্কৃতি। আমি সেটাই করার চেষ্টা করি। কোচ হিসাবে কোনওদিন চেয়ারে বসে কোচিং করাই না। কোচিং ব্যাপারটাকে ওইভাবে দেখিনি কোনওদিন।
কোচ হিসাবে লক্ষ্য
আমি সৌভাগ্যবান যে, ক্রিকেট খেলার পর বাংলাকে কোচিং করানোর সুযোগও পেয়েছি। বাচ্চাদের ভাল হলে দলের ভাল হবে, বাংলার ভাল হবে। সবার আগে নিজের ভাল করতে হবে। তাতে এমনিই দলের ভাল হবে, দেশের ভাল হবে। আমি সেটাও ছেলেদের বোঝাতে চেষ্টা করি। বলি, নিজের ভালর কথা ভাবো। আমি ওদের স্বার্থপর হতে বলি। কীরকম স্বার্থপর? ব্যাট করতে গিয়ে অফস্টাম্পের বাইরের বল খেলব না। বল করতে গিয়ে অফস্টাম্পের লাইনের বাইরে বল করব না। সেটাই চেষ্টা করছি ছেলেদের শেখানোর। অনেকটা পেরেছি। সবটা করতে হবে।
কোন মন্ত্রে দলকে দীক্ষা?
পরিশ্রম আর সততার বিকল্প নেই। তুমি যেরকম, সেরকম থাকতে হবে। মৌসম্বীর রস দামি, ভিটামিন সি কম। তার চেয়ে আমলকি সস্তা, ভিটামিন সি বেশি। আমার দর্শনটাই হল, তুমি নিজেকে সস্তা রাখো, খুব দামি ভেবো না। নিজেকে বেশি মূল্যবান ভাবলে পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়ে। মাটিতে পা রেখে চলো। রুটি খাবে না পরোটা খাবে, সেটা তোমাকে বেছে নিতে হবে। যেদিন আমার দলের সবাই রুটিতে স্বচ্ছন্দ হবে, সেদিন দল হিসাবেও আমরা এগিয়ে যাব। যেদিন নিজেকে বুঝতে পারব, সেদিন এগোতে পারব। সফল হলেও একই রুটিন বজায় রাখতে হবে।
রঞ্জিতে সহজ গ্রুপে?
ঘরোয়া ক্রিকেটে এখন আর দুর্বল দল হয় না। সব দলই ভাল দল। কারণ, সবাই পেশাদার ক্রিকেটার নিয়ে আসে। ত্রিপুরাকে দেখুন। হনুমা বিহারীদের নিয়ে এসেছে। আজকের বিহার, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা, কেরলের সঙ্গে আগেকার বিহার, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা, কেরলের তুলনা করলে চলবে না। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে আমরা মুম্বইকে হারালাম, পঞ্জাবকে হারালাম, কোয়ার্টার ফাইনালে অসমকে পেয়েও মোহালিতে হেরে গেলাম। কেউ ভাবতে পেরেছে? পঞ্জাবে ১৩জন আইপিএল প্লেয়ার ছিল। অসমে সেখানে শুধু রিয়ান পরাগ। অথচ হেরে গেলাম। গ্রুপ দেখে খেলা হয় না। ক্রিকেট তোলে, ক্রিকেটই নামায়।
ঘরের মাঠে শুরু অভিযান
উত্তরাখণ্ড ও গুজরাত - শুরুতেই পরপর দুই ম্যাচ ইডেনে। চেনা মাঠ হোক বা অচেনা মাঠ, মোদ্দা কথা হল অফস্টাম্পের বাইরের বল ছাড়তে হবে আর অফস্টাম্পে বোলিং করতে হবে। আমরা চেনা মাঠে, ঘরের মাঠে তো রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল খেলেছিলাম। কী হয়েছিল? সৌরাষ্ট্রের কাছে হেরে গিয়েছিলাম। রানার্স হলাম। চেনা-অচেনা বড় কথা নয়, নিজেকে চিনতে হবে।
দাদার বার্তা
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) আমাদের সকলের মেন্টর। সব সময় উৎসাহ দেয়। দাদার কাজ দাদা করে যাবে, ভাইয়েদের কাজ সেটা মেনে চলা। দাদি ড্রেসিংরুমে গিয়েই নিজের হাতে ব্যাট তুলে নিল। দাদির সঙ্গে খেলেছি। ড্রেসিংরুম শেয়ার করেছি। রুম শেয়ার করেছি। রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ, এরা ভীষণ ইতিবাচক। দাদি ছেলেদের বলল, বল ছাড়তে হবে। উইকেট বুঝতে হবে। নিজের ব্যাটিং বুঝতে হবে। সময় দিতে হবে। এরকম চিন্তাভাবনা করে বলেই এরা গ্রেট। অনুপ্রেরণা। এ জন্যই দাদিকে ডাকলাম। বললাম, তুমি না বললে ছেলেদের আর কে বলবে?
শুরু থেকেই খেলছেন শামি-আকাশ দীপ
কাকে পাচ্ছি, সেটা বড় কথা নয়। বাংলার হয়ে খেলে ওরা ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে। জীবনে যা কিছু হয়েছে, বাংলার জন্য হয়েছে। ওদের সেই জায়গা থেকে শুরু করতে হবে। ভারতীয় দলের তারকারা খেলছে বলে আমি খুশি, তবে উল্লসিত নই। আমার দলে কোনও তারকা নেই। তারকা প্রথায় আমি বিশ্বাস করি না। তোমাকে বাংলার হয়ে শূন্য থেকে শুরু করতে হবে, পারফর্ম করতে হবে।
ফের অধিনায়ক অভিমন্যু
অভিমন্যু ঈশ্বরণ ভারত এ দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। রুকুকে (অনুষ্টুপ মজুমদার) আমি অধিনায়ক করেছিলাম। এবার সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত হয় যে, অভিমন্যুকে নেতৃত্বে আনা হবে। অনুষ্টুপ বাংলার ক্রিকেটের দারুণ এক প্রাপ্তি। ওর ব্যাটিং এখনও দলের ভরসা।




















