সন্দীপ সরকার, কলকাতা: সকাল থেকে উৎসুক ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। অপেক্ষায় ছিল বাংলা শিবিরও।
প্রায় এক বছর পর ক্রিকেট মাঠে ফিরে কেমন বল করবেন মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)? ডানহাতি পেসারের বলে কি আগের মতোই আগুন ঝরবে? স্যুইংয়ের ছোবল কি আগের মতোই বিষাক্ত?
শেষবার তাঁকে মাঠে দেখা গিয়েছিল আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর, ওয়ান ডে বিশ্বকাপের ফাইনালে। তারপর থেকেই গোড়ালির চোটে কাবু। অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। শামির মাঠে ফেরার দিন গুনছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। যদিও বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিল তাঁর প্রত্যাবর্তন। যেন তারিখ পে তারিখ...
অবশেষে মাঠে ফিরলেন শামি। ইনদওরের হোলকার স্টেডিয়ামে। বাংলার জার্সিতে। মধ্য প্রদেশের বিরুদ্ধে (Bengal vs MP)। দুই স্পেল মিলিয়ে ১০ ওভার বোলিং করলেন শামি। প্রথম দিনের শেষে স্কোরবোর্ড তাঁর বোলিং পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে ১০-১-৩৪-০। উইকেট পাননি। কেমন বল করলেন শামি?
ইনদওর থেকে মোবাইল ফোনে বাংলার বোলিং কোচ শিবশঙ্কর পাল এবিপি আনন্দকে বললেন, 'ভালই বল করেছে। প্রথম স্পেলে ৪ ওভার ও দ্বিতীয় স্পেলে ৬ ওভার বল করেছে। লাইন-লেংথ চমৎকার ছিল। প্রথম স্পেলের চেয়েও দ্বিতীয় স্পেলে বেশি ভাল বল করেছে। ও নিজেও ভাবেনি এতদিন পর ফিরে এরকম বোলিং করবে।'
শামি ম্যাচ ফিট কি না, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির পাঁচ টেস্টের দলে রাখা হয়নি বাংলার পেসারকে। তবে তিনি ফিট হলে টেস্ট সিরিজের দলে অন্তর্ভুক্ত হতেই পারেন। আর সেটা হলে যে ভারতের পেস বোলিং আরও সমৃদ্ধ হবে, বলার অপেক্ষা রাখে না। ম্যাচে শামির ফিটনেস পরখ করার জন্য ইনদওরে গিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির ফিজিও নীতিন পটেল সহ ২ প্রতিনিধি।
শামিকে কি পুরো ফিট দেখলেন? শিবশঙ্কর নিজে পেসার ছিলেন। ফাস্টবোলারদের ফিটনেস, ট্রেনিং, ছন্দ নিয়ে ভরপুর অভিজ্ঞতা। ময়দানের ম্যাকো বলছেন, 'এক বছর পর মাঠে ফিরেই ছন্দ দেখানো সহজ নয়। শামিকে দেখে ভাল লেগেছে। যত বল করবে, ছন্দ আরও ভাল হবে। যে কারণে দ্বিতীয় স্পেলে ওকে বেশি ভাল লেগেছে। যত ম্যাচ খেলবে, বল করবে, ধার বাড়বে। ফের পুরনো শামিকেই দেখা যাবে। ও নিজে এবং আমরা, দলের সাপোর্ট স্টাফরা সকলেই খুশি।'
ম্যাচে অবশ্য দারুণ কিছু জায়গায় নেই বাংলা। টস জিতে বাংলাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন মধ্য প্রদেশের অধিনায়ক শুভম শর্মা। ৫১.২ ওভারে মাত্র ২২৮ রানে শেষ হয়ে যায় বাংলা। একটা সময় ৭৯/৫ হয়ে গিয়েছিল বাংলা। সেখান থেকে ষষ্ঠ উইকেটে ৯৬ রান যোগ করে দলকে কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরান শাহবাজ আমেদ ও অধিনায়ক অনুষ্টুপ মজুমদার। শাহবাজ সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৮ রান দূরে থামেন। ৮০ বলে আগ্রাসী ৯২ রান করে আউট হন। সাত নম্বরে নেমে ৪৪ করেন অনুষ্টুপ। ঘাড়ে ব্যথার জন্য যিনি ব্যাটিং অর্ডারের সাত নম্বরে নেমেছিলেন। মধ্য প্রদেশের হয়ে ৪টি করে উইকেট আরিয়ান পাণ্ডে ও কুলবন্ত খেজরোলিয়ার।
আরও পড়ুন: মাত্র ২২ বছর বয়সেই! ফুটবলারের মর্মান্তিক পরিণতি, শোকস্তব্ধ গোটা বিশ্ব
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভাল জায়গায় মধ্য প্রদেশ। প্রথম দিনের শেষে ৩০ ওভারের শেষে তাদের স্কোর ১০৩/১। শুভ্রাংশু সেনাপতি ৪৪ ও রজত পাতিদার ৪১ রানে ক্রিজে। একটিমাত্র উইকেট নিয়েছেন শামির ভাই মহম্মদ কাইফ। আর ১২৫ রানে এগিয়ে বাংলা। সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে মধ্য প্রদেশ। তবে বাংলা শিবির স্বপ্ন দেখছে, বৃহস্পতিবার, ম্যাচের দ্বিতীয় দিন বল হাতে জ্বলে উঠবেন শামি। আর পুরনো শামির আগুন ঝলসে দেবে মধ্য প্রদেশ ব্যাটিংকে। সরাসরি জিতে ৬ পয়েন্টের স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিচ্ছে না লক্ষ্মীরতন শুক্লর প্রশিক্ষণাধীন দল।
আরও পড়ুন: বাবা কিংবদন্তি ব্যাটার, বল হাতে নজর কাড়লেন ছেলে, কেরিয়ারে প্রথম ৫ উইকেট
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।