WTC Final: ২৭ বছর জেল খাটেন ম্যান্ডেলা, ২৭ বছরের ব্যবধানে বিশ্বসেরা করলেন দুই কৃষ্ণাঙ্গ অধিনায়ক
SA vs AUS: লর্ডসে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২৭ বছর পর দ্বিতীয় আইসিসি ট্রফি।

লন্ডন: ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম আর লর্ডস কোথাও যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল। ১৯৯৮ সালে ঢাকায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে (তখন নাম ছিল উইলস ইন্টারন্যাশনাল কাপ) ব্রায়ান লারার ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে হারিয়ে প্রথম আইসিসি ট্রফি জয়ের স্বাদ পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই দলের অধিনায়ক ছিলেন এক কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটার। হ্যানসি ক্রোনিয়ে (Hansie Cronje)।
শনিবার, ১৪ জুন লর্ডসে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২৭ বছর পর দ্বিতীয় আইসিসি ট্রফি। কাকতালীয় হলেও, দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক তেম্বা বাভুমাও কৃষ্ণাঙ্গ। যে দেশে বর্ণবৈষম্য দূর করার জন্য আন্দোলন করে জেল খেটেছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা, সেই দেশকে দুবার ক্রিকেট বিশ্বের সেরার খেতাব জেতালেন দুই কৃষ্ণাঙ্গ অধিনায়ক। ২৭ সংখ্যাটাও কি আশ্চর্য সমাপতন নয়? ২৭ বছর জেলে ছিলেন ম্যান্ডেলা। ২৭ বছর পর আইসিসি ট্রফি জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা।
ট্রফি জিতে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত বাভুমা। ম্যাচের সম্প্রচারকারী চ্যানেলে বললেন, 'এই দুটি দিন বিশেষ হয়ে রইল। যেরকম সমর্থন পেয়েছি, মনে হয়েছে আমরা দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে এসেছি। একটি দল হিসাবে আমাদের জন্য বিশেষ মুহূর্ত। দেশের জন্যও দারুণ একটা মুহূর্ত। স্বাভাবিক হতে, ঘোর কাটিয়ে উঠতে কয়েকদিন সময় লাগবে। আমাদের দক্ষতা ছিল, আমরা এটি একটি দল হিসাবে চেয়েছিলাম এই ট্রফিটা জিততে। আমরা দরজায় কড়া নাড়ছিলাম। বারবার হৃদয়ভঙ্গ হয়েছে আইসিসি টুর্নামেন্টে ট্রফির কাছাকাছি এসে। মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। হতাশা তাড়া করেছিল প্রাক্তন খেলোয়াড়দেরও। সব সময় প্রচারের আলো আমাদের উপর থেকেছে।'
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার দৌড় এখানেই শেষ নয়, বরং নতুন সূর্যোদয়ের অপেক্ষা, মনে করিয়ে দিয়েছেন আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক। টানা আট টেস্টে জিতে যিনি দলকে টেস্টে বিশ্বসেরা করলেন। তেম্বা বলেছেন, 'আশা করি এটি অনেক ট্রফির মধ্যে একটি।' কাগিসো রাবাডার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন তেম্বা। বলেছেন, 'কেজি একজন বিশাল খেলোয়াড়। কয়েক বছরের মধ্যে ও আইসিসি হল অফ ফেমে থাকবে। কয়েকদিন আগে বিতর্কের মধ্যে জড়িয়েছিল। কিন্তু সে যা হওয়ার হয়েছে।'
১৯৯৮ সালে ফাইনালে ক্রোনিয়ের দলের সেরা পারফর্মার ছিলেন এক শ্বেতাঙ্গ - জ্যাক কালিস। শনিবার ম্যাচের সেরা হলেন আর এক শ্বেতাঙ্গ - এইডেন মারক্রাম। ফের সেই সমাপতনের কাহিনি। বাভুমা বলেছেন, 'মারক্রাম অবিশ্বাস্য। পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই, তবে আমরা দেখি চারিত্রিক দৃঢ়তা এবং এইডেনের তা আছে। আমাদের জন্য আরও একজন বড় খেলোয়াড় ও। আমরা ফাইনালে ওঠার পরেও বলা হয়েছিল, যে পথে গিয়েছিলাম তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আমরা দুর্বল দলগুলিকে পরাজিত করেছিলাম। এই জয় তাদের জন্য। আমি নিশ্চিত যে, গোটা দেশ উদযাপন করবে।'




















