নয়াদিল্লি: ২২ গজে ব্যাট হাতে শাসন করতেন। প্রতিপক্ষ বোলারদের ঘুম উড়িয়ে দিতেন। ক্রিকেট ছাড়ার পর সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি যেন একাই একশো। তবে এবার অন্যরূপ দেখা গেল বীরেন্দ্র সহবাগের। মানবিক নজফগড়ের নবাব। বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রচুর মানুষ। প্রচুর কচিকাঁচা তাঁদের মা, বাবা, পরিবারকে হারিয়েছে। এবার সেই অনাথ শিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব নিচ্ছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন ওপেনার।
গুরুগ্রামে সহবাগ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে এই অনাথ শিশুদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার। সহবাগ নিজের সোশ্য়াল মিডিয়ায় পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন, ''এই শোকের মুহূর্তে আমার পক্ষে ন্যূনতম যা করা সম্ভব সেটা করছি। যে শিশুরা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাবা-মাকে হারিয়েছে, তাদের সন্তানদের শিক্ষার ভার নিতে পারি আমি। আমি এই শিশুদের সহবাগ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের বোর্ডিংয়ে রেখে বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে পারি।''
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলতে এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডে রয়েছেন বিরাট কোহলি। তিনিও বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় শোকাহত। সোশ্য়াল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, ''ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনার কথা শুনে আমি মর্মাহত। যেসব পরিবাররা নিজেদের প্রিয়জনদের হারালেন, তাঁদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। আর যারা আহত, আশা করব তাঁরা দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবেন।''
প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার যুবরাজ সিংহও (Yuvraj Singh) শোকবার্তা দিয়েছেন। তিনি লেখেন, 'ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে আমার তরফে সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সুস্থতার প্রার্থনা করছি।' যুবরাজের মতো তাঁর প্রাক্তন সতীর্থ গৌতম গম্ভীরও (Gautam Gambhir) শোকবার্তা দিয়েছেন। তিনি লেখেন, 'ওড়িশার ঘটনায় আমি মর্মাহত। ঈশ্বর আহতদের পরিবারকে শক্তিপ্রদান করুন। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। গোটা দেশ আপনাদের পাশে আছে।'
এদিকে, সিগনালের সমস্যার কারণেই বালেশ্বরে ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে রেল মন্ত্রক। গতকাল থেকেই এই সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছি আমরা। তাতেই কার্যত সিলমোহর দিল রেলমন্ত্রক।
রেল বোর্ডের সদস্য জয়া বর্মা সিনহা বলেন, 'সিগনালিংয়ে সমস্যা ছিল, তবুও আমরা রেলওয়ে সেফটির রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।' শুক্রবারের ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার জেরে এক লহমায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে বহু পরিবার। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন কত মানুষ। হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন কতজন! যে কারণে এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রেল মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সিগনালের সমস্যার কারণেই ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে বালেশ্বরে। শনিবার, থেকেই এই সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছিল এবিপি আনন্দ। রবিবার, সেই তত্ত্বেই কার্যত সিলমোহর দিল রেলমন্ত্রক। জয়া বর্মা সিনহা বললেন, 'শুধুমাত্র করমণ্ডল এক্সপ্রেসেই দুর্ঘটনা ঘটে। লুপ লাইনে ঢুকে মালগাড়িকে ধাক্কা মারে করমণ্ডল। ফুল স্পিডে থাকায় ট্রেনের ইঞ্জিন মালগাড়ির মাথায় উঠে যায়।' কিন্তু বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন, তার পর একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। সিগনাল সবুজ থাকার পরও, কী করে মূল লাইন লুপ লাইনের দিকে ঘোরানো ছিল? আপাতত এটিই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।