Durand Cup 2023 Final Live: ম্যাচ উইনার পেত্রাতোস, ১-০ ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন ১০ জনের মোহনবাগান
Durand Cup 2023 Final Live Updates: শতাধিক বর্ষের এই চিরপ্রতিদ্বন্দিতার জনপ্রিয়তা যে কোনও দিন কমবে না, তা এই ম্যাচ শুরু হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগে কলকাতার আনাচে কানাচে পাওয়া খণ্ডচিত্রগুলি দেখলেই বোঝা যায়।
শেষ বাঁশি বাজিয়ে দিলেন রেফারি। পেত্রাতোসের একমাত্র গোলেই ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট।
৯০+৩ মিনিট- লাল হলুদের সহকারী কোচ দিমাস দেলগাদোকে লাল কার্ড দেখালেন রেফারি। সবুজ মেরুন কোচ হুয়ান ফেরান্দোর সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে লাল কার্ড দেখলেন তিনি।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের শেষে ৯ মিনিট ইনজুরি টাইম দিয়েছেন রেফারি। সেমিফাইনালের মতো ফের একবার ইনজুরি টাইমে ম্যাচে সমতায় ফিরতে পারবে ইস্টবেঙ্গল, না ১৭তম ডুরান্ড কাপ জিতবে মোহনবাগান?
৮৫ মিনিট- ইস্টবেঙ্গল প্রতিআক্রমণ গড়ে তোলে। ভান্সপল ক্রস দেন তবে মোহনবাগান বল ক্লিয়ার করে দেয়। ডান উইং ধরে কামিন্স বল নিয়ে উঠে। মোহনবাগান কর্নার পেলেও, ইয়েস্তে তা থেকে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।
৭৭ মিনিট- ইস্টবেঙ্গলের তিন বদল। মাঠে এলেন নিশু কুমার, সুহের ও এডউইন।
৭৪ মিনিট- ইস্টবেঙ্গল সমতায় ফিরতে মরিয়া। নন্দকুমার থ্রু বল বাড়ানোর চেষ্টা করেন। মোহনবাগান বল ক্লিয়ার করলেও, ইস্টবেঙ্গলের কাছেই ফেরে। ফিরতি বলে নন্দকুমার হেড করলেও, তা সোজা কাইথের হাতে জমা পড়ে যায়।
দুরন্ত প্রতিআক্রমণে পেত্রাতোস একাই ইস্টবেঙ্গলের গোলের দিকে বল নিয়ে এগোন। বক্সের বাইরে থেকে তাঁর জোরাল শট ইস্টবেঙ্গলের জালে জড়িয়ে যায়। ১-০ এগিয়ে গেল ১০ জনের মোহনবাগান।
৭০ মিনিট- প্রতিআক্রমণ ইস্টবেঙ্গল দুরন্ত সুযোগ গড়ে তুলেছিল। নন্দকুমারের পাস থেকে ক্লেটন বল পান। তাঁর দূরপাল্লার শট প্রতিহত করেন কাইথ।
৬৯ মিনিট- একসঙ্গে মোহনবাগান তিন তিনটি বদল করল। জেসন কামিন্স, লেনি রড্রিগেজ ও লিস্টন কোলাসো মাঠে নামল। বাইরে গেলেন সাদিকু, বুমোস, আশিক কুরুনিয়ান
৬২ মিনিট- সিভোরিয়োর বিরুদ্ধে বল দখলের লড়াইয়ে তাঁকে ফাউল করে বসেন অনিরুদ্ধ থাপা। হাই বুটের জন্য দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে লাল কার্ড দেখলেন থাপা। ১০ জনে নেমে গেল মোহনবাগান।
লাল হলুদের আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ানোর লক্ষ্যে গত বছরের সর্বোচ্চ গোলদাতা ক্লেটন সিলভাকে মাঠে নামান কুয়াদ্রাত। বোরহাকে তুলে নিলেন কুয়াদ্রাত।
৫৬ মিনিট- সাদিকু ও বোরহা বল দখলের লড়াইয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে ফাউল দেন রেফারি দেন। লাল হলুদ কোচ কুয়াদ্রাত এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করায় হলুগ কার্ড দেখেন।
৫২ মিনিট- হরমনজোৎ খাবরাকে মোহনবাগান বক্সে ফাউল করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও, রেফারি তা নাকচ করে দেয়। প্রতিআক্রমণে সাদিকু বল এগিয়ে নিয়ে যান। তবে তিনি বল শুট করলেও, তা তেকাঠির মধ্যে রাখতে পারেননি।
৪৭ মিনিট- আনোয়ার আলির ব্যাকপাস আরেকটু হলেই পায়ে পেয়ে যাচ্ছিলেন সিভেরিয়ো। তবে মোহনবাগান গোলরক্ষক বিশাল কাইথ কোনওরকমে আগে বলে পৌঁছে তা ক্লিয়ার করকে সক্ষম হন। রাকিপ ডান দিক থেকে বল বাড়ালেও, তা সহজেই দস্তানাবদ্ধ করেন কাইথ।
প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমের পঞ্চম মিনিটে সাহাল ইস্টবেঙ্গল বক্সের সামনে বল পান। তিনি পেত্রাতোসকে বল বাড়ান। অজি ফরোয়ার্ড ইস্টবেঙ্গল গোল লক্ষ্য করে শট নেন বটে, তবে তেকাঠির উপর দিয়ে চলে যায়। গোলশূন্যই শেষ হয় প্রথমার্ধ। দুই দলের কেউই তেমন বড় সুযোগ পায়নি। এমনকী একটি শটও তেকাঠির মধ্যেও রাখতে পারেনি কেউ।
৪৫+১ মিনিট- মাঝমাঠে সল ক্রেস্পো ও সাদিকুর মধ্যে বল দখলের লড়াইয়ে দুইজনেই মাঠে পড়ে যান। ক্রেস্পোকে ধাক্কা দেন সাদিকু। ফাউলের জন্য ক্রেস্পোকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি, মাত্রাতিরিক্ত প্রতিবাদ করায় হলুদ কার্ড দেখেন বুমোও। কয়েক মুহূর্ত পড়েই সিভেরিয়োকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন অনিরুদ্ধ থাপা।
৪৪ মিনিট- রাওকিপ ও বোরহা মিলে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে দুরন্ত প্রতিআক্রমণ গড়ে তোলে। রাওকিপ, বোরহার পা হয়ে সিভোরিয়োর কাছে বল আসে। সিভোরিয়ো অবশ্য বল নিজের দখলে আনতে পারলেন না। তবে মোহবাগান রক্ষণ বল ক্লিয়ার করলেও তা নন্দকুমারের পায়ে পড়ে। তিনি ভলিতে নিজের শট তেকাঠির মধ্যে রাখতে পারেননি।
৩৬ মিনিট- ইস্টবেঙ্গলের বক্সের বাইরে থেকে অনিরুদ্ধ থাপা ডান উইংয়ে আশিস রাইকে লক্ষ্য করে বল বাড়ান। আশিস দুরন্তভাবে স্ট্রেচ করে বল পান এবং তা সাহালের উদ্দেশে বাড়িয়ে দেন। তবে সাহাল ভলিতে নিজের শট লক্ষ্যে রাখতে পারলেন না।
চোট নিয়ে খানিকচা সময় খেলার চেষ্টা করলেও পারলেন না সেন্টার ব্যাক এলসে। তাঁকে তুলে নিলেন কুয়াদ্রাত। এলসের বদলে মাঠে নামলেন পার্দো।
৩০ মিনিট- বাঁ দিক থেকে নন্দকুমারের দুরন্ত রান এবং তারপর সল ক্রেস্পোর সঙ্গে ওয়ান টু খেলে মোহনবাগান রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা করে ইস্টবেঙ্গল। তবে শেষমেশ মোহনবাগান রক্ষণ তা আটকে দেয়। লাল হলুদের তরফে পেনাল্টির দাবি উঠলেও, রেফারি তাতে কর্ণপাত করেননি।
২৫ মিনিট- মাঝমাঠে বল দখলের লড়াইয়ে এলসের হালকা চোট লেগেছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে। এর সুযোই দুই দলের খেলোয়াড়রা জল খেয়ে হালকা বিশ্রাম নিয়ে নিলেন।
১৯ মিনিট- বোরহার সুন্দর থ্রু বল আরেকটু হলেও পায়ে পেয়ে যাচ্ছিলেন মহেশ নাওরেম। মোহনবাগান গোলের বাঁ-দিক থেকে মহেশ কিন্তু সেই বল পায়ে পেলে সবুজ মেরুন রক্ষণ চাপে পড়ত। তবে আনোয়ার আলি নিঁখুত ট্যাকেলে সেই আক্রমণ প্রতিহত করে বল বাইরে বের করে দেন।
১৫ মিনিট- ফের মোহনবাগান কর্নার পেলেও, তা কাজে লাগাতে পারল না। পেত্রাতোস ভাল জায়গায় বল রাখলেও, তা ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ বাইরে বের করে দেয়। থ্রো পেলেও, তাতেও বড় সুযোগ তৈরি হয়নি।
৯ মিনিট- ইস্টবেঙ্গল ফরোয়ার্ড হাভিয়ের সিভেরিয়ো ও শুভাশিস বোস ঝামেলায় জড়ান। সিভোরিয়ো ক্ষোভ জাহির করেন। হলুদ কার্ডের দাবিও ওঠে। তবে রেফারি তা নাকচ করে দেন।
৪ মিনিট- মোহনবাগান ম্যাচের প্রথম কর্নার পায়। তবে পেত্রাতোস কর্নার থেকে সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ। মাঠের মধ্যেই বল রাখতে পারলেন না তিনি।
শুরুতে বল দখলের লড়াইয়ে মোহনবাগান খানিকটা এগিয়ে থাকলেও, নন্দকুমার ইস্টবেঙ্গলের বাঁ-দিক দিয়ে আক্রমণ তৈরি করেন। তবে শেষমেশ মোহনবাগান রক্ষণের কাছে বল জমা দেন তিনি। ব্যর্থ হল আক্রমণ।
২০০৪ সালে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে শেষবার মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। সেই ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল লাল হলুদ শিবির।
আগের ডার্বিতে ১-০ গোলে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল।
প্রেক্ষাপট
বহু কাল পর একটা রক্ত গরম করা ডার্বি দেখার আশায় রয়েছে বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা। সপ্তাহ তিনেক আগে যেমন দেখা গিয়েছিল কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে, সেখানেই ফের মুখোমুখি হতে চলেছে ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের সেরা দ্বৈরথের দুই যুযুধান পক্ষ।
আবার একটা কলকাতা ডার্বি। শতাধিক বর্ষের এই চিরপ্রতিদ্বন্দিতার জনপ্রিয়তা যে কোনও দিন কমবে না, তা এই ম্যাচ শুরু হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগে কলকাতার আনাচে কানাচে পাওয়া খণ্ডচিত্রগুলি দেখলেই বোঝা যায়।
চিত্র ১- ময়দানে দীর্ঘ সর্পিল লাইন। যারা দাঁড়িয়ে, তারা জানে এই লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট পাওয়া অনিশ্চিত। তবু ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দাঁড়িয়ে তারা।
চিত্র ২- সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই পোস্ট দেখা যাচ্ছে, ‘আমার কাছে ডার্বির চারটে টিকিট রয়েছে, কারও লাগলে ইনবক্স করুন’। যে বা যারা এই ধরনের পোস্ট করছে, তার ইনবক্স উপচে পড়ছে পাল্টা বার্তায়, ‘যত টাকা লাগবে দেব। কোথা থেকে কখন টিকিট নিতে হবে জানান’।
চিত্র ৩- দুই চিরপ্রতিদ্বন্দী ক্লাবের সমর্থকদের বিক্ষোভ। তারা কেন পর্যাপ্ত টিকিট পাচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ দুই ক্লাবের তাঁবুর সামনে। তাতেও সুরাহা হওয়ার আশা কম। কারণ, একটি টিকিটও না কি আর পড়ে নেই। সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
এমন অসংখ্য ছবি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে ফুটবল-মক্কার বিভিন্ন প্রান্তে। সব ওই ৯০ মিনিটের এক ফুটবল-যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। যা চিরকালীন, কালজয়ী। এ সব দেখে একটা জিনিসই বোঝা যাচ্ছে, রবিবার বিকেলে ভরে উঠবে যুবভারতীর গ্যালারি, উপছেও যেতে পারে। একদিকে ‘জয় মোহনবাগান’, অন্যদিকে ‘জয় ইস্টবেঙ্গল’ শব্দব্রহ্মে নিশ্চয়ই কেঁপে উঠবে রবিবাসরীয় কলকাতা।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -